Food crisis: বিশ্বজুড়ে খাদ্য সঙ্কটে প্রায় সাড়ে ৩৪ কোটি মানুষ, আফ্রিকায় দুর্ভিক্ষের ছায়া সবথেকে গাঢ়, উত্তরণের পথ কোথায়?
Food crisis: উত্তর ভারত ও অন্যত্র কম বৃষ্টির কারণে ধানের ফলন ভাল হয়নি। কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রক বলছে, সারা দেশে চালের দাম ১০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। তাই বাসমতী ছাড়া সমস্ত চালের রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
কলকাতা: খাবারের চড়া দাম। খাদ্য সঙ্কটে (Food Crisis) ভুগছে বিশ্বের বহু দেশ। আমার-আপনার হয়তো এখনও এক থালায় খাবার ভাগ করে খাওয়ার অবস্থা হয়নি। কিন্তু, পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে তাতে চিন্তা তো ক্রমেই বাড়ছে। শুধু যুদ্ধ নয়, আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় চাষের ক্ষতি সীমানা মানছে না। বিপদের মধ্যেই ডেকে আনছে আরও বিপদ। আফ্রিকার (Africa) দেশগুলিতে ইতিমধ্যেই দেখা দিয়েছে খাদ্য সঙ্কট। উন্নত দেশগুলিও খাবারের দাম বাড়া থেকে রেহাই পাচ্ছে না। গমের আকাল গোটা বিশ্বজুড়ে। রাশিয়া ও বেলারুশ মিলে বিশ্বের ৪০ শতাংশ পটাশিয়াম সারের জোগান দেয়। যুদ্ধ লাগায় থমকে গিয়েছে তাঁদের সার রফতানি। অন্যদিকে আমেরিকা, ইউরোপে প্রবল গরমে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সবজি। প্রবল গরমে গরু দুধ দেওয়া কমিয়ে দিয়েছে। ইতালি বলছে তাঁদের দেশে এবারে চাষের ক্ষতি ভেঙে দেবে সমস্ত পুরনো রেকর্ড। দেশের খাদ্য সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে খাদ্য শস্য় রফতানি লাগাম দিচ্ছে বহু দেশ। তাতে সমস্যা আরও বাড়ছে।
উত্তর ভারত ও অন্যত্র কম বৃষ্টির কারণে ধানের ফলন ভাল হয়নি। কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রক বলছে, সারা দেশে চালের দাম ১০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। তাই বাসমতী ছাড়া সমস্ত চালের রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এদিকে এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যে আতঙ্কে চাল মজুক করে রাখার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। মুদির দোকানগুলির বাইরে দেখা যাচ্ছে চালের জন্য লম্বা লাইন। সূত্রের খবর, আমেরিকায় বিভিন্ন শহরে বর্তমানে এক কিলো চালের দাম পড়ছে ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় আড়াইশো টাকা। অনেক জায়গায় বলে দেওয়া হচ্ছে এক লপ্তে ৯ কেজির বেশি চাল মিলবে না।
সম্প্রতি নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার অধিবেশনে ৭৫টি দেশের ২৩৮টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের জমা দেওয়া রিপোর্ট বলছে বিশ্বজুড়ে প্রতি ৪ সেকেন্ডে না খেতে পেয়ে ১ জন মানুষ মারা যাচ্ছেন। খাদ্য সঙ্কটে ভুগছেন দুনিয়ার প্রায় সাড়ে ৩৪ কোটি মানুষ। ৪৫টি দেশের আরও ৫ কোটি মানুষ খাদ্যভাবের কিনারে দাঁড়িয়ে। ২০১৯ সালের তুলনায় এখন খাদ্য সঙ্কটে ভুগতে থাকা মানুষের সংখ্যা এখন দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। আফ্রিকা মহাদেশে দুর্ভিক্ষের ছায়া সবথেকে গাঢ়। সোমালিয়া, ইথিয়োপিয়া, নাইজিরিয়া, ইয়ামেনে লক্ষ লক্ষ মানুষ না খেতে মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মুদ্রস্ফীতি, সামাজিক বৈষম্য, লিঙ্গ বৈষম্য, সম্পদের অসম বণ্টন, সরকার নীতির ব্যর্থতা, এসবই বিশ্বজুড়ে নিরন্ন মানুষের সংখ্যা বাড়াচ্ছে। সমস্যা সমাধানে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি সব দেশকে একজোট হওয়ার ডাক দিয়েছে। এখন দেখার সেই ডাকে সাড়া দেন কিনা বিশ্ব নেতারা।