Suvendu Adhikari attacks Mamata Banerjee: বিধানসভায় মমতার ‘শুভ অহংকার’ -এর পাল্টা ‘শুভ নির্মমতা’ ‘বিনিময়’ শুভেন্দুর

Suvendu Adhikari and Mamata Banerjee: মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘বিরোধীরা বিধানসভাকে বিধানসভা বলে মনেই করেন না। যখন ইচ্ছা হয় আসেন, যখন ইচ্ছা হয় না আসেন না। এতে আমার মর্মবেদনা হয়। তবে খারাপ লাগে না।’

Suvendu Adhikari attacks Mamata Banerjee: বিধানসভায় মমতার 'শুভ অহংকার' -এর পাল্টা 'শুভ নির্মমতা' 'বিনিময়' শুভেন্দুর
মমতাকে পাল্টা কটাক্ষ শুভেন্দুর। ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 16, 2021 | 7:41 PM

কলকাতা: টিপ্পনী, শ্লেষ, কটাক্ষ -সবেরই আলাদা ব্যঞ্জনা রয়েছে। আর একে অন্যকে আক্রমণ করতে গিয়ে এর সবেরই নানাসময়ে ব্যবহার করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) ও তাঁর একসময়ের রাজনৈতিক সতীর্থ তথা অধুনা বিরোধী আসনে বসা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। নানা সময়ে তাঁদের একে অন্যকে নিয়ে যে আক্রমণ, কটাক্ষ ব্যক্তিকেন্দ্রিক বলে অভিহিত করেছে রাজনৈতিক মহল। তবে এদিন বিধানসভায় যে ‘সেয়ানে সেয়ানে কোলাকুলি হল’, আর তাতে যে শব্দের আমদানি হল, তা উল্লেখযোগ্য বলেই মনে হয়।

গত ৯ নভেম্বর উপনির্বাচনে জয়ী বিধায়করা শপথ নিতে এসেছিলেন বিধানসভায়। সেদিন বিধানসভা অধিবেশনের শুরুতে বিরোধী দলকে কটাক্ষ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তাঁদের অনুপস্থিতি নিয়ে মমতা ব্যঙ্গের সুরে বলেছিলেন, ‘বিরোধীদের বলব শুভ বিজয়া, শুভ দীপাবলি, শুভ ছট পুজো এবং শুভ অহঙ্কার’। সেদিনও ছিল মঙ্গলবার। আর এই মঙ্গলে শাসক শিবিরের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে খানিকটা কটাক্ষ মিশিয়ে তিনি বললেন, ‘শুভ নির্মমতা’।

এদিন বিধানসভায় একাধিক বিষয়ে বক্তব্য রাখেন শুভেন্দু। বিএসএফের এক্তিয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের রাজ্যে পুলিশ-বিএসএফ যৌথভাবে কাজ করলে ভালই হবে।” তিনি যোগ করেন, “বামফ্রন্টের মতো আমরা ওরা নয়। একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বিএসএফ মানে যেন পাকিস্তানের সেনা! ওরা (তৃণমূল) এমন বলছে”। বিএসএফ-কে যে ভাষায় আক্রমণ করা হচ্ছে, তা কাঙ্খিত নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিরোধী দলনেতার কথায়, “জঙ্গল, দার্জিলিংয়ে রাজ্যকে কারা রক্ষা করেছিল? আমার বক্তব্য খুব পরিষ্কার। আমি কতগুলো ইস্যু তুলছি। বিএসএফ নিয়ে যে মন্তব্য উঠে আসছে, তা খুব খারাপ। পুলিশের ক্ষমতা কোথাও কি খর্ব হয়েছে? গুজরাটে ৮০ কিমি করা হয়েছিল (বিএসএফের ক্ষমতা)। এরপর তিনি আরও যোগ করেন, ৫০ কিলোমিটার নয়। বাংলায় বিএসএফের ক্ষমতা ৮০ কিলোমিটার করা হোক। তার পর তৃণমূলকে উৎসবের শুভেচ্ছা জানিয়ে শুভেন্দুর মন্তব্য, “শাসক দলকে শুভ বিজয়া, শুভ ছট, শুভ দীপাবলি, শুভ নির্মমতা”।

এ যেন অক্সিমোরনের পর অক্সিমোরন। ‘জাম্বো চিংড়ি’ এবং ‘নিস্তেজ গর্জন’-এর মতোই বিধানসভায় এদিন হল ‘শুভ- তরজা’। শুভ শব্দটা যে ব্যঞ্জনায় শব্দকোষে স্থান দখল করুক, তা গত মঙ্গলে বদলে গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষে। সেদিন বিরোধীদের ‘শুভ বিজয়া’, ‘শুভ দীপাবলি’, ‘শুভ ছট পুজো’র শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেছিলেন ‘শুভ অহঙ্কার’। আর মঙ্গলবার বিধানসভায় সেই শব্দগুচ্ছকে দিয়ে পাল্টা খোঁচা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি জানালেন, ‘শুভ’ -র পাশে বসালেন ‘নির্মমতা’কে।

ওয়াকিবহালের মতে, সেদিন বিরোধীদের কথায় কথায় অধিবেশন ওয়াকআউট করাকে ব্যঙ্গ করে মমতার মুখে উঠে এসেছিল ‘শুভ অহঙ্কার’ শব্দগুচ্ছ। আর বারংবার রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের অভিযোগ তোলা শুভেন্দু শুধু দুটি শব্দ দিয়েই এদিন সেই শুভেচ্ছা বিনিময়ের অছিলায় ফের তাদের কটাক্ষ করলেন। সেটা করতে গিয়ে মমতার একদা সৈনিক তুলে নিলেন তাঁরই ব্যবহৃত শব্দবাণ!

সেদিন বিরোধী দলের নাম নেননি মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘বিরোধীরা বিধানসভাকে বিধানসভা বলে মনেই করেন না। যখন ইচ্ছা হয় আসেন, যখন ইচ্ছা হয় না আসেন না। এতে আমার মর্মবেদনা হয়। তবে খারাপ লাগে না।’ তার পর তিনি যোগ করেছিলেন, ‘‌আপনারা যাঁরা মানুষের ভোটে জিতে এসেছেন, তাঁদের অভিনন্দন জানাই। তবে মানুষের জন্য কাজ করতেই এখানে এসেছেন, সেটা মনে রাখবেন। মানুষের আশীর্বাদ অহঙ্কার করার জায়গা নয়। বিরোধীদের বলব, ‘শুভ বিজয়া’, ‘শুভ দীপাবলি’, ‘শুভ ছট পুজো’ এবং ‘শুভ অহঙ্কার’।

এদিন শুভেন্দুও বিশেষ কারও নাম করলেন না। শুধু ‘শুভ নির্মমতা’-র শব্দ চয়নের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিলেন তাঁর নিশানা আসলে কার দিকে। আর বাঙালি এতে নয়া অক্সিমোরন শব্দ পেল কি? সেটা সময়ই বলবে।

(উল্লেখ্য, অক্সিমোরন হল দুটি শব্দের জোড় যা নিজেই স্ববিরোধী)

আরও পড়ুন: BSF issue in Assembly: বিজেপি বিধায়কের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি, বিধানসভায় অধ্যক্ষের ভর্ৎসনার মুখে উদয়ন