Brown Sugar: ফুলের শহরে এখন ব্রাউন সুগারের কারবারিদের দাপট! ভাঙছে ঘর, অতিষ্ঠ জনজীবন
Purba Medinipur: পাঁশকুড়া দু'নম্বর ওয়ার্ডের কনকপুর-সহ তার পার্শ্ববর্তী বেশকিছু এলাকা এবং কাঁসাই নদীর তীরবর্তী এলাকায় এই মাদক কারবারের রমরমা বলে অভিযোগ উঠেছে।
পূর্ব মেদিনীপুর: ফুলের জন্য বিখ্যাত পূর্ব মেদিনীপুরের প্রান্তিক জনপদ পাঁশকুড়া। এই পাঁশকুড়ার গা ঘেঁষেই ছোট্ট গঞ্জগ্রাম ক্ষীরাই। বাহারি ফুলের সমারোহ এই ক্ষীরাইকে ইতিমধ্যেই বহুল পরিচিত করে তুলেছে। পাঁশকুড়াও ফুলের শহর বলেই খ্যাত। কিন্তু ইদানিং এখানে বেড়েছে ব্রাউন সুগারের আতঙ্ক। এর জেরে অতিষ্ঠ পুরবাসী, মেসে থাকা ছাত্র-শিক্ষক থেকে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনও।
পাঁশকুড়া দু’নম্বর ওয়ার্ডের কনকপুর-সহ তার পার্শ্ববর্তী বেশকিছু এলাকা এবং কাঁসাই নদীর তীরবর্তী এলাকায় এই মাদক কারবারের রমরমা বলে অভিযোগ উঠেছে। নেশার সামগ্রীর ব্যবসা এবং নেশার ঠেক ক্রমেই বাড়তে শুরু করেছে এই সব এলাকায়। শুধু তাই নয়, এর জেরে বাড়ছে চোরের দৌরাত্ম্যও। এই ব্রাউন সুগারের নেশা বহু পরিবারে ভাঙন ধরিয়েছে।
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, পার্শ্ববর্তী ওড়িশা-সহ বেশ কিছু এলাকা থেকে আগে ট্রেনে করেই এই মাল পাঁশকুড়ায় পৌঁছত। করোনার পর বিধিনিষেধের গেরোয় জাতীয় সড়ক হয়ে এই নেশার দ্রব্য পৌঁছে যাচ্ছে পাঁশকুড়ার বুকে। এরপরই রমরমিয়ে তা বিক্রি চলছে।
ব্রাউন সুগারের নেশায় বুঁদ এলাকার বহু যুবক। বাড়িতে অশান্তি বাড়ছে। একই সঙ্গে এলাকাবাসীরও স্বস্তি নেই। নেশার টাকা জোগাড় করতে লোকের বাড়িতে চুরি পর্যন্ত করছেন কেউ কেউ। বাড়ির বাইরে থাকা মিটার বক্স, বাড়ির থালা বাসন থেকে ঘরের পাখা যা পাচ্ছে হাতের নাগালে, তুলে নিয়ে পগারপার।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রাত দিন গোপনে চলে ব্রাউন সুগারের ব্যবসা ও মাদক সেবনের আসর। কাউকে হাতেনাতে ধরতে পেরে প্রতিবাদ করলেই পাল্টা হুমকি আসে বলে দাবি স্থানীয়দের। কনকপুর এলাকার পাশেই রয়েছে পাঁশকুড়া বনমালী কলেজের একটি মেস। সেখানে ছাত্র থেকে শিক্ষক সবার বক্তব্য , সন্ধ্যা নামলেই মেসের পাশে বসে নেশার আসর। প্রতিবাদ করলে হুমকি দেওয়া হয়। পুলিশ ধেয়ে এলে কিছুদিন শান্ত থাকে। এরপর আবার একই অবস্থা।
পাঁশকুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান নন্দ মিশ্র বলেন, “এই অভিযোগ একেবারেই সত্যি। এই বিষয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে পুলিশকে বলে আসছি। এগুলি মূলত পুলিশকেই দেখতে হবে। এর আগে একটা সময় যিনি পুলিশ সুপার ছিলেন তিনি আমাকে আশ্বাসও দিয়েছিলেন যেভাবেই হোক এগুলি কমাবেন। বর্তমানে যিনি আইসি আছেন, তিনিও বেশ কিছু সদর্থক পদক্ষেপ করেছেন। অনেককে ধরেওছেন। পুলিশের কাছে আমার একটাই আবেদন, শক্ত হাতে এগুলি দমন করা হোক।”
অন্যদিকে পাঁশকুড়া থানার আইসি আশিস মজুমদার এক অনুষ্ঠানে কড়া বার্তা দেন, “আমি পাঁশকুড়ার নাগরিক হিসাবে আমার শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে চেষ্টা করব ব্রাউন সুগার কারবারীদের ধরার। যারা এই ব্রাউন সুগার বিক্রি করছে তাদের আমি ধরেই ছাড়ব। শহরবাসীর কাছেও অনুরোধ করব, আপনারা এখন থেকেই তৈরি হন। না হলে আপনাদের আগামী প্রজন্ম যারা এখানে থাকবে এই ব্রাউন সুগার কিন্তু আপনার ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে।”
আরও পড়ুন: Saheb Badh: সাহেব বাঁধের ফাইল লোপাট! দুর্নীতি চাপা দিতেই এসব, বলছে বিজেপি