বিজেপির পথে এবার শিশির-দিব্যেন্দু? জল্পনা নিজেই উস্কে দিলেন শুভেন্দু
"অধিকারী পরিবার ছিল বলে লোকসভায় তমলুক আর কাঁথি জিতেছে তৃণমূল (TMC)। না হলে দ্বিতীয় হতো। এবার দ্বিতীয়ই হবে।"
“অধিকারী পরিবার ছিল বলে লোকসভায় তমলুক আর কাঁথি জিতেছে তৃণমূল (TMC)। না হলে দ্বিতীয় হতো। এবার দ্বিতীয়ই হবে।” মঙ্গলবার নন্দীগ্রাম থেকে TV9 বাংলা-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এমনই দাবি করলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
দাঁতনে শুভেন্দুর সভার পর পাল্টা সভা করে তৃণমূল কংগ্রেস দাবি করে, অবিভক্ত মেদিনীপুরের ৩৫টি বিধানসভা আসনই জিতবে তারা। এবং রেকর্ড ভোটে জিতবে। তারই উত্তরে এদিন শুভেন্দু বলেন, “লোকসভা ভোটে তো দেখলাম কেমন রেকর্ড করল। ঝাড়গ্রামে বিজেপি জিতেছে। মেদিনীপুর সদরের বিরাট বাঘ-সিংহ মানস ভূঁইয়া (তীর্যক সুরে), হেরে গেছেন। দিলীপ ঘোষ জিতলেন। কেশপুরে রিগিং করে ভারতী ঘোষকে হারিয়েছে। না হলে ওটাও বিজেপি জিততো।”
এই প্রসঙ্গ টেনেই তমলুক ও কাঁথি কেন্দ্রের লোকসভা ভোটের ফলাফলের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তমলুক-কাঁথি কেন জিতেছে? অধিকারীরা ছিল বলে। এবার আর জিতবে না। প্রথম হওয়ার কোনও সুযোগ নেই। দ্বিতীয়ই হতে হবে।” এর অর্থ কি তবে পরিবারের দুই তৃণমূল সাংসদ শিশির ও দিব্যেন্দু অধিকারীও এবার বিজেপি অভিমুখেই যাত্রা করবেন? তা অবশ্য খোলসা করে বললেনি শুভেন্দু।
এদিন নন্দীগ্রাম টেঙ্গুয়া মোড় থেকে নন্দীগ্রাম বাজার পর্যন্ত মিছিল করেন শুভেন্দু। হিন্দু জাগরণ মঞ্চের আয়োজনে মিছিলের শেষে জানকীনাথ মন্দিরে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যও রাখেন। তাঁর বক্তব্যের ছত্রে ছত্রে বারবার শুধু হিন্দুত্ব ও সনাতন ধর্মের কথা উঠে আসে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, গত কয়েক মাসে শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যে এটা স্পষ্ট যে নন্দীগ্রাম ও মেদিনীপুরের হিন্দুত্ব তাসেই বাজিমাত করতে চান তিনি। সে কারণেই বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর নন্দীগ্রাম ঢুকলেন ধর্মীয় মিছিল করে। খোল-করতাল, ‘হরে কৃষ্ণ’ ও ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি দিয়ে নতুন দলের হয়ে যাত্রা শুরু করলেন শুভেন্দু। মিছিলে কর্মী-সমর্থকদের উচ্ছ্বাসও ছিল চোখে পড়ার মতো।
এদিন মিছিল শেষে চেনা সুরে ফের একবার নাম না করে অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন শুভেন্দু। বলেন, ওই তোলাবাজ ভাইপো লোক পাঠিয়ে আমার ছবিতে কালি মাখাচ্ছে। তা করে করুক। ভোটের দিন বুঝিয়ে দেব, নন্দীগ্রামের মানুষ আমার সঙ্গে আছে কি না।”
আরও পড়ুন: অমিতের ‘অন্নদাতা’ গাইলেন, ‘সোনার দিদিকে ছেড়ে দেব না’, খুশি হয়ে উত্তরীয় পরিয়ে দিলেন মমতা
শুধু তাই নয়, ওই মঞ্চ থেকে নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তিনি। ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা বাতিল হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “কেউ কেউ তো শুনেছি সভা ডেকে তার পর পগারপার হয়ে গেছে। বলছে পরে করবো। আমি আজ এখান থেকে জানিয়ে দিলাম, যখনই সভা করুক, তারপর আমি আবার সভা করব। দেখা যাবে।”
এদিনের মঞ্চ শুভেন্দু জানান, ৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রাম বাজারের কাছে রাজনৈতিক সভা করবেন তিনি। দলের কর্মীদের ১ লাখ মানুষের জমায়েত করার টার্গেট বেঁধে দিয়েছেন তিনি। সেদিন নন্দীগ্রামের সভা থেকে তিনি কী বার্তা দেন, সে দিকেই তাকিয়ে এলাকার মানুষ।
আরও পড়ুন: আজও চর্চায় রবীন্দ্রনাথ, সোনার বাংলায় হাত দিলে ‘বুঝে নেওয়ার’ হুঁশিয়ারি মমতার