হাতে দা-হাতুড়ি, পরনে উর্দি, সুন্দরবনের বেহাল রাস্তা সারাইয়ে নামল পুলিশ!

Sundarban: স্তার মাঝেমাঝেই প্রচুর খানাখন্দ। আর এই সমস্ত অধিকাংশ গাছগাছালি রাস্তার উপর ঝুঁকে পড়ে রাস্তা আটকে দিয়েছে। ফলে যান চলাচলের সমস্যার জেরবার মানুষ। আর সেই রাস্তা সারাইয়ের কাজে নামল পুলিশ! উর্দি পরিহিত পুলিশ রাস্তার খানাখন্দ বোজাচ্ছেন, এ দৃশ্য় দেখে কার্যতই অবাক সাধারণ মানুষ।

হাতে দা-হাতুড়ি, পরনে উর্দি, সুন্দরবনের বেহাল রাস্তা সারাইয়ে নামল পুলিশ!
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 28, 2021 | 7:23 PM

সুন্দরবন: কথায় বলে, যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। এমন প্রবাদবাক্যের প্রতিফলন দেখা গেল প্রত্যন্ত সুন্দরবনের ঝড়খালি কোষ্টাল থানা এলাকায়। এলাকার বিভিন্ন রাস্তার পাশে প্রচুর গাছগাছালি রয়েছে। রাস্তার মাঝেমাঝেই প্রচুর খানাখন্দ। আর এই সমস্ত অধিকাংশ গাছগাছালি রাস্তার উপর ঝুঁকে পড়ে রাস্তা আটকে দিয়েছে। ফলে যান চলাচলের সমস্যার জেরবার মানুষ। আর সেই রাস্তা সারাইয়ের কাজে নামল পুলিশ! উর্দি পরিহিত পুলিশ রাস্তার খানাখন্দ বোজাচ্ছেন, এ দৃশ্য় দেখে কার্যতই অবাক সাধারণ মানুষ।

পরনে খাঁকি উর্দি, হাতে দা-হাতুড়ি। এমন বেশেই রাস্তার ওপর ধরা দিল পুলিশ। আর তাঁরাই করে চলেছেন রাস্তা সারাইয়ের কাজ। সাধারণ মানুষের ও অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে একাধিক রাস্তা। এই সমস্ত গাছগাছালি আর রাস্তার খানাখন্দের জন্য প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনাও হচ্ছে। তাই পুলিশের উর্দি পরে আইন শাসন পালনের পাশাপাশি সমস্ত দিক বিবেক বিবেচনা করে এলাকায় যাতে করে কোনও প্রকার দুর্ঘটনা না হয়, সেই উদ্যোগও গ্রহণ করলেন ঝড়খালি কোষ্টাল থানার আধিকারিক প্রদীপ রায়।

শুধু উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা আলোচনা করে বসে থাকতে রাজি নন প্রদীপবাবু। তাই শনিবার হাতে ধারালো অস্ত্র, দা-হাতুড়ি নিয়ে রাস্তায় নামলেন তাঁরা। সহকর্মীদের নিয়ে প্রদীপবাবু বেরিয়ে পড়লেন ঝড়খালি থানার বিভিন্ন রাস্তায়। শুরু করলেন রাস্তার উপর ঝুঁকে পড়া গাছের ডালপালা কাটার কাজ। সেই সঙ্গে খানাখন্দ বোজানোর কাজও করলেন, যতটা তাঁদের পক্ষে সম্ভব। দেখা গেল, একের পর এক রাস্তার খানাখন্দে ইট দিয়ে ভরাট করছে পুলিশ। দৃশ্যতই অবাক হয়ে যান পথচলতি সাধারণ মানুষ। তবে পুলিশ আধিকারিকরা বলছেন, এইই গাছপালা আর খানাখন্দের জন্য যাতে কোনও যানবাহন দুর্ঘটনার কবলে না পড়ে তাই এই উদ্যোগ নিয়েছেন। এক সঙ্গে সেফ ড্রাইভ, সেফ লাইফ-এর প্রচারও হয়ে গেল তাদের বলে জানাচ্ছে পুলিশ।

এদিন প্রায় চার কিলোমিটারেরও বেশি রাস্তার বিভিন্ন জায়গার খানাখন্দ ইট দিয়ে ভরাট করার পাশাপাশি রাস্তা পাশে ঝুঁকে পড়া গাছগাছালির ডালপালা কেটে পরিষ্কার করেন ঝড়খালি কোষ্টাল থানার পুলিশ কর্মীরা। সুন্দরবনের বুকে রাজপথে নেমে পুলিশের এমন মানবিক উদ্যোগ এই প্রথম। তাই এলাকার বিশিষ্টজনেরা ঝড়খালি কোষ্টাল থানার পুলিশ কর্মীদের সাধুবাদ জানিয়েছে। কিন্তু প্রশাসন কেন এর কোনও দায়িত্ব নেয়নি কেন? কেন উর্দি পরে পুলিশকেই রাস্তা সারাইও করতে হচ্ছে? এমন প্রশ্নও তুলেছেন স্থানীয়রা।

জেলা পরিষদের সদস্যা শঙ্করী মণ্ডল অবশ্য পুলিশের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন,  “পুলিশকে অনেকে ঘৃণার চোখে দেখেন। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, এঁদের মধ্যে কেউ আমাদের বাবা, দাদা, ভাই, বোন। সমাজকে সুরক্ষিত রাখতে, সমাজের শান্তি বজায় রাখতে সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা দিতে পুলিশ কর্মী,রা ২৪ ঘণ্টাই ডিউটি করে চলেছেন। পরিবারের কথা ভুলে, ব্যক্তিগত জীবন ভুলে গিয়ে কাজ করে চলছেন। আর এ দিন যে কাজ তাঁরা করলেন তা সুন্দরবনে প্রথম। তাঁদের ধন্যবাদ জানানোর ভাষা নেই আমার কাছে।” আরও পড়ুন: ৫০-এর বেশি নাবালিকার বিয়ে রুখে নিজে মালা পরালেন ষোড়শীকে! গ্রেফতার আধিকারিক