Durga Puja 2023: ইংরেজরা পুড়িয়ে দিয়েছিল সবটা, রামনগরের জমিদার বাড়ির পুজো এলাকাবাসীদের কাছে আজও গর্বের
Durga Puja 2023: ১৯৪২ সালের স্বাধীনতা আন্দোলনে ইংরেজদের পুড়িয়ে দেওয়া রামনগরের চন্দনপুর জমিদার বাড়ি। সেই জমিদার বাড়ির পুজোই এবার আড়াইশো বছরে পদার্পন করেছে। পুজোর পুরনো জৌলুস নেই ঠিকই, কিন্তু পরম্পরা মেনে ছয়ফুটের দেবী প্রতিমা আজও পূজিত হন চৌধুরী বাড়িতে।
রামনগর: দিঘা সমুদ্র উপকূলবর্তী রামনগরের চন্দনপুর স্বাধীনতার এক পীঠস্থান। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় রামনগরের চন্দনপুর জমিদার বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছিল ইংরেজরা। সেই জমিদার বাড়ির দুর্গা পুজো প্রায় আড়াইশো বছরে পদার্পণ করেছে। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় একবার পুজো বন্ধ হলেও এখনও ঐতিহ্য মেনে চলছে মায়ের আবাহন। মাঝে একবার জমিদার বাড়িতে মৃত্যু হয় একজনের। পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হয় দেবী প্রতিমা ছোট হওয়াতেই এমনটা হয়েছে। তারপর থেকে দেবী প্রতিমা কোনভাবেই ছোট করা হয়নি। নির্দিষ্ট মাপে প্রতিমা গড়া হচ্ছে আড়াইশো বছর ধরে। নির্দিষ্ট একই কাঠের কাঠামোতে প্রতিবছর প্রতিমা গড়া হয়।
ইংরেজদের আমলেও এই দুর্গাপুজো রামনগর এলাকায় খুবই বিখ্যাত ছিল বলেই শোনা যায়। আগে জমিদারবাড়িতে হতো যাত্রাপালা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এখন সেই জৌলুস হারিয়ে গেলেও বর্তমান প্রজন্মই সেই পুজো আগলে রেখেছে। জমিদার বাড়ির পুজোর বিভিন্ন রীতিনীতি, ঐতিহ্য দেখার জন্য প্রতি বছর ভিড় জমান স্থানীয় লোক থেকে দিঘায় ঘুরতে আসা পর্যটকরাও। সাবেকি প্রতিমা এখানকার ঐতিহ্য। জমিদার বাড়ির অনেক সদস্যই বর্তমানে দেশ ছেড়ে পাড়ি দিয়েছেন বিদেশে। কিন্তু, পুজোর সময় সকলেই ফেরেন বাড়ি। একযোগে চলে মায়ের আরাধনা।
১৯৪২ সালের স্বাধীনতা আন্দোলনের আগুনে আঁচ ছড়িয়ে পড়েছিল মেদিনীপুরের আনাচে কানাচে। পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর এলাকার চন্দনপুর গ্রাম ছিল তৎকালীন স্বাধীনতা সংগ্রামের পীঠস্থান। বিপ্লবীদের গোপন ঘাঁটি ছিল এখানেই। মেদিনীপুরের স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক না বলা কাহিনী জড়িয়ে আছে এই চন্দনপুর গ্রামের সঙ্গে। চন্দনপুরের চৌধুরী বাড়ি অর্থাৎ এখনকার জমিদার বাড়ি আজও স্বাধীনতা সংগ্রামের স্বাক্ষর বহন করে চলছে। জমিদার পুলিন বিহারী চৌধুরী ও ভূধর চৌধুরীর বংশধর রজত বরণ চৌধুরী স্মৃতি চারণ করছিলেন সেই স্বাধীনতা আন্দোলনের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের কথা। এবার জমিদার বাড়ির কর্তা মা মারা গেলেও পুজো কিন্তু হচ্ছে। বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা এবার পুজোর আয়োজনে হাত লাগিয়েছে। পুরনো জমিদার বাড়ি এখন নবরূপে সেজে উঠেছে। পুজোর দালান বাড়ি থেকে জগন্নাথ দেবের মন্দির নতুন রং করে নতুন রূপে সজ্জিত হয়েছে।