School: চাঁদা দিতে পারেননি হেডমাস্টার, ক্লাবের ছেলেরা এসে উঠিয়ে দিল স্কুল!
Purulia: স্থানীয় তৃণমূলের কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন পৌরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ক্লাবের সদস্যদের কোনও দোষ দেখতে পারছেন না। তিনি বলেন, "এর আগে কখনো স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে কোনও সমস্যা হয়নি।

পুরুলিয়া: স্থায়ী ক্লাবের জন্য ঘর আছে। তবে স্কুলের জন্য নেই! না, এই কথা শুধু টিভি ৯ বাংলা বলছে না। এই ঘটনা ঘটেছে পুরুলিয়ায়। সেখানে ক্লাবের চাঁদার জুলুমের জন্য বন্ধ করে দিতে হল স্কুল। বদলাতে হল ঠিকানা। ক্লাব ঘরের স্থায়ী ঠিকানা হলেও, স্থায়ী স্কুল ভবনের জন্য করা হল না কোনও ব্যবস্থা।
পুরুলিয়ার ঝালদা পৌরসভার ৩নম্বর ওয়ার্ডের ‘গড়কুলি প্রাথমিক বিদ্যালয়’। বর্তমানে এই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৪১। স্কুলে একজন শিক্ষিক ও একজন শিক্ষিকা রয়েছেন। বিদ্যালয়ের নিজস্ব কোনও ভবন নেই। দীর্ঘদিন ধরেই কখনো গাছের তলায়,কখনো বা রাজবাড়ির খামারবাড়িতে চলতো স্কুল। এরপর ২০০০ সাল থেকে পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দ্বিতল কমিউনিটি হলের উদ্বোধন হয়।
গত পাঁচ বছর ধরে নিচের তলায় স্কুলটি চলতে থাকে। সেই কমিউনিটি হলে একটি ঘরে স্থানীয় একটি ক্লাবকে ঘর দেওয়া হয়। সেই ক্লাবের সঙ্গেই প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকের চাঁদা নিয়ে সমস্যা শুরু হয় বলে অভিযোগ। প্রধান শিক্ষকের কাছে সরস্বতী পুজোর চাঁদা দাবি করে ক্লাবের সদস্যরা। চাঁদা না দিতে পাড়ায় স্কুল সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন ওই সদস্যরা বলে অভিযোগ। বিভিন্ন জায়গায় জানিয়েও কোনও সুরাহা না হওয়ায় অবর বিদ্যালয়ের নির্দেশে স্কুলটি সরিয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য হন। গত শুক্রবার থেকেই স্কুলের ঠিকানা বদলে যায়। ঝালদা ৩নং চক্রের অবর প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরে। সেখানেই শিশুদের জন্য রান্না হয় মিড ডে মিল।
স্থানীয় তৃণমূলের কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন পৌরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ক্লাবের সদস্যদের কোনও দোষ দেখতে পারছেন না। তিনি বলেন, “এর আগে কখনো স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে কোনও সমস্যা হয়নি। এই শিক্ষক আসার পরেই ঝামেলা শুরু হয়।” তাঁর এও প্রশ্ন, উনি কেন স্কুলে সরস্বতী পুজো করেননি? শীলা বলেন, “ক্লাবের সরস্বতী পূজোর চাঁদা দিয়ে দিলেই কোনও সমস্যা হতো না। আমি ক্লাবের ছেলেদের মোটা টাকা চাঁদা দিয়ে থাকি। আমার পাড়ার পুজো,টিচার শুধু আইন নিয়েই পড়ে আছে,আইন দেখাচ্ছে,পাড়ার লোককে বাদ দিলে হয়,পাড়ার ছেলেরাই তো পড়ছে ওখানে। ছেলেদের রাগ স্বাভাবিক,আমিতো টিচারকে দেখিনি এবারে দেখতে হবে।”
ঝালদা পৌরসভার উপ-পৌরপ্রধান বলেন, “শিক্ষকরা এসেছিলেন। তদন্ত করে দেখা হবে কী হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি সমস্যার সমাধান করা হবে।” প্রধান শিক্ষক ফুলচাঁদ মাহাতো বলেন, “দীর্ঘদিন স্কুল চলছে। এখন ক্লাবের ছেলেরা বলছে স্কুল চলতে দেবে না। প্রচুর চাঁদা চাইছে। বলছে চাঁদা দিতে না পারলে খালি করে দেন।” ক্লাব সদস্য উত্তম কয়েল বলেন, “এখানে ক্লাব আছে। স্কুল নয় কোনও। আগে তো মাঠেই হত। আমরাই বলেছিলাম কমিউনিটি হলে এসে স্কুল চলুক। আর সরস্বতী পুজোর চাঁদা চেয়েছি। কিন্তু জোর-জবরদস্তি করা হয়নি। আগের মাস্টারের সঙ্গে কোনও ঝামেলা হয়নি। অথচ এই মাস্টারের সঙ্গে যতগণ্ডগোল।” ঝালদার অবর বিদ্যালয় পারিদর্শক সিদ্ধার্থ মাহাতো বলেন, “স্কুল কোথায় চলত সেইটাই জানি না। কিন্তু ক্লাব আছে। শুনেছি চাঁদা নিয়ে গণ্ডগোল। তাই বাধ্য হয়ে মাস্টারমশাইকে সব বের করে নিয়ে যেতে হয়েছে।“





