International Day of Disabled Persons: কোমর থেকে পা পর্যন্ত অকেজো, তা নিয়েও স্বপ্নের উড়ান রায়গঞ্জের মৌমিতার
North Dinajpur: পড়াশোনার পাশাপাশি বাড়িতেই কচিকাচাদের গান শেখান মৌমিতা। মেয়ের এই জীবনযুদ্ধে জয়, মনের কষ্ট ঘুচিয়েছে বাবা মায়ের।
রায়গঞ্জ: মনের জোরের কাছে হার মেনেছে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা। সঙ্গীতের প্রতি অগাধ ভালোবাসাই যেন তার প্রাণ শক্তি। প্রতিবন্ধী মেয়ের লড়াই করে জীবনের উচ্চ শীখরে যাত্রার প্রচেষ্টা মুছেছে বাবা-মায়ের মনের কষ্ট, এভাবেও ঘুরে দাঁড়ানো যায়, তাই যেন আবারো প্রমাণ করলেন রায়গঞ্জের মৌমিতা।
রায়গঞ্জের চণ্ডীতলার একটি ভাড়া বাড়িতে বাবা মা আর ভাইয়ের সঙ্গে থাকেন বছর ২৪-এর মৌমিতা ঠাকুর। দিদির বিয়ে হয়েছে বছর কয়েক আগে। তিন সন্তানদের নিয়ে ভালোই চলছিল টুঙ্গিদিঘির বাসিন্দা পেশায় হোমিওপ্যাথির সরকারি কম্পাউন্ডার ব্রজেন্দ্র বাবুর। ছোট মেয়ে মৌমিতার যখন বয়স মাত্র তিন, সে সময় শিশু মৌমিতার ডানদিকে কোমর ও পায়ে যন্ত্রণা শুরু হয়।
চিকিৎসা করে জানা যায় থাই-এ সিস্ট হয়েছে। শুরু হয় চিকিৎসা। প্রায় ১বছর ধরে নানাভাবে চিকিৎসা চলার পর একদিন হাটাচলাই প্রায় বন্ধ হয়ে যায় তার।
ছোট্ট শিশুকন্যাকে এভাবে চোখের সামনে প্রতিবন্ধী হতে দেখে ভেঙে পড়েন বাবা মা। সমাজে আর পাঁচটা সাধারণ শিশুদের থেকে তাদের মেয়েকে যেন আলাদা চোখে দেখতে শুরু করে অনেকে। ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠতে শুরু করে মৌমিতা। বাবা সঙ্গীতের চর্চা করায় ছেলে-মেয়েদের মধ্যেও তার প্রকাশ দেখতে পান ব্রজেন্দ্র ও তাঁর স্ত্রী।
বড় মেয়ের মত ছোটো মেয়েও সব প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্র সঙ্গীত নিয়ে স্নাতোকোত্তর করছে। কোমর থেকে পা পর্যন্ত অনেকটাই অকেজো থাকায় কোমর ঝুকিয়ে বেঁকে চলতে হয় তাঁকে। অথচ ঈশ্বর তাকে দান করেছেন সুমধুর কন্ঠ। তাঁর সুরেলা কন্ঠের গানে মুগ্ধ হন সকলেই। একাগ্রতা আর নিষ্ঠার ভরে মানষিক বলে বলীয়ান মৌমিতার কাছে হার মেনেছে শারিরিক প্রতিবন্ধকতা।
মিউজিক নিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি বাড়িতেই কচিকাচাদের গান শেখান মৌমিতা। মেয়ের এই জীবনযুদ্ধে জয়, মনের কষ্ট ঘুচিয়েছে বাবা মায়ের। মৌমিতা যেন সাহস যোগাচ্ছে সকলকে। তার কথায়, “আমরাই শক্তি, আমরাই ব্যাটারি।” এদিকে প্রতিবন্ধী সন্তানদের অবহেলায় রেখে তাদের নিয়ে মানষিক অবসাদ নয়, বরং ভালোবাসা আর মানষিক জোরে সব কষ্ট-বেদনা প্রশমন সম্ভব বলে বার্তা দিলেন মৌমিতার বাবা মাও।
সমাজের প্রতি মৌমিতার বার্তা, প্রতিবন্ধী দিবসে প্রতিবন্ধীদের আলাদা নজরে না দেখে উৎসাহ জোগানোই হোক উদ্দেশ্য। যা সমাজের পাথেয় হয়ে থাকবে।
আরও পড়ুন: Green Hydrogen Car: এবার জ্বালানির খরচ হবে ৬০ টাকা লিটার, জানালেন কেন্দ্রীয় পরিবহণমন্ত্রী