Primary School: ক্লাসরুম নয়, এটাই একটা আস্ত স্কুল! শিক্ষক ২, পড়ুয়া ৬

নামে বিদ্যালয় হলেও এই স্কুলের নিজস্ব কোনও ভবনই নেই। প্রাথমিক বিদ্যালয়টি চলছে একটি কমিউনিটি হলে।

Primary School: ক্লাসরুম নয়, এটাই একটা আস্ত স্কুল! শিক্ষক ২, পড়ুয়া ৬
ঝালদা শহরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছবি (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 25, 2023 | 9:36 AM

পুরুলিয়া: শহরের মধ্যেই রয়েছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। রয়েছেন শিক্ষকও। কিন্তু দেখা মিলবে না পড়ুয়ার। এমনই ছবি দেখা যাবে পুরুলিয়ার ঝালদা স্টেশন পাড়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। একটি ঘরে দুই শিক্ষক শিক্ষিকা বসে রয়েছেন, তাঁদের ঘিরে রয়েছে মাত্র ছ জন ছাত্রছাত্রী। তৃতীয় শ্রেণিতে কোনও পড়ুয়াই নেই। এর মধ্যে আবার কোনও পড়ুয়া স্কুলে গরহাজির হলে সংখ্যাটা আরও কমে যায়। এমনও হয় দুজন পড়ুয়াকে নিয়েই ক্লাস করাতে হয় বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শ্যামলেন্দু ভট্টাচার্য ও সহশিক্ষিকা পূজা কুইরিকে।

এই ছ জন পড়ুয়ার মধ্যে এক জন প্রি প্রাইমারিতে পড়ে, প্রথম শ্রেণিতে এক জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৩ জন ও চতুর্থ শ্রেণিতে এক জন পড়ুয়া রয়েছে। নামে বিদ্যালয় হলেও এই স্কুলের নিজস্ব কোনও ভবনই নেই। প্রাথমিক বিদ্যালয়টি চলছে একটি কমিউনিটি হলে। এখানেই নেই শিশুদের জন্য কোনও শৌচাগার, নেই মিড ডে মিল রান্নার ব্যবস্থাও।

তবে এই ছ জন পড়ুয়ার জন্য মিড ডে মিল চালু রেখেছেন শিক্ষকেরা। একজন স্বনির্ভর দলের মহিলা নিজের বাড়ি থেকেই রান্না করে নিয়ে আসেন। সেটাই দেওয়া হয় শিশুদের। অথচ এই স্কুল থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে রয়েছে শিক্ষা দফতরের ঝালদা ৩ নম্বর চক্রের দফতর।

নিজের স্কুলের কথা বলতে গিয়ে খানিকটা লজ্জাতেই পড়ে যান ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শ্যামলেন্দু ভট্টাচার্য। তাঁর অনুমান, স্কুলের সামগ্রিক অবস্থার জন্যই পড়ুয়া পাওয়া যায় না। একটা আলমারি পর্যন্ত না থাকায় স্কুলের হাজিরা খাতা সহ অন্যান্য় সামগ্রী প্রতিদিনই তাঁকে বাড়ি থেকে বয়ে নিয়ে যেতে হয় স্কুলে। ব্ল্যাক বোর্ড না থাকার জন্য স্লেটে লিখে দেখান পড়ুয়াদের।

শিক্ষিকা পূজা কুইরি বলেন, “শৌচাগার না থাকা যে কতটা সমস্যার, তা প্রতিনিয়ত বুঝতে পারি এখানে। ক্ষুদে পড়ুয়ারাও জানায় স্কুলের নিজস্ব ভবন না থাকার জন্য সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের। স্থানীয় বাসিন্দা অমিত কুমার সেন বলেন, দুজন শিক্ষক রয়েছেন। আর কিছু নেই এখানে। সন্তানদের কে পাঠাবে? অথচ স্কুলের নামে জমি রয়েছে। আমরা চাই ওই জমিতে স্কুল তৈরি করে উপযুক্ত একটা শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করুক সরকার।

পুরুলিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি রাজীব লোচন সোরেন বলেন, ঝালদা স্টেশন পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমস্যা খতিয়ে দেখা হবে। শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগের ক্ষেত্রে সামঞ্জস্য আনার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানান তিনি। স্কুলের সমস্যা সমাধানে সচেষ্ট হওয়ার কথা বলেছেন ঝালদার পুর প্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায়ও। তবে কতদিনে সেটা বাস্তবায়িত হয় সেটাই দেখার।