শুধু সিপিএম নয় জনসাধারণের কমিটিও দায়ী ছিল, নেতাইয়ে বললেন শুভেন্দু
"নেতাই নিয়ে আমি কখনও রাজনীতি করিনি। তবে এ বছর এসে দেখলাম পতাকায় মুড়ে ফেলা হয়েছে। এটা খুবই খারাপ হল। এর জবাব মানুষ দেবে", নেতাইয়ে দাঁড়িয়ে বললেন শুভেন্দু।
ঝাড়গ্রাম: নন্দীগ্রামে শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে মাঝরাতে হাজির হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার সকাল সকাল পৌঁছে গেলেন নেতাইয়েও। গ্রামে ঢুকেই শহিদ-স্মরণ নিয়ে রাজনীতির অভিযোগ তুললেন এই বিজেপি নেতা। তাঁকে বলতে শোনা গেল, “নেতাই নিয়ে আমি কখনও রাজনীতি করিনি। তবে এ বছর এসে দেখলাম পতাকায় মুড়ে ফেলা হয়েছে। এটা খুবই খারাপ হল। এর জবাব মানুষ দেবে।” যদিও দলীয় পতাকা হাতে না থাকলেও এদিন মঞ্চ থেকে শহিদ পরিবারের সদস্যদের পাশে নিয়ে জয় শ্রীরাম, ভারত মাতার জয় স্লোগান দিতে শোনা গিয়েছে শুভেন্দুকে। যে স্লোগান নানা অনুষ্ঠান মঞ্চে বিজেপি নেতা, কর্মীদের মুখে অনবরত শোনা যায়। একইসঙ্গে নাম না করে ছত্রধর মাহাতোকে নিয়েও তোপ দাগলেন শুভেন্দু। তাঁর বিস্ফোরক দাবি, নেতাইয়ের জন্য শুধু সিপিএমই দায়ী ছিল না। জনসাধারণের কমিটির নামে গোটা এলাকায় বিশৃঙ্খলা তৈরি করা হয়েছিল। তার জন্যই এত লোক মারা গিয়েছে। এর জবাবে অবশ্য ছত্রধর মাহাতো বলেন, “প্রাণ বলি দিয়ে সেদিন জনসাধারণের কমিটি প্রতিবাদ করেছিল। পুরো প্রতিবাদই হয়েছিল গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে। শুভেন্দু তো চোরের মতো এসে ঢুকল। ও কী করতে এসেছিল।”
আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে ছুটি পেলেন সৌরভ
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি। লালগড়ের নেতাইয়ে গুলিতে নিহত হন ৯ জন গ্রামবাসী। এই ঘটনাকে সামনে রেখেই তৃণমূল ‘নেতাই দিবস’ পালন করে। এতদিন তৃণমূলের তরফে শুভেন্দুই যেতেন শহিদ-তর্পণে সামিল হতে। কিন্তু এ বছর ছবিটাই বদলে গিয়েছে। শুভেন্দু অধিকারী এখন বিজেপি নেতা। তাই নেতাই দিবসকে সামনে রেখে তৃণমূলও আলাদা কর্মসূচি নিয়েছে। সেখানে যাচ্ছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মদন মিত্ররা। এদিন তৃণমূলের প্রতিনিধিদের নেতাই-সফরকে তীব্র কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেন, “আমি এখানে ১১ বছর ধরে আসি। আর শহর থেকে লোকেরা আসে ভোটের আগে।”
আরও পড়ুন: ‘নন্দীগ্রাম শহিদ দিবসের’ আগের রাতেই শহিদ স্মরণে শুভেন্দু, ‘বোমা ফেটেছে’, দাবি বিজেপির!
তবে নেতাই নিয়ে এদিন সবথেকে বিস্ফোরক দাবিটা শোনা গেল শুভেন্দুর মুখে। নাম না করে ছত্রধর মাহাতোকে আক্রমণ করলেন তিনি। নেতাইয়ে হত্যাকাণ্ডের জন্য শুধু সিপিএম নয়, ছত্রধরের জনসাধারণ কমিটিকেও কাঠগড়ায় তুললেন। এদিন শুভেন্দু বলেন, “আমি এখানে কোনওদিন রাজনীতি করিনি। এখানকার সঙ্গে আমার আত্মিক সম্পর্ক। এই সম্পর্ক যদি কেউ ছেঁড়ার চেষ্টা করে, কেউ যদি গত ১০ বছর জেলে কাটিয়ে এসে ভাবে এগুলি করবে তাহলে ভুল করবে।” এরপরই শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, “নেতাইয়ের ঘটনার জন্য শুধু সিপিএমই দায়ী ছিল না। জনসাধারণের কমিটির নামে গোটা এলাকায় বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে, তার জন্যই এত লোক মারা গিয়েছে। তারা এসে এখন গণতন্ত্রের কথা বলবে, শুভেন্দুকে লালগড়ে আটকে দেব বলবে! ক্ষমতা থাকলে আটকে দেখাক।”