Digha Tourism: ওমিক্রনের কাঁটায় বিধ্বস্ত উপকূলের পিকনিক স্পট! দিঘার ঝাউবন ও সমুদ্র রয়েছে আপন কলতানে
Purba Medinipur: সৈকত শহর দিঘা যেন আজ জনশূন্য স্থলে পরিণত হয়েছে।
দিঘা: রাজ্যে লাফিয়ে-লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। কলকাতার পাশাপাশি জেলার ছবিটাও এক। রাজ্য সরকারের নির্দেশে জেলার সর্বত্রই বন্ধ ভিড় ও সব ধরণের বড় জমায়েত। সেই নির্দেশে বেশ বিপাকে পড়েছে উপকূলের জেলা পূর্ব মেদিনীপুর। জেলার পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত কোলাঘাট, গেওখালী,মহিষাদল, হলদিয়া সহ মন্দারমণি ,তাজপুর, শংকরপুর ও দিঘা সর্বত্রই আজ খাঁ-খাঁ করছে।
ইংরেজি নববর্ষের উন্মাদনায় মেতেছিল ভ্রমণ পিপাসু মানুষজন। কিন্তু সেই উন্মাদনাই যে সমস্যায় দাঁড়িয়ে যাবে কেই বা জানত। রাজ্যে ওমিক্রমের বাড় বাড়বাড়ন্তে সেই কোপ পড়লো পর্যটন শিল্পে। সৈকত শহর দিঘা যেন আজ জনশূন্য স্থলে পরিণত হয়েছে। কয়েকদিন আগে যেখানে থিক থিকে ভিড় ছিল আজ তা মানুষের জৌলুস হারিয়েছে।
দিঘার সমুদ্রে ধারে পসরা নিয়ে বসেন কাজু ব্যবসায়ী রাখাল প্রামাণিক। তিনি বলেন, “ডিসেম্বর ও জানুয়ারি দুই মাস আশা করা হয়েছিল ব্যবসা হবে। কিন্তু যা পরিস্থিতি তাতে বুঝতে পারছিনা কিভাবে চালাবো। পর্যটক শুন্য হয়ে গিয়েছে। কীভাবে ব্যাবসা চলবে? গত বছর মার খেয়েছে ব্যবসা। আবার যা পরিস্থিতি দাঁড়ালো তাতে বলার কিছু নেই।” অন্যদিকে, হোটেল ব্যাবসায়ী চিরঞ্জীব গিরি বলেন, “গত বছর লকডাউনে পর্যটক মরশুমে ক্ষতি হয়েছিল পরিস্থিতির। লাইট,স্টাফ,ব্যাংকের কিস্তি দিতে পারিনি। ভেবেছিলাম এ বছর কিছুটা উঠে যাবে। এই জানুয়ারি মাস প্রায় বুকিং ছিল। কিছু পর্যটক আসছে আবার কিছুজন বলছে সমুদ্র স্নান বন্ধ কী করবো গিয়ে তাই বুকিং বাতিল করেছে। এখন থেকেই হোটেলের বাকি কর্মীদের ছেড়ে দিচ্ছি কারণ বেতন দেব কোথা থেকে। আর কয়েকদিন পর আমরাও এর হোটেলে থাকবো না বন্ধ করে দেব হোটেল।”
দিঘার স্ট্যান্ড ম্যানেজার বাপি প্রামাণিক বলেন, “আংশিক নয় অঘোষিত লকডাউনে চলছে। সমুদ্র স্নান বন্ধ করার জন্য নতুন পর্যটকদের আনাগোনা নেই। টুকটাক চলছে ,বাসের যাত্রী ৪-৫ জন। কী করে ব্যবসা চলবে ? তেল কেনার টাকা কোথায় পাবে মালিক দুশ্চিন্তার বিষয়।” দিঘায় আগত এক পর্যটক প্রসেনজিৎ মণ্ডল বলেন, “সঠিক ভাবে জানা ছিল না তাই চলে এসেছি। আগে যদি জানতাম সমুদ্র স্নান বন্ধ তা হলে আর আসতাম না তবে আজই ফিরে যাবো।”
এদিকে, জেলা প্রশাসনের নির্দেশে দিঘা শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদ,দিঘা থানা ও রামনগর ১ব্লক প্রশাসন লাগাতার প্রচার চালাচ্ছেন। সরকারি নির্দেশ আংশিক লকডাউনের ফলে কার্যত মাঠেই মারা গেল ভরা পর্যটনের মরশুম। যদিও, সমগ্র পরিস্থিতিতে রামনগর ১ পঞ্চায়েত সমিতিতে সহ-সভাপতি নিতাই চরণ সার বলেন, “দিঘা লাগোয়া এলকায় কোভিড বাড়ছে। আমরা সতর্ক রয়েছি গ্রামে-গ্রামে আমাদের টিম পাঠাচ্ছি। স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা যাচ্ছেন। মানুষকে বোঝাচ্ছেন। এখনো বহু মানুষ সচেতন নয় মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার ব্যবহারে অনীহা দেখাচ্ছেন। আর সৈকত শহরের কথা আমরা মাথায় রেখেছি। ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ীদের পাশে পঞ্চায়েত সমিতিগত ভাবে আমরা রয়েছি। জরুরি সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। এবং পর্যটনকেন্দ্র গুলিতে বিশেষ নজর রয়েছে আমাদের।”
আরও পড়ুন: Mukutmanipur: ‘অদৃষ্টে আমাদের অনাহারে মৃত্যু লেখা!’ মানবশূন্য মুকুটমণিপুরে আশঙ্কার সুর মাঝিদের গলায়