Russia: লিঙ্গ পরিবর্তন নিষিদ্ধ, পুতিনের দেশে আরও কোনঠাসা LGBTQ+
Russia bans gender-change: লিঙ্গ পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে যে কোনও চিকিত্সা নিষিদ্ধ। সেইসঙ্গে সরকারি নথি এবং রেকর্ডেও কেউ তাঁর লিঙ্গ পরিবর্তন করতে পারবেন না। শুধুমাত্র, জন্মগত কোনও অসঙ্গতিগুলির ক্ষেত্রে চিকিৎসাগত হস্তক্ষেপ করা যাবে।
মস্কো: রাশিয়ায় নিষিদ্ধ হল লিঙ্গ পরিবর্তন। একইসঙ্গে, লিঙ্গ নিশ্চিতকরণের সমস্ত পদ্ধতিকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার এই বিষয়ে এক নতুন আইন স্বাক্ষর করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইতিমধ্যেই রাশিয়ার ক্রমশ কোনঠাসা হয়ে পড়ছিল সেই দেশের এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়। এই নয়া আইন তাদের অধিকারের আন্দোলনের জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। রুশ সংসদের উভয় কক্ষেই এই বিলটি সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, লিঙ্গ পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে যে কোনও চিকিত্সা নিষিদ্ধ। সেইসঙ্গে সরকারি নথি এবং রেকর্ডেও কেউ তাঁর লিঙ্গ পরিবর্তন করতে পারবেন না। শুধুমাত্র, জন্মগত কোনও অসঙ্গতিগুলির ক্ষেত্রে চিকিৎসাগত হস্তক্ষেপ করা যাবে।
এখানেই শেষ নয়। রূপান্তরকামীদের বিবাহ এবং তৃতীয় লিঙ্গের দম্পতিদের সন্তান দত্তক গ্রহণও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিল অনুযায়ী, লিঙ্গ পরিবর্তনকারীদের বিবাহ নিষিদ্ধ। ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিরা পালক পিতা-মাতাও হতে পারবেন না। ক্রেমলিন জানিয়েছে, রাশিয়ার ‘ঐতিহ্যগত মূল্যবোধ’ রক্ষা করতেই এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল। রুশ আইনপ্রণেতাদের মতে, এই আইনটি রাশিয়াকে পাশ্চাত্যের ‘পরিবার-বিরোধী মতাদর্শ’ থেকে রক্ষা করবে। কয়েকজন রুশ সাংসদ তো এক কদম এগিয়ে লিঙ্গ পরিবর্তন ‘স্যাটানিজম’ বা ‘শয়তানবাদে’র চর্চা বলেছেন।
প্রসঙ্গত, রাশিয়ায় এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের উপর দমন-পিড়ন শুরু হয়েছিল প্রায় এক দশক আগে। সেই প্রথম রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন রাশিয়ার ‘ঐতিহ্যগত পারিবারিক মূল্যবোধ’ ফিরিয়ে আনার উপর মনোযোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। সমর্থন পেয়েছিলেন রুশ অর্থোডক্স চার্চেরও। ২০১৩ সালেই ক্রেমলিন এক নয়া আইন এনেছিল। সেই আইন অপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ‘অপ্রথাগত যৌন সম্পর্ক’ নিষিদ্ধ করেছিল। ২০২০-তে সাংবিধানিক সংস্কার করেছিলেন পুতিন। সমকামী বিবাহকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। গত বছর পুতিন আরও এক বিল স্বাক্ষর করেছিলেন। সেই বিল প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেও ‘অপ্রথাগত যৌন সম্পর্ক’ নিষিদ্ধ করেছিল।
রাশিয়ায় এতদিন লিঙ্গ পরিবর্তনের অস্ত্রোপচার না করিয়েও, কেউ সরকারি নথিতে নিজেকে অন্য লিঙ্গের ব্যক্তি বলে দাবি করতে পারতেন। অর্থাৎ, কোনও রুশ পুরুষ যদি নিজেকে মহিলা বলে মনে করতেন, তাহলে শারীরিকভাবে তিনি লিঙ্গ পরিবর্তন না করেও, সরকারি নথিতে নিজেকে মহিলা বলে ঘোষণা করতে পারতেন। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে, যাতে যুদ্ধে যেতে না হয়, বহু রুশ পুরুষই নিজেকে মহিলা বলে ঘোষণা করতে শুরু করেছিলেন। অনেকে বলছেন, এই প্রবণতা ঠেকাতেই, নয়া আইনটি নিয়ে এল রুশ সরকার।