লিঙ্ক-বিভ্রাট: ৭ মাস রেশন থেকে বঞ্চিত কয়েকশো পরিবার

Ration Card: প্রশাসনের দোরগোড়ায় ছুটেও কোনও সুরাহা হয়নি। একে করোনাকালে কর্মহীন, তার উপর রেশন দ্রব্য না মেলায় দিশেহারা দিন আনা দিন খাওয়া কয়েকশো পরিবার।

লিঙ্ক-বিভ্রাট: ৭ মাস রেশন থেকে বঞ্চিত কয়েকশো পরিবার
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 01, 2021 | 7:28 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: রেশন কার্ডে আধার লিঙ্ক বিভ্রাট। আর তার জেরে বেশ কয়েক মাস রেশন দ্রব্য না পেয়ে বিপাকে পড়েছে কাঁথির বেশ কয়েকটা গ্রামের দরিদ্র মানুষজন। প্রশাসনের দোরগোড়ায় ছুটেও কোনও সুরাহা হয়নি। একে করোনাকালে কর্মহীন, তার উপর রেশন দ্রব্য না মেলায় দিশেহারা দিন আনা দিন খাওয়া কয়েকশো পরিবার।

কাঁথি দুই ব্লকের দেশপ্রাণ ব্লকের বসন্তিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মহম্মদ পুর, মির্জাপুর, কালিকা কুমারী, পূর্ব ও পশ্চিম কুশবনী সহ আরো বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ দিন আনা দিন খাওয়া দরিদ্র মানুষের দীর্ঘ ৭ মাস ধরে সরকারের রেশন দ্রব্য থেকে বঞ্চিত বলে তাঁর অভিযোগ।

এমনই এক বাসিন্দার কথায়, “আমরা দিন আনা দিন খাওয়া মুখ্যুসুখ্য মানুষ। গত সাত মাস আগে রেশন ডিলার বলেন, এই সমস্ত রেশন কার্ডে আধার সংযোজন (লিঙ্ক) করতে হবে, সেই মতো দেশপ্রাণ ব্লকের ৬ টি গ্রামের মানুষ বিভিন্ন জায়গার কম্পিউটার সেন্টারে গিয়ে আধার লিঙ্ক করিয়ে আনি। তার বেশ কিছুদিন পরে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে সবার বাড়িতে নতুন রেশন কার্ড এসে পৌঁছয়। সেই কার্ড নিয়ে রেশন আনতে গেলে রেশন ডিলার বলেন, এই কার্ডে রেশন দেওয়া যাবে না!”

এদিকে এই খবর ছড়িয়ে পড়তে একে একে সবাই রেশন কার্ড নিয়ে পৌঁছে যান রেশন দোকানে। দেখা যায়, গ্রামের বেশির ভাগ পরিবারে এই ধরনের কার্ডে কেবল পরিচয়পত্র হিসেবে ব্যবহার করা যাবে, কিন্তু খাদ্যদ্রব্য পাওয়া যাবে না। এমন খবর ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে রেশন ডিলারের কাছে এর সুরাহা জানতে চান। ডিলার জানান, আধার লিঙ্ক করতে গিয়েই এই বিভ্রাট সৃষ্টি হয়েছে। এই কার্ডে বলা রয়েছে, আমার রেশন দ্রব্যের প্রয়োজন নেই। শুধু পরিচয়পত্র হিসাবে একটি রেশন কার্ড প্রয়োজন। সেই কারণে এই কার্ড আবার নতুন করে এসেছে।

এদিকে এই প্রত্যন্ত গ্রামগুলির নিরক্ষর বা স্বল্প শিক্ষিত মানুষদের কেউ রিকশা টেনে, কেউ মাছ বিক্রি করে জীবনধারণ করেন। কেউ আবার স্রেফ ভিক্ষাবৃত্তি করে দিন গুজরান করেন। কারও আবার মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও নড়বড়ে। এদিকে সরকার থেকে মেলেনি কোনও ঘর। একে বৃষ্টির দিন, তার ওপর করোনা কাল। কাজ হারিয়ে বেকার এই মানুষরা পরিবারের ছোট ও বয়স্ক সদস্যদের মুখে দিনে দু’মুঠো অন্য তুলে দেবেন তাই নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন। এই চিন্তায় দিন গুনছেন প্রায় কয়েকশো পরিবার। এদিকে সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন সরকারি দফতরে ছুটেও কোনও সমাধান হয়নি বলে দাবি বাসিন্দাদের।

এ নিয়ে তৃণমূল নেতা জনাব মামুদ হোসেন বলেন, “এটা টেকনিক্যাল সমস্যার জন্য হয়েছে। এই ধরনের সমস্যা কাঁথি শহরের বিভিন্ন এলাকাতেও হয়েছে। আমরা সর্বতোভাবে এই সমস্যায় পড়া মানুষের পাশে আছি, জরুরি ভিত্তিতে তারা যাতে টোকেন সিস্টেমে রেশন দ্রব্য পায় সেই ব্যবস্থা যাতে করা যায় তার জন্য প্রশাসন কে জানাব আমরা।” যদিও এই নিয়ে রেশন ডিলার বা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কোনও কর্তা মুখ খুলতে রাজি হননি। এই নিয়ে এলাকার বিধায়ক সুমিতা সিনহা তিনিও প্রশাসনের কাছে দরবার করবেন বলে জানিয়েছেন। আরও পড়ুন: ‘ছোট দলগুলির জন্য দরজা খোলা’, নিজের উপর আস্থা হারিয়েই কি জোটের ডাক অখিলেশের?

Zika Band