SSC Scam: চাকরি বাতিল তৃণমূল বিধায়কের ভাইঝির

হাইকোর্টের নির্দেশে সম্প্রতি যে ৮৪২ জনের চাকরি বাতিল হয়েছে, সেই তালিকায় নাম এসেছে তৃণমূল বিধায়কের ভাইঝির।

SSC Scam: চাকরি বাতিল তৃণমূল বিধায়কের ভাইঝির
তারকেশ্বর স্কুলের গ্রুপ সি কর্মীর চাকরি বাতিল।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 12, 2023 | 11:19 PM

তারকেশ্বর: হাইকোর্টের নির্দেশে সম্প্রতি যে ৮৪২ জনের চাকরি বাতিল হয়েছে, সেই তালিকায় নাম এসেছে তৃণমূল বিধায়কের ভাইঝির। রণিতা বারিক নামে বিধায়কের ওই ভাইঝি তারকেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের গ্রুপ-সি পদের কর্মী ছিলেন। তাঁর মা-ও তৃণমূলের বিশেষশ পদে রয়েছে। যদিও তালিকায় নাম থাকলেও বিষয়টি নিয়ে রণিতা বা ওই বিধায়ক কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। বলা যায়, মুখ খুলতে নারাজ শাসকদলের কেউই। তবে এই ঘটনায় নিয়োগ দুর্নীতিতে শাসকদলের স্বজনপোষণের অভিযোগ আরও একবার প্রকট হল। এদিকে, একাদশ শ্রেণির পরীক্ষার প্রাক্কালে স্কুলের একমাত্র গ্রুপ সি কর্মীর চাকরি বাতিল হওয়ায় সমস্যায় পড়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষও।

কে এই রণিতা বারিক ? জানা গিয়েছে, হুগলির ধনিয়াখালী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অর্পিতা বারিকের কন্যা রণিতা বারিক। অন্যদিকে, প্রাক্তন মন্ত্রী তথা ধনিয়াখালী বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক অসীমা পাত্রের বোনঝি রণিত বারিক। হাইকোর্টের নির্দেশে গ্রুপ-সি পদের যে ৮৪২ জনের চাকরি বাতিল হয়েছে, SSC-র দেওয়া সেই তালিকায় ৫১০ নম্বরে নাম রয়েছে রণিতা বারিকের। বাতিলের আছে তাঁর।

যদিও রণিতা বারিকের চাকরি পাওয়া থেকে চাকরি বাতিল হওয়ার ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে দাবি তারকেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় মজুমদারের। তিনি বলেন, “২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল মাসে গ্রুপ সি পদে এই স্কুলে কাজে যোগ দিয়েছিলেন রণিতা বারিক। শুক্রবার পর্যন্ত তিনি স্কুলে এসেছিলেন। শনিবার স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, তিনি স্কুলে আসেননি। কাদের চাকরি বাতিল হয়েছে, সে ব্যাপারে আমাদের কাছে এখনও স্কুল উল্লেখ করে কোনও ইমেল আসেনি। উনি অন্তঃসত্ত্বা। তাই স্কুলে আসতে পারছেন না বলে মৌখিকভাবে জানিয়েছিলেন। এর বেশি কিছু জানি না। লিখিতভাবেও কিছু জানাননি।” একইসঙ্গে তিনি বলেন, “স্কুলে গ্রুপ সি-র দুটি পদের একটি ফাঁকা ছিল। আরেকটিতে রণিতা বারিক যোগ দিয়েছিলেন। সামনে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা। তিনি উপস্থিতি সংক্রান্ত, স্কলারশিপ সংক্রান্ত কাজগুলি করতেন। তিনি না এলে বা চাকরি বাতিল এলে পরীক্ষার সময় স্কুলে সমস্যার সৃষ্টি হবে।”

চাকরি বাতিলের ব্যাপারে কী বলছেন রণিতা বারিক? চাকরি বাতিলের তালিকা প্রকাশের পর থেকে কার্যত এলাকাছাড়া রণিতা বারিক। মাস তিনেক আগে তিনি তারকেশ্বরের পদ্মপুকুর এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নেন এবং সেখানেই বসবাস করতেন। শনিবার সকাল থেকে সেই বাড়িতে তাঁকে দেখা যায়নি। বাড়ির গেটে তালা ঝুলছে। এপ্রসঙ্গে বাড়ির মালিক সীমা পাল বলেন, “শুক্রবার সন্ধ্যায় দু-দিনের জন্য বাড়ি যাচ্ছি বলে তিনি চলে গিয়েছেন।” চাকরি বাতিল সম্পর্কিত তথ্য তিনি কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন সীমা পাল।

তবে রণিতা বারিক যে বেআইনিভাবে নিয়োগ হয়েছিলেন, তা এই চাকরি বাতিলের ঘটনাতেই স্পষ্ট। তাহলে কার মাধ্যমে তাঁর নিয়োগ হয়েছিল? যদিও এবিষয়ে রণিতা বারিকের মা এবং মাসির কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। বিধায়ক অসীমা পাত্রকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে এই ঘটনার দায় নিতে নারাজ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। হাইকোর্টের নির্দেশে রণিতা বারিকের চাকরি বাতিল হয়েছে এবং কেউ বেআইনিভাবে নিয়োগ হলে তার দায় দল নেবে না বলে জানিয়েছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে গোটা ঘটনায় কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরা।