Johanny Rosario: কাবুলের মাটিতেই ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় দেহ, ৯/১১ তেই কফিনবন্দি হয়ে বাড়ি ফিরলেন ২৫ বছরের জোহানি
Johanny Rosario: গত মাসে কাবুল বিমানবন্দরে ভয়াবহ আত্মঘাতী বিস্ফোরণে যে সব মার্কিন সেনার মৃত্যু হয়, জোহানি রোজারিও তাঁদের মধ্যেই একজন।
ওয়াশিংটন: গত দুই দশক ধরে আফগানিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে মার্কিন সেনা। প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের অনেকেই। এমনকি কাবুল ছাড়তে যখন আর হাতে গোনা কয়েকদিন বাকি, তখনও রেহাই মেলেনি। ভয়াবহ আত্মঘাতী বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ১৩ মার্কিন সৈনিকের। তাঁদের মধ্যেই অন্যতম জোহানি রোজারিও (Johanny Rosario)। কাবুল বিমানবন্দরের অ্যাবে গেটের কাছে যখন আফগানদের পরীক্ষা-নিরিক্ষার কাজে নিযুক্ত ছিলেন জোহানি, সেই সময়ই ঘটে ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণ। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি। শনিবার অভিশপ্ত ১১ সেপ্টেম্বরের দিনেই আমেরিকা ফিরল জোহানির দেহ। বাড়িতে ফেরানো হল তাঁর উর্দি। তাঁকে শেষ সম্মান জানাতে বেরিয়ে আসেন কয়েক’শ মানুষ। তাঁরা বলেন, ‘জোহানি রোজারিও আমাদের হিরো।’
এই ৯/১১ তথা ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসবাদী হামলার জেরেই আফগানিস্তানের মাটিতে মার্কিন সেনা লড়াই চালিয়েছে গত ২০ বছর ধরে। আর সেই ১১ সেপ্টেম্বরেই ফিরল মার্কিন নৌবাহিনীর সদস্য জোহানির দেহ। কালো কফিনে বন্দি করে তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় লরেন্স মাসের ফিউনারাল হোমে। নৌবাহিনীর সদস্যরাই নিয়ে যান তাঁর কফিন।
কয়েক ঘণ্টা ধরে জোহানিকে সম্মান জানাতে অপেক্ষা করছিলেন মেরি বেথ চোজে। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ১২ বছরের ছেলে গাভিন। মেরির বড় ছেলেও নৌবাহিনীতে কর্মরত। তিনি এ দিন বলেন, ‘সার্জেন্ট রোজারিওর আত্মত্যাগ ও সাহসিকতা মনে রাখভে দেশ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পর থেকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইতে নেমে মৃত্যু হয়েছে ৭১০০ মার্কিন সেনার। এর মধ্যে ২৫০০ জনেরই মৃত্যু হয়েছে আফগানিস্তানের মাটিতে।
২০০১ সালের সেই হামলার সময় জোহানির বয়স ছিল মাত্র ৫। পরে পড়াশোনা শেষ করে সে যোগ দিয়েছিল মার্কিন নৌবাহিনীতে। তত দিনে আফগানিস্তানের মাটিতে পুরোদমে ঘাঁটি গেড়েছে আমেরিকা। ২০১৪-তে স্নাতকের পাঠ শেষ করে নৌবাহিনীর ফিফথ মেরিন এক্সপিডিশনারি ব্রিগেডে যোগ দেন জোহানি রোজারিও। সেনাবাহিনীর সাপ্লাই চিফ হিসেবে আফগানিস্তানে কর্তব্যরত ছিলেন তিনি। এ ছাড়া আফগান মহিলাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলার দায়িত্বও ছিল তাঁর। আফগান মহিলারা অনেক সময় অপরিচিত পুরুষের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হতেন না। তাই তাঁদের সঙ্গে কথা বলার অন্যতম দায়িত্ব ছিল জোহানির। মৃত্যুর মাস তিনেক আগে মার্কিন সেনার তরফে এক বিশেষ সম্মান পেয়েছিলেন তিনি।
এ দিন তাঁর শেষকৃত্যের সময় হাজির হতে দেখা যায় তাঁর স্কুলের বন্ধুদেরও। লরেন্স হাইস্কুলে পড়াশোনা করতেন তিনি। শনিবার তাঁর সেই স্কুলের বন্ধুদের দেখা যায় কালো মাস্ক পরে হাজির হতে। রোজারিও যে দেশের জন্য কাজ করতে চাইতেন, সে কথা জানান তাঁর বন্ধুরা। জোহানির একটি ছবি ফ্রেমে বাঁধিয়ে ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়েছিলেন এক মহিলা। তাঁর চোখে জল। কথা বলার ভাষা নেই। তিনি বলেন, ‘আমি কথা বলতে পারছি না। শুধু চোখে জল আসছে।
আরও পড়ুন: Afghan Situation: ইসলামাবাদে বৈঠকে হাজির চিন-রাশিয়া, কাবুল থেকে ফিরে কী বার্তা দিলেন আইএসআই প্রধান?