Snake Bite: সাপের কামড়ের পর আড়াই ঘণ্টা চলল ঝাড়-ফুঁক, খোদ মন্ত্রীর পরিবারেও এমন কুসংস্কার?
Snake Bite: শকুন্তলা দেবী নিজেও একজন প্রধান শিক্ষিকা। সাপের কামড়ের পর কেন তিনি প্রথমেই হাসপাতালে গেলেন না? উঠছে প্রশ্ন।
রায়গঞ্জ : সমাজ যতই এগিয়ে যাক, শিক্ষার আলো প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছলেও কুসংস্কারের বীজ যে এখনও সমাজের আনাচে কানাচে রয়ে গিয়েছে রায়গঞ্জের সাম্প্রতিক ঘটনা তারই প্রমাণ। মানুষের বাঁচা-মরার উর্ধ্বে প্রাধান্য পায় বিশ্বাস। তাই একজন প্রধান শিক্ষিকাও হাসপাতালের থেকে বেশি ভরসা রাখেন ওঝার ওপরেই। তিনি শুধু প্রধান শিক্ষিকাই নন, রাজ্যের মন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মণের নিকট আত্মীয়। সাপের কামড় খাওয়ার পর প্রতিবেশীদের পরামর্শে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল ওঝার কাছে। আড়াই ঘণ্টা ধরে চলল ঝাড়-ফুঁক। হাসপাতালে যখন আনা হয়, ততক্ষণে জ্ঞান হারাতে বসেছেন ওই মহিলা।
উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের ঘটনা। বুধবার সকালে রায়গঞ্জের রুনিয়ার বাসিন্দা শকুন্তলা বর্মণ সাপের কামড়ে আক্রান্ত হন। তিনি সম্পর্কে সত্যজিৎ বর্মণের মামী হন বলেই জানা গিয়েছে। এ দিন ভোর ৪ টে নাগাদ তাঁর পায়ে সাপ ছোবল মারে। এরপর তিনি তাঁর ছেলেকে নিয়ে যান ওক ওঝার কাছে। শকুন্তলা বর্মণের স্বামী জানিয়েছেন, বাড়ি থেকে বেশ খানিকটা দূরে ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁর স্ত্রীকে। সেখানে আড়াই ঘণ্টা ধরে ঝাঁড়-ফুঁক করা হয়। এরপর তাঁর স্ত্রীর যখন চোখ প্রায় বন্ধ হয়ে আসছে, অসুস্থতা বাড়ছে তখনও ওঝা পরামর্শ দেন, তাঁর ওপরেই আস্থা রাখতে। অবশেষে সকাল ১১ টা নাগাদ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সত্যজিত বর্মণের গাড়িতেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে।
তাঁর স্বামীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি মেনে নেন যে এটা একটা কুসংস্কার। তবু প্রতিবেশীদের কথায় গুরুত্ব দিয়েই স্ত্রীকে ওঝার কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন বলে দাবি করেন তিনি। শকুন্তলা দেবীর মেয়ে অবশ্য এতকিছুর পরও বলছেন, ওঝার কাছে রাখলে হয়ত সেরে উঠতেন মা।
শকুন্তলা দেবী রায়গঞ্জের জগদীশপুর কদমতলা শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের প্রধান শিক্ষিকা। রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর মামী, নিজে একজন শিক্ষিকা হয়েও কেন এ ভাবে ওঝার কাছে গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন শকুন্তলা দেবী।