AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Bangladesh Economy: তীব্র আর্থিক সঙ্কটে ধুঁকছে শ্রীলঙ্কা, নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারছে তো বাংলাদেশ?

Bangladesh: করোনা, কাবুল ও ইউক্রেন। বিশ্ব অর্থনীতিতে তিনটি অপ্রীতিকর পরিস্থিতি বাংলাদেশকেও নাড়িয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করেন। করোনাকালে তাঁরা কাজ হারিয়ে দেশে ফিরেছেন। বেকারের চাপ রয়েছে।

Bangladesh Economy: তীব্র আর্থিক সঙ্কটে ধুঁকছে শ্রীলঙ্কা, নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারছে তো বাংলাদেশ?
বাংলাদেশের অর্থনীতির বাস্তব চিত্র ঠিক কেমন?
| Edited By: | Updated on: Apr 05, 2022 | 2:17 PM
Share

প্র দী প চ ক্র ব র্তী

ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে। এমন দিন সবার আগে। ভারত মহাসাগরে ডুবছে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি  (Sri Lanka Economic Crisis)। বঙ্গোপসাগরের তীরে দাঁড়িয়ে তা দেখছে বাংলাদেশ। বুকে একটুও কি ধুকপুকুনি হচ্ছে না? আন্তর্জাতিক অর্থনীতিবিদরা বলছেন শ্রীলঙ্কার মতো হাঁড়ির হাল বাংলাদেশের হয়নি। কিন্তু, বাংলাদেশের অর্থনীতি (Bangladesh Economy) খুব স্বস্তিতে রয়েছে তা নয়। অতি দ্রুত সেখানে অবস্থার অবনতি হয়েছে। গত বছরেই জিডিপি অনুযায়ী মাথা পিছু আয়ে ভারতকে টপকে গিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু, এখন পরিস্থিতি আলাদা। করোনা, কাবুল ও ইউক্রেন। বিশ্ব অর্থনীতিতে তিনটি অপ্রীতিকর পরিস্থিতি বাংলাদেশকেও নাড়িয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করেন। করোনাকালে তাঁরা কাজ হারিয়ে দেশে ফিরেছেন। বেকারের চাপ রয়েছে।

তার ওপর বাংলাদেশের রফতানিও মার খেয়েছে। জগত্‍ বিখ্যাত্‍ গার্মেন্ট পণ্যের রফতানি কমেছে। তার মানে বিদেশি মুদ্রায় জোগান কমেছে। খরচ কমেছে কি? নাহ্‍। বাংলাদেশ খাদ্য সুরক্ষায় স্বয়ং সম্পূর্ণ নয়। বহু পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। যেমন ভোজ্য তেল। করোনার আগে বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম ছিল ব্যারেল প্রতি সাড়ে সাতশো ডলার। এখন তা প্রায় দুহাজার ডলার ছুঁইছুঁই। বাংলাদেশ নিজের চাহিদার পঁচানব্বই শতাংশ ভোজ্য তেল আমদানি করে। সেই বাবদ তিনগুণ দাম দিতে হচ্ছে। ফলে হুহু করে কমছে বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়। তারওপর পেট্রোপণ্যের দামবৃদ্ধি তো রয়েইছে। প্রাকৃতিক গ্যাস বাংলাদেশের নিজস্ব সম্পদ। কিন্তু, গোটা দেশের চাহিদা মেটানোর মতো গ্যাস উত্তোলনের পরিকাঠামো বাংলাদেশের নেই।

লিক্যুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাসও বাংলাদেশকে আমদানি করতে হয়। তার দামও ১২ শতাংশ বেড়ে গেছে। সম্মিলিত প্রভাব, বাজারে মুদ্রাস্ফীতি। যা ৬.৭ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। দুধ, ডিম ও চিনি সাধারণের নাগালের বাইরে। ঢাকা শহরে বাড়িভাড়া দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। সাড়ে তিন কোটি মানুষ নতুন করে দারিদ্র সীমার নীচে চলে গেছে। বাংলাদেশের পনেরো কোটি জনসংখ্যার কথা মাথায় রাখলে দারিদ্রের হার যথেষ্ট বেশি। এই পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে বাঁচিয়ে রাখতে অন্ন সহায়তা প্রকল্প চালু রেখেছে বাংলাদেশ সরকার। এক কোটি পরিবার এপ্রিল মাস পর্যন্ত বিনামূল্যে রেশন পাবে। তাতে পাঁচ কোটি মানুষ উপকৃত হবেন।

কিন্তু, সরকারই বা কতদিন টানতে পারবে? গোদের ওপর বিষফোঁড়া তো রয়েইছে। চিনা ঋণ। শ্রীলঙ্কার মোট ঋণের পরিমাণ ধরলে, চিনের কাছে দেনা তেমন নয়। তাতেই চিনা চাপে ধুঁকছে শ্রীলঙ্কা। আর বাংলাদেশ চিনের কাছে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে বসে রয়েছে। এশিয়ায় পাকিস্তানের পর বাংলাদেশেই চিন সবচেয়ে বেশি লগ্নি করেছে। বাংলাদেশের পরিকাঠামোয় প্রায় চার হাজার কোটি ডলার ঋণ প্রস্তাবনা রয়েছে চিনের। তার মধ্যে এক হাজার কোটি ডলার ইতিমধ্যেই লগ্নি হয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশের নয়টি পরিকাঠামো প্রকল্প চিনের লগ্নিতে চলছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পদ্মাব্রিজ রেল লিঙ্ক, কর্ণফুলি নদীতে বঙ্গবন্ধু টানেল এবং দশের কান্দি নিকাশি প্রকল্প। আগামী দিনে এই ঋণের অর্থ সুদে আসলে আদায় করবে চিন।

ঋণ শোধ হবে কোনপথে? বাংলাদেশের রোজগারই তো কমে গিছে। পদ্মাপারের প্রতিবেশীর অবস্থা সেই বেসরকারি চাকুরিজীবীর মতো। ব্যাঙ্কের প্রলোভনে পা দিয়ে যিনি ঋণ নিয়ে ফ্ল্যাট বা গাড়ি কিনেছেন। এখন চাকরি চলে গিয়েছে বা রোজগার কমে গিয়েছে। ব্যাঙ্ক কিস্তির জন্য চাপ দিচ্ছে। টাকা মেটাতে না পারলে কেড়ে নেওয়া হবে সিকিওরিটি। রিকভারি এজেন্ট হিসেবে রয়েছে চিনের বিশাল সেনাবাহিনী। বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা নেহাত অমূলক নয়।

আরও পড়ুন : Russia Ukraine War: রাশিয়ার পরমাণু অস্ত্র কোথায়? ব্যবহারের নীতি কী?