নিরলস সংগ্রাম ও সাহসের প্রতীক, ৭৭-এ পা দিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

Bangladesh PM Sheikh Hasina birthday: বাংলাদেশের জাতির জনক, 'বঙ্গবন্ধু' শেখ মুজিবুর রহমান ও 'বঙ্গমাতা' বেগম ফজিলাতুন নেছার বড় মেয়ে তিনি। বর্তমানে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চতুর্থ মেয়াদের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। তাঁর ৭৭ বছরের জীবন নিরলস সংগ্রাম ও সাহসিকতায় ভরা।

নিরলস সংগ্রাম ও সাহসের প্রতীক, ৭৭-এ পা দিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
নিরলস সংগ্রাম ও সাহসের প্রতীক শেখ হাসিনা, বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশকে নিয়ে চলেছেন এক অন্য মাত্রায়Image Credit source: AFP
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 28, 2023 | 11:59 PM

ঢাকা: বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর), ৭৬ পেরিয়ে ৭৭-এ পা রাখলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লিগের সভাপতি শেখ হাসিনা। ১৯৪৭ সালে, এই দিনেই তৎকালীন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জের মধুমতি নদীর পার্শ্ববর্তী টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। তবে, ৭৭তম জন্মদিনে দেশে নেই হাসিনা। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম বার্ষিক অধিবেশনে যোগ দিতে বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আছেন তিনি। বাংলাদেশের জাতির জনক, ‘বঙ্গবন্ধু’ শেখ মুজিবুর রহমান ও ‘বঙ্গমাতা’ বেগম ফজিলাতুন নেছার বড় মেয়ে তিনি। বর্তমানে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চতুর্থ মেয়াদের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। তাঁর ৭৭ বছরের জীবন নিরলস সংগ্রাম ও সাহসিকতায় ভরা।

১৯৮১ সালে আওয়ামি লিগের নেতৃত্ব গ্রহণ করেছিলেন হাসিনা। তারপর থেকে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গিয়েছেন শেখ হাসিনা এবং তাঁর দল। ১৯৯৬ সালে প্রথমবার নির্বাচনে জয়লাভ করে ক্ষমতায় এসেছিলেন তিনি। তারপর ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে আরও তিনবার সরকার গঠন করে আওয়ামি লিগ। প্রতিবারই সরকারের নেতৃত্ব দিয়েছেন হাসিনা। তবে, তার আগে তাঁর শৈশব ও কৈশোর কেটেছিল টুঙ্গিপাড়ায়। ঠাকুর্দা শেখ লুৎফর রহমান ও ঠাকুমা সাহেরা খাতুনের অতি আদরের নাতনি ছিলেন তিনি। হাসিনারা ছিলেন পাঁচ ভাই-বোন। কিন্তু, ১৯৭৫ সালের ১৫ অগস্ট রাতে, হাসিনার বাবা-মায়ের সঙ্গে গুলি করে হত্যা করা হয়েচিল তাঁর তিন ভাই, শেখ কামাল, শেখ জামাল, এবং শেখ রাসেল-কে। বর্তমানে, হাসিনা এবং তাঁর বোন শেখ রেহানা ছাড়া, তাঁদের পরিবারের আর কেউ জীবিত নেই।

টুঙ্গিপাড়ায় এক পাঠশালাতেই পড়াশোনা শুরু হয়েছিল শেখ হাসিনার। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে জিতে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। সেই সময় তিনি সপরিবারে ঢাকায় চলে এসেছিলেন। পুরোনো ঢাকার রজনী বোস লেনে এক ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করেছিলেন। মুজিবুর রহমান যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভার সদস্য হওয়ার পর, তাঁরা ৩ নম্বর মিন্টু রোডের বাড়িতে উঠে এসেছিলেন। শেখ হাসিনা ভর্তি হয়েছিলেন, ঢাকার টিকাটুলি এলাকার নারী শিক্ষা মন্দিরে। বর্তমানে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি শের-ই-বাংলা গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামে পরিচিত। ১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ১৯৬৭ সালে ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পাশ করেছিলেন হাসিনা। ওই বছরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে পড়তে ঢুকেছিলেন তিনি, ১৯৭৩ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেছিলেন।

রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম বার্ষিক সভায় বক্তব্য রাখছেন হাসিনা

১৯৬৮ সালে দেশের অন্যতম সেরা পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়াকে বিবাহ করেছিলেন শেখ হাসিনা। ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ রাতে, বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানের করাচিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাঁর গোটা পরিবারকে ঢাকায় এক বাড়িতে গৃহবন্দি করা হয়। গৃহবন্দি অবস্থাতেই ওই বছরের ২৭ জুলাই তার প্রথম সন্তান জয়-এর জন্ম দিয়েছিলেন হাসিনা। ১৯৭২ সালের ৯ ডিসেম্বর জন্ম হয়েছিল কন্যা, পুতুলের।

১৯৭৫-এর হত্যাকাণ্ডের পর, দীর্ঘ ৬ বছর প্রবাসে ছিলেন হাসিনা। ১৯৮১ সালে তাঁকে আওয়ামি লিগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়েছিল, আর, ওই বছরই তিনি দেশে ফিরেছিলেন। ১৯৯০ সালে এক ঐতিহাসিক গণ আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনেই সাফল্য পেয়েছিল আওয়ামি লিগ, প্রথমবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হন হাসিনা। তবে, তারপরও তাঁর প্রাণের ঝুঁকি যায়নি। ২০০৪-র ২১ অগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামি লিগের এক বড় জনসভা ছিল। সেখানে গ্রেনেড হামলা করে তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। বলা যেতে পারে, অলৌকিকভাবেই প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন হাসিনা। তবে, ওই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল তাঁর দলের ২৪ জন কর্মীর। আহত হয়েছিলেন আওয়ামি লিগের অন্তত পাঁচশ নেতাকর্মী।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, বর্তমানে অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি ধরা পড়ছে। গোটা বিশ্বের তৃতীয় বিশ্বের অর্থনীতির দেশ হিসেবে, বাংলাদেশকে একটি রোল মডেলে পরিণত করেছেন তিনি। সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গি দমনেও তিনি গোটা বিশ্বে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। মায়ানমারে জাতিগত হিংসার শিকার রোহিঙ্গা মুসলিমদের আশ্রয়দানের জন্যও, তাঁর মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিও সারা বিশ্বের প্রশংসা কুড়িয়েছে।