Purba Medinipur: পুলিশ কথা শুনছে না! ভরা সভায় অনুযোগ মন্ত্রী পত্নীর
TMC: "এলাকায় শান্তি রক্ষার জন্য রাখা হয়েছে পুলিশকে। আপনারাও কিন্তু মা-মাটি-মানুষের সরকারের অধীনস্থ কর্মচারী। এটা ভুললে চলবে না''।
পূর্ব মেদিনীপুর: ‘যাদের স্ট্যাম্প-প্যাড আছে তাদের কথা মতো চলতে হবে।’ কিন্তু পুলিশ (Police) তো কথাই শুনছে না। পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এক সভা মঞ্চ থেকে এমনই ‘অনুযোগ’ শোনা গেল রাজ্যের সেচ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র (Soumen Mahapatra) -এর স্ত্রী সুমনা দেবী (Sumana Mahapatra)-র গলায়। আর মন্ত্রী পত্নীর এই ‘খেদের’ জবাবে তীব্র ভাবে বিঁধল বিজেপি (BJP)।
সোমবার পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় তৃণমূলের এক সভা থেকে পুলিশকে কার্যত হুমকি দিতে শোনা গেল মন্ত্রী পত্নী তথা পাঁশকুড়া পুরসভার কাউন্সিলর সুমনা মহাপাত্রকে। তাঁর অভিযোগ, মানুষের সঙ্গে অকারণ দুর্ব্যবহার করে পুলিশ। এমন ব্যবহার কিংবা ঘুষ নেওয়ার মতো অপরাধে একবারেই রেয়াদ করা হবে না তাদের বলে হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। আবার পাঁশকুড়া থানার আইসিকে উদ্দেশ্য বার্তা দেন পাঁশকুড়া পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা পাঁশকুড়া শহর মহিলা তৃণমূল নেত্রী সুমন মহাপাত্রের। বলেন, “আইসিকে বলেছি, সাহেব, আপনি মানুষের সঙ্গে একটু মানবিক ব্যবহার করবেন। একটু মুখে মধু দেওয়া ব্যবহার করবেন। আমি অনেক করে বলেছি, ওঁনাদের অফিসারদেরও বলেছি”।
তিনি আরও যোগ করেন, “মানুষকে অকারণে ভয় দেখাব ঘুষ নেব এসব চলবে না। কোলাঘাট ব্রিজের তলায় লাইট বের করে এইসব চলবে না। আমরা ধরতে পারলে প্রতিবাদ করব”।
মন্ত্রী জায়ার কথায়, “এলাকায় শান্তি রক্ষার জন্য রাখা হয়েছে পুলিশকে। আপনারাও কিন্তু মা-মাটি-মানুষের সরকারের অধীনস্থ কর্মচারী। এটা ভুললে চলবে না”। তার পর নিজের দলের কর্মীদের উদ্দেশে তাঁকে বলতে শোনা যায়, পুলিশকে ভয় পাবেন না। হয়ত আপনারা কোনও ভুল করে ফেলেছেন। অসুবিধা হলে লোকাল নেতানেত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন। যদি মনে হয় আমি ঠিক ভাবে বিচার পাচ্ছি না তার জন্য আমরা আছি”।
এখানে না থেমে সুমনা মহাপাত্র আরও যোগ করেন,”যাদের স্ট্যাম্প-প্যাড আছে তাদের কথা মতো চলতে হবে। না হলে প্রতিবাদ হবেই”। তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। তার মানে কি পরোক্ষে শাসক দলের প্রতিনিধিদের কথা মেনে পুলিশকে চলার বার্তা দিলেন মন্ত্রী-জায়া? প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি।
তমলুক সাংগঠনিক জেলার যুব মোর্চা সভাপতি প্রতীক পাখিরার কথায়, “পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তো নতুন কিছু নয়। কিন্তু বিরোধীরা যে অভিযোগ বারবার করে আসছে, সেই সুর শোনা গেল মন্ত্রীর স্ত্রীয়ের গলায়। তবে মন্ত্রীর স্ত্রী তাঁর প্রভাব খাটিয়ে আগেও এসব কাজ করেছে”।
তিনি পুরনো এক ঘটনার উদাহরণ টেনে কটাক্ষ করেন, “তৃণমূল নেতাদের হাত থেকে বাঁচতে থানার ভিতরে পুলিশকে ফাইল ঢেঁকে বাঁচতে হয়েছিল। আসলে তৃণমূলের সবাই চায়, পুলিশ প্রশাসনকে নিজেদের পায়ের নিচে রাখতে। এটা পুনরায় সেটা প্রমাণ করলেন মন্ত্রীর স্ত্রী। যাতে বিরোধী নেতাদের মিথ্যা কেস দিতে পারে সে জন্যই এই হুমকি”। বিজেপি নেতা আরও যোগ করেন, “যে পুলিশ একটু শিরদাঁড়া সোজা রেখে কাজ করার চেষ্টা করছে, তাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে”।