Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

TMC: পূর্ব মেদিনীপুরে মহাপাত্র পরিবারের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে তৃণমূলের? সুমনার পদত্যাগে বাড়ছে গুঞ্জন

TMC: সৌমেন মহাপাত্র ও তাঁর স্ত্রী সুমনা সবচেয়ে ক্ষুব্ধ আরজি কর কাণ্ডের পর তাঁদের ছেলের নাম জড়িয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে যে অপপ্রচার চলছিল, তাতে দলকে সেভাবে পাশে পাননি। বরং দলের লোক আরও বেশি করে এটা ছড়িয়ে দিয়ে সাহায্য করেছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করে সাংবাদিক বৈঠকও করেন দু'জন।

TMC: পূর্ব মেদিনীপুরে মহাপাত্র পরিবারের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে তৃণমূলের? সুমনার পদত্যাগে বাড়ছে গুঞ্জন
সুমনা মহাপাত্র ও সৌমেন মহাপাত্র (ফাইল ফোটো)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 21, 2024 | 8:52 PM

তমলুক: তাঁর স্বামী তমলুকের বিধায়ক। প্রাক্তন মন্ত্রী। আর তিনি পাঁশকুড়া শহর তৃণমূলের সভানেত্রী। সেই পদ থেকেই ইস্তফা দিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রর স্ত্রী সুমনা মহাপাত্র। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায় এবং রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণেই পদত্যাগ বলে জানান সুমনা। তাঁর কথায়, “পদ ছাড়ছি। কিন্তু দলের সাধারণ কর্মী হিসেবে কাজ করে যাব।” কিন্তু, পূর্ব মেদিনীপুরে অধিকারী পরিবারের পর এবার মহাপাত্র পরিবারের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক ছেদ হবে কি না, তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। কারণ, আরজি কর কাণ্ড ঘিরে তাঁদের ছেলেকে নিয়ে নানা গুঞ্জন ছড়ানোর পর তৃণমূলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন সুমনা মহাপাত্র ও সৌমেন মহাপাত্র।

রাজ্য মন্ত্রিসভা, দলীয় পদ-সহ সমস্ত ধরনের পদ থেকে তমলুকের বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্রকে আগেই সরিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। আগে একাধিক বিষয়ে দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভও প্রকাশ করেন সুমনা ও সৌমেন। সূত্রের খবর, লকডাউনের শুরু থেকে পাঁশকুড়া শহরের দুঃস্থ ও ভবঘুরেদের ত্রাণ সামগ্রী বিলি ঘিরে মতবিরোধ শুরু। তখন ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুমনা মহাপাত্র। ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত উপপুরপ্রধান সইদুল ইসলাম খান এবং তাঁর দাদা জইদুল ইসলাম খানের সঙ্গে বিরোধ বাধে সুমনার। এর পরও একাধিক বার ব্লক ও জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে নানা কারণে দ্বিমত ও দূরত্ব রেখে চলেছেন সুমনা ও সৌমেন।

সৌমেন ও সুমনা সবচেয়ে ক্ষুব্ধ আরজি কর কাণ্ডের পর তাঁদের ছেলের নাম জড়িয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে যে অপপ্রচার চলছিল, তাতে দলকে সেভাবে পাশে পাননি। বরং দলের লোক আরও বেশি করে এটা ছড়িয়ে দিয়ে সাহায্য করেছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করে সাংবাদিক বৈঠকও করেন দু’জন।

এবার দলের পদ ছাড়লেন সুমনা। পদ ছাড়া নিয়ে তিনি বলেন, “আমরা কংগ্রেসে ছিলাম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভালবেসে তৃণমূলে এসেছি। দিদির কাছেই থাকব। কিন্তু, তৃণমূলের একাংশ আমাদের পরিবারকে অশান্তিতে ফেলার চেষ্টা করছে। রাজনীতি আমাদের পেশা নয়। পাঁশকুড়া শহরের অনেক তৃণমূল নেতা আমাদের পরিবারের নামে নোংরা কথা বলছে।” গত ১২ অগস্ট রাজ্য নেতৃত্বকে তিনি চিঠি দিয়ে সব কথা জানিয়েছিলেন। পদত্যাগের ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু, এই ২ মাসে কোনও উত্তর না পেয়ে নিজেই পদত্যাগপত্র পাঠান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করলেও দলের একাংশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সুমনা। তিনি বলেন, “দিদি কড়া পদক্ষেপের কথা বলছেন। কিন্তু, ঠক বাছতে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে।”

স্ত্রীর পদ ছাড়া নিয়ে তমলুকের বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র বলেন, “তিনি আমার সহধর্মিণী। এর জন্য আমি ভাগ্যবান। কিন্তু, তিনি কেন পদত্যাগ করেছেন, তা তিনিই বলতে পারবেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করিনি। তবে সবাই যেমন জেনেছে, তেমনই জেনেছি যে একান্ত ব্যক্তিগত কারণে তিনি পদত্যাগ করেছেন।” তমলুক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমার কাছে কোনও পদত্যাগপত্র পাঠাননি। তবে ফোনে জানিয়েছেন যে তিনি দলের রাজ্য সভাপতি ও সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। এটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার।”

জেলা তৃণমূলের সভাপতি ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত বললেও সুমনাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি রাজ্য যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সহসভাপতি পার্থসারথি মাইতি। তিনি বলেন, “তৃণমূলের সম্পর্কে বুদ্ধিজীবীদের কাছে খারাপ বার্তা দেওয়া চলছে। এইসময় এই পদক্ষেপ করা ঠিক হয়নি। দলের সুসময়ে থাকব, খারাপ সময়ে চলে যাব, এটা ঠিক নয়। বিজেপির হাত শক্ত করা উচিত নয়।” এখন প্রশ্ন উঠছে, অধিকারী পরিবারের মতো মহাপাত্র পরিবারের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্কে ছেদ পড়বে? ২০২০ সালে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরই অধিকারী পরিবারের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে তৃণমূলের। এখন অধিকারী পরিবারের সঙ্গে তৃণমূলের রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই। সুমনা মহাপাত্র অবশ্য বলছেন, তিনি সাধারণ কর্মী হিসেবে তৃণমূলে কাজ করে যাবেন। সত্যি কি তাই হবে? উত্তর দেবে ভবিষ্যৎ।