DA Refusal: শিলিগুড়ির পর হেমতাবাদ, ৩% ডিএ প্রত্যাখ্যানের আর্জি শিক্ষকের
School Teacher: হেমতাবাদ ব্লকের ধলগাঁও জুনিয়ার হাইস্কুলের শিক্ষক পার্থ প্রতিম চৌধুরী তিন শতাংশ মহার্ঘ ভাতা প্রত্যাখান করলেন। পার্থবাবুর অভিযোগ, বর্তমান বাজার মূল্যে তিন শতাংশ মহার্ঘভাতা খুবই কম।
হেমতাবাদ: সরকারি কর্মীদের বিক্ষোভের মধ্যে তিন শতাংশ ডিএ ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। যদিও প্রাপ্যের তুলনায় কম মহার্ঘভাতা (ডিএ) ঘোষণা সন্তুষ্ট করতে পারেনি রাজ্য সরকারি কর্মীদের। যা নিয়ে জেলায় জেলায় চলছে প্রতিবাদ। শিক্ষকরাও এই প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন। রাজ্যের ঘোষণা করা তিন শতাংশ ডিএ প্রত্যাখ্যান করে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন শিক্ষকদের একাংশ। শিলিগুড়ির পর উত্তর দিনাজপুরের এক সরকারি স্কুলের শিক্ষক ওই তিন শতাংশ ডিএ ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। তা প্রত্যাহার করতে তিনি চিঠি দিয়েছেন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে। তিনি শিক্ষক উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ ব্লকের ধলগাঁও জুনিয়ার হাইস্কুলের শিক্ষক। তাঁর নাম পার্থ প্রতিম চৌধুরী। এই আবেদন ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলা জুড়ে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক জানিয়েছেন সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হেমতাবাদ ব্লকের ধলগাঁও জুনিয়ার হাইস্কুলের শিক্ষক পার্থ প্রতিম চৌধুরী তিন শতাংশ মহার্ঘ ভাতা প্রত্যাখান করলেন। পার্থবাবুর অভিযোগ, বর্তমান বাজার মূল্যে তিন শতাংশ মহার্ঘভাতা খুবই কম। সেই কারণেই অন্য কর্মচারিরা আন্দোলন করছেন। তিনি এই মহার্ঘভাতা প্রত্যাখান করে প্রতীকী প্রতিবাদ করলেন। সরকারের কাছে তার প্রতিবাদ পৌছানোর জন্যই তাঁর এই সিদ্ধান্ত। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই প্রত্যাখানপত্র পৌছেছে জেলা প্রশাসনের কাছে। ওই শিক্ষক বলেছেন, “তিন শতাংশ ডিএ খুবই কম। এরই প্রতীকী প্রতিবাদ করেছি আমি।”
বিষয়টি নিয়ে ওই শিক্ষকের সমর্থনে সরব হয়েছে বিরোধী দলের শিক্ষক সংগঠনের নেতৃত্ব। এ নিয়ে বঙ্গীয় শিক্ষক শিক্ষাকর্মী সংগঠনের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বাপি প্রামাণিক বলেছেন, “ওই শিক্ষকের ডিএ প্রত্যাখানের বিষয়টি সংগঠনের নজরে এসেছে। সংগঠনেরক তরফে আমরা এখনও এ রকম কোন পদক্ষেপ করিনি। তবে ওই শিক্ষক ব্যক্তিগত ভাবে প্রতিবাদ করেছেন। আমরা স্যালুট জানাই।” এ বিষয়ে তৃণমুল শিক্ষক সংগঠনের জেলা সভাপতি প্রসুন দত্ত বলেছেন, “উনি ডিএ নেবেন না, এটা তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। সরকারের যে কর্মযজ্ঞ মুখ্যমন্ত্রী চালাচ্ছেন, তাকে বিঘ্নিত হতে দেওয়া যায় না। এই দিকে টাকা না দিতে পারলেও সরকার কোন খাতে কী কাজ করছে, তা দেখা উচিত।”
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দুলাল সরকার এ বিষয়ে বলেছেন, “ডিএ কর্মীদের প্রাপ্ত। সরকার ঘোষণা করেছেন। তা সকলের মেনে চলা উচিত। ওই শিক্ষক নেবেন না বলেছেন। সরকারের ঘোষণা মতো ডিএ জুড়ে যে মাইনে হবে তা দেওয়া হবে। এ বার সেটা উনি ফিরিয়ে দেবেন কি না, উনি জানেন। এ ব্যাপারে সরকারি নির্দেশ মতে কাজ হবে।”
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ৩৯ শতাংশ মহার্ঘভাতা বকেয়া রয়েছে। সেই বকেয়া মহার্ঘভাতা আদায়ে কর্মচারি সংগঠন সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছে। হাইকোর্ট সরকারি কর্মীদের পক্ষে রায় দিলেও হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করে। বর্তমানে সেই মামলা সুপ্রিমকোর্টে বিচারাধীন। রাজ্য সরকারি কর্মচারিরা দাবি আদায়ে আইনের দ্বারস্থ হওয়ার পাশাপাশি কলকাতায় লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছেন। কিন্তু কর্মচারিদের ক্ষোভকে চাপা দিতে ২০২২-২৩ রাজ্য বাজেটে তিন শতাংশ ডিএ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারি এই ঘোষণা কার্যকর হবে বলে জানানো হলেও খুশি নন সরকারি কর্মীরা। এর বিরুদ্ধে নানাভাবে সরব হতে দেখা গেছে স্কুল শিক্ষক থেকে শুরু করে সরকারি কর্মীদের।