এই বুঝি ভেঙে পড়ে বাড়ি! তবু বিজেপি ‘তকমায়’ মিলল না সরকারি আবাস যোজনার টাকা!

BJP Worker: এই বাড়ি থেকেই তাঁত মেশিনের খটা, খট শব্দে ভরে উঠতো গোটা এলাকা। স্বচ্ছল ভাবে চলে যেত সুদর্শনবাবুর সংসার। কিন্তু ভাঙাচোরা ঘরে অবিশ্রান্ত বৃষ্টির জেরে সেই মেশিনও আজ অকেজো হয়ে গিয়েছে। ফলে অন্যের বাড়িতে দিনমজুরি করে কোনওরকমে সংসার চালান তিনি।

এই বুঝি ভেঙে পড়ে বাড়ি! তবু বিজেপি 'তকমায়' মিলল না সরকারি আবাস যোজনার টাকা!
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 11, 2021 | 4:40 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: প্রথমে আমফান ঝড়, তারপর ইয়াসের দাপটে ভেঙে পড়েছে ভিটেবাড়ি। রোজগারের একমাত্র সম্বল তাঁতশিল্পের যন্ত্রাংশও বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তবু মিলছে না সরকারি আবাস যোজনার টাকা। কারণ, তিনি বিজেপি কর্মী! এমনই অভিযোগকে ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর নন্দকুমারে।

পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার বিধানসভার কুমারচক গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত শিবদত্তপুরের বাসিনন্দা সুদর্শন মণ্ডল। পেশায় তিনি তাঁত শিল্পী। গরিব সুদর্শন মণ্ডলের সম্বল বলতে এক চিলতে ভাঙাচোরা বাড়ি। ছিটে বেড়ার দেওয়াল ইয়াসের তাণ্ডবে কবেই ভেঙেছে। সেখানে পলিথিন দিয়ে কোনোরকমে বৃষ্টির ঝাপটা আটকানোর চেষ্টা চলছে এই ঘোর বর্ষায়। টালির চালও ভেঙে ভেঙে পড়ছে। রোদ-বৃষ্টি থেকে বাঁচতে অগত্যা সেখানেও পলিথিন ঢাকা দিয়ে কোনওরকম রেহাইয়ের চেষ্টা। একটা সময় এই বাড়ি থেকেই তাঁত মেশিনের খটা, খট শব্দে ভরে উঠতো গোটা এলাকা। স্বচ্ছল ভাবে চলে যেত সুদর্শনবাবুর সংসার। কিন্তু ভাঙাচোরা ঘরে অবিশ্রান্ত বৃষ্টির জেরে সেই মেশিনও আজ অকেজো হয়ে গিয়েছে। ফলে অন্যের বাড়িতে দিনমজুরি করে কোনওরকমে সংসার চালান তিনি।

কিন্তু আর্থিক অনটনের জেরে বাড়িটা আর সারিয়ে উঠতে পারেননি নিজে। নতুন ঘর তৈরি তো কল্পনার মধ্যেও আনেন না। আমফান, ইয়াশ, দুই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ভয়ানক মোকাবিলায় ফেটেফুটে গিয়েছে বাড়িটি। কোন মুহূর্তে ভেঙে পড়ে সেই ভয়ে তটস্থ থাকেন পরিবারের সদস্যরা। সরকারি সাহায্য চেয়েও কোনওরকম ক্ষতিপূরণ পাননি তিনি।

আশা নিয়ে আবাস যোজনার বাড়ি তৈরির আবেদন করেছিলেন। কুমারচক গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রয়োজনীয় কাগজ সহ নিজের এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যর সই করা নির্দিষ্ট ফর্মও জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু সুদর্শনবাবুর অভিযোগ, তিনি বিজেপি করায় তাঁকে সরকারি সাহায্য থেকে বঞ্চিত করছেন তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। তাই সেই ভাঙা বাড়িতেই চলছে ঝুঁকির বাস।

তবে এই অভিযোগ মানতে নারাজ খোদ কুমরচক গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুধাংশু সামন্ত। তাঁর দাবি, “এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমরা লোককে ডেকে ডেকে বাড়ি দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। আমাদের সরকারি কোটা পূরণ করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সে জায়গায় এই অভিযোগ ঠিক নয়।”

আর এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপির জেলা নেতৃত্বর দাবি, তৃণমূল কংগ্রেস গরিব মানুষের আবাস যোজনার বাড়ি নিয়ে ঘৃণ্য রাজনীতি করছে। কাটমানি পাওয়ার আশায় বেছে বেছে পাকা ছাদওয়ালা লোকেদের আবাস যোজনার বাড়ি দিচ্ছে। অথচ প্রকৃতই যাদের প্রয়োজন তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন সরকারি সাহায্য থেকে। আরও পড়ুন: বাগনান ধর্ষণ কাণ্ডে ধৃত আরও ২ তৃণমূল কর্মী, অধরা মূল অভিযুক্ত!