ভিডিয়ো: রক্তগঙ্গা বইছে কাবুলে, বিমানবন্দর দখল নেওয়ার চেষ্টা তালিবানের, সংঘর্ষে মৃত কমপক্ষে ৫
সকালে জানা গিয়েছিল যে, কাতারে কাতারে মানুষ কাবুল বিমানবন্দরের ভিতরে ছোটাছুটি করছেন। পিছন থেকে গুলি চলার শব্দও শোনা যায়।
কাবুল: সত্যি হচ্ছে আশঙ্কাই। রক্তগঙ্গা বইতে শুরু করেছে আফগানিস্তানে। কাবুল বিমানবন্দরে চরম বিশৃঙ্খলা ও মার্কিন সেনার সঙ্গে তালিবানিদের সংঘর্ষে কমপক্ষে পাঁচজনের মৃত্য়ু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
সকালে জানা গিয়েছিল যে, কাতারে কাতারে মানুষ কাবুল বিমানবন্দরের ভিতরে ছোটাছুটি করছেন। পিছন থেকে গুলি চলার শব্দও শোনা যায়। পরে জানা যায়, নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে কাবুলবাসী যখন বিমানমবন্দরে পালিয়ে আসছিল, তখন তাদের পিছু নেয় তালিবান মুজাহিদ্দিনের সদস্যরা। কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্ব আপাতত নিজের হাতে তুলে নিয়েছে মার্কিন সেনা। ফলে তালিবানদের সঙ্গে গুলির লড়াই শুরু হয় তাদের।
#Breaking: At least 5 people killed inside Kabul Airport, say witnesses: Reuters. https://t.co/oUHLCG5elP
— Ahmer Khan (@ahmermkhan) August 16, 2021
তবে গুলির লড়াইয়ে নাকি পদপিষ্ট হয়ে বিমানবন্দরে ওই ব্যক্তিদের মৃত্য়ু হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি। বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, হাজারো আফগানবাসী বিমানের ওঠার সিড়িতে ধাক্কাধাক্কি করছেন, কার্যত ঝুলে রয়েছেন সিড়িতে কেবল বিমানে ঢুকতে পারার আশায়।
This is, perhaps, one of the saddest images I've seen from #Afghanistan. A people who are desperate and abandoned. No aid agencies, no UN, no government. Nothing. pic.twitter.com/LCeDEOR3lR
— Nicola Careem (@NicolaCareem) August 16, 2021
চরম বিশৃঙ্খলার কারণে ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এয়ারস্পেস (Airspace)। আজ থেকে আর কোনও অসামরিক বিমান চলাচল করবে না বলেই জানানো হয়েছে। জারি করা হয়েছে নোটাম (NOTAM) বা “নোটিস টু এয়ারমেন”। সেখানে জানানো হয়েছে, উত্তপ্ত পরিস্থিতির জেরে কাবুলের এয়ারস্পেস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এ দিনই আফগানিস্তানে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধারের জন্য একটি এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান (Air India Flight) যাওয়ার কথা ছিল, সেটিও আপাতত বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। আমেরিকা থেকে ভারতে এয়ার ইন্ডিয়ার যে বিমানগুলি আসার কথা ছিল, তার গতিপথও বদলে দেওয়া হবে আফগান এয়ারস্পেস বন্ধ থাকার কারণে। আফগানিস্তান অসামরিক উড়ান কর্তৃপক্ষের তরফেও জানানো হয়েছে, সমস্ত দেশের উড়ানেরই যেন গতিপথ পরিবর্তন করে নেওয়া হয়। কাবুলের এয়ারস্পেসের নিয়ন্ত্রণ যেকোনও মুহূর্তে হাতছাড়া হতে পারে বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
গতকাল কাবুল দখল নেওয়ার পরই তালিবানের তরফে দেশবাসীকে আশ্বাস দিয়ে বলা হয়, “ভয়ের কোনও কারণ নেই, কাবুলে রক্তপাত করবেন না তারা। শান্তিপূর্ণভাবেই সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কাউকে শহর ছেড়ে যেতে হবে না, সকলে বাড়িতেই থাকুন”। যদিও রাত গড়াতেই বদলে যায় চিত্র। রাতের অন্ধকারে রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনে থেকে শহরের একাধিক প্রান্তে বোমাবাজির শব্দ শোনা যায়।
পরে সকালে কাবুলবাসী শহর ছেড়ে বিমানবন্দরে পালিয়ে এলে সেখানেও তাদের পিছু নেয় তালিবান মুজাহিদ্দিন। যেহেতু কাবুল বিমানবন্দরের মাধ্যমেই বিশ্বের সঙ্গে এখনও সংযুক্ত আফগানিস্তান, সেই কারণে সমস্ত দেশের তরফেই তাদের নাগরিকও দূতাবাসের কর্মীদের আফগানিস্তান থেকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। সুরক্ষা দিতে বিমানবন্দর পাহারা দিচ্ছে মার্কিন সেনা। সেখানেই এই সংঘর্ষ শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আরও পড়ুন: ‘যা চেয়েছিলাম, তা পেয়েছি’, আফগানিস্তানে যুদ্ধ শেষের বার্তা দিল তালিবান