Soumen Mahapatra: ‘ওঁ বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, সংযত হোন…’, খেদ সেচমন্ত্রীর, ক্রমেই ‘উলঙ্গ’ হচ্ছে শুভেন্দুর শব্দচয়ন!
Suvendu Adhikari: শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) দাবি করেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী সর্বদা সুরা পান করেন। এ বার, রাজ্যের বিরোধী দলনেতার কটাক্ষের পাল্টা জবাব দিলেন সৌমেন মহাপাত্র
পূর্ব মেদিনীপুর: সম্প্রতি নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র (Soumen Mahapatra) বিস্ফোরক দাবি করেছেন। শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন বলে দাবি করেন সৌমেন। পাল্টা শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) দাবি করেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী সর্বদা সুরা পান করেন। এ বার, রাজ্যের বিরোধী দলনেতার কটাক্ষের পাল্টা জবাব দিলেন সৌমেন মহাপাত্র।
সৌমেন বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী বলিষ্ঠ নেতৃত্ব। তাঁর মুখে এ ধরনের কথা মানায় না। সংযত হোন। ওঁর ভাষাজ্ঞান সংযত হওয়া দরকার। রাজনীতির নিয়ম মেনেই আমি নন্দীগ্রামের সমাবেশে বক্তব্য রেখেছি। তাতে রুষ্ট হয়ে ওঁ একাধিক কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন। আমার মনে হয় সেসময়ে ওঁ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। রুচিহীন মন্তব্যই স্পষ্ট করে করে দেয় তাঁর ভাষার দৈন্যতা। শব্দ চয়নে যে তিনি উলঙ্গ হয়ে গিয়েছেন তা প্রমাণিত।”
এখানেই না থেমে সেচমন্ত্রীর আরও সংযোজন, “আমার বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্য করে ওঁ অনাস্বাদিত আনন্দ উপভোগ করুন, সেটা আমি চাই। তবে রাজনীতিতে থাকার জন্য যুক্তি-তর্কে থাকা উচিত। ওঁর মতো রাজনীতিকের থেকে সেটা আমি আশা করি।”
রাজ্যের সেচমন্ত্রীকে কটাক্ষ হেনে ঠিক কী বলেছিলেন বিরোধী দলনেতা? সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “সৌমেনবাবু প্রত্যেকদিন সুরা পান করেন। কাল দিনের বেলাও করেছিলেন বলে আমার মনে হয়। এ ধরনের কথা বলা উচিৎ না, তবু দায়িত্ব নিয়ে বলছি। তমলুকে সবাই জানে। মানিকতলাতে একটা ওষুধের দোকানের পিছনে উনি কী করেন সন্ধ্যার পরে তা সকলেই জানেন। আমার মনে হয় কাল দিনের বেলাতেও অপ্রকৃতস্থ ছিলেন। তাই এ ধরনের কথা বলেছেন।”
প্রসঙ্গত, রবিবার নন্দীগ্রামের সীতানন্দ কলেজের মাঠে একটি সভার আয়োজন করেছিল স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সেখানে সৌমেন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দোলা সেন, পূর্ণেন্দু বসু এবং অখিল গিরিরা। সেখানেই সৌমেন মহাপাত্র দাবি করেন, “বিরোধী দলনেতা পদটা থাকবে কি না, সন্দেহ আছে। এই নন্দীগ্রামে একটা উপনির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ বিরোধী দলনেতার পদে যিনি আছেন, তিনি তাঁর দল থেকে যেভাবে আমাদের দলের দিকে সরে আসছেন, তাঁর দলের প্রায় সবাই চলে আসছেন, ওঁর আসা সময়ের অপেক্ষা। তবে কবে আসবেন নাকখত দিয়ে, তা সময়ই বলবে। আসনের সংখ্যা ৩০-এর কম হয়ে গেলে বিরোধী দলনেতা পদটা থাকবে না।”
গত শনিবার থেকে আবারও শিরোনামে নন্দীগ্রাম। এদিন এলাকারই তৃণমূল নেতা রবীন দাসের স্মরণ সভায় গিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন তৃণমূল নেতা আবু তাহের। তিনি সরাসরি বলেন, “শুভেন্দু অধিকারীই জমি আন্দোলনের নেতা নিশিকান্ত মণ্ডলকে লোক লাগিয়ে খুন করিয়েছেন।”
কে এই নিশিকান্ত মণ্ডল? ২০০৯ সালের ২২ নভেম্বর মৃত্যু হয়েছিল নিশিকান্ত মণ্ডলের। নিশিকান্ত সোনাচূড়ায় সে সময় অঞ্চল প্রধান ছিলেন। সেদিন সন্ধ্যা নাগাদ বাড়ি ফেরার সময়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পিছনে মাওবাদী নেতা কিষানজির নাম উঠে এসেছিল। ঘটনার ১২ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। এতদিন পর এ নিয়ে মুখ খোলায় বিরক্ত নিশিকান্তের পরিবারও। তাদের দাবি, কেন ১২ বছর চুপ ছিলেন আবু তাহের?
তৃণমূলের অভিযোগ, শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রামে ধর্মীয় মেরুভেদ তৈরি করতে উদ্যত। আর সে কারণেই তাঁর ঘনিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও একাধিক নেতা শুভেন্দুর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। শুভেন্দু অধিকারীর ছায়াসঙ্গী হিসাবে পরিচিত আবু তাহেরও ১২ বছর পর তাঁর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন।