Cyclone Mocha: জলের নিচে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ, তাণ্ডব চালিয়ে মোখা এখন বাংলাদেশের বাইরে
Cyclone Mocha in Bangladesh: রবিবার (১৪ মে), প্রায় দিনভর বাংলাদেশের ব্যাপক তাণ্ডব চালাল ঘূর্ণিঝড় মোখা। তবে, ঘুর্ণিঝড়ের ভরকেন্দ্রটি এখন বাংলাদেশ ছাড়িয়ে চলে গিয়েছে মায়ানমার সীমান্ত এলাকায়। জলের তলায় চলে গিয়েছে কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিন দ্বীপ।
ঢাকা: রবিবার (১৪ মে), প্রায় দিনভর বাংলাদেশের ব্যাপক তাণ্ডব চালাল ঘূর্ণিঝড় মোখা। তবে, ঘুর্ণিঝড়ের ভরকেন্দ্রটি এখন বাংলাদেশ ছাড়িয়ে চলে গিয়েছে মায়ানমার সীমান্ত এলাকায়। তার আগে অবশ্য বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চলে। জলের তলায় চলে গিয়েছে কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিন দ্বীপ। এই সেন্ট মার্টিন দ্বীপই হল বাংলাদেশের দক্ষিণতম স্থল যেখানে মানুষ বসবাস করেন। এই দ্বীপের হাজার হাজার বাড়িঘর, গাছপালা বিধ্বস্ত হয়েছে। দ্বীপের প্রায় ৮০ শতাংশ ঘরবাড়ি মাটিতে মিশে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মোখার ভরকেন্দ্র মায়ানমারে চলে গেলেও, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব থেকে বাংলাদেশে এখনও মুক্ত হয়নি। এখনও উপকূলীয় বাংলাদেশ জুড়ে চলছে এর তাণ্ডব।
এদিন দুপুর ১টা নাগাদ সেন্টমার্টিনে দ্বীপে আঘাত হানা শুরু করে মোখা। বিকালে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে বাংলাদেশ আবহাওয়া দফতর জানায়, এদিন দুপুর ১টা নাগাদ সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ঝড়ের বেগ ছিল ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার। বেলা ২টো নাগাদ বেগ বেড়ে হয় ঘণ্টায় ১২১ কিলোমিটার। এরপর, ২টা ২০ মিনিটে ঘণ্টায় ১৫১ কিলোমিটার বেগে এবং আড়াইটে নাগাদ ১৪৭ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায় এই দ্বীপের উপর দিয়ে। বেলা পৌনে পাঁচটা নাগাদ ঝোড়ো বাতাসের সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় ভারী বৃষ্টি এবং সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস। জলোচ্ছ্বাসে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের বহু জায়গা প্লাবিত হয়েছে। এই দ্বীপে মোট তিনটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ৩৭টি হোটেল-রিসর্ট। এই সবগুলিই এখন ঘরছাড়া মানুষের ভিড়ে থিকথিক করছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৬ হাজার স্থানীয় মানুষ এই জায়গাগুলিতে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের বেশিরভাগই শিশু এবং মহিলা। স্থানীয়দের অনেকেই অবশ্য নিজ নিজ ভিটে ছেড়ে আসতে চাননি।
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, দুপুর থেকেই আবহাওয়া পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হতে শুরু করেছিল। দুপুর দুটোর পর, প্রবল গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়। বিকেল চারটা পর্যন্ত ঝড়ের দাপট অব্যাহত ছিল। ঝড়ের জেরে তছনছ হয়ে গিয়েছে গোটা দ্বীপ। বহু মানুষের ঘরবাড়ি মাটিতে মিশে গিয়েছে এবং অসংখ্য গাছপালা ভেঙে পড়ছে। সেন্ট মার্টিনের স্থায়ী বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে বিকেল তিনটে পর্যন্ত অন্তত কয়েকশ বাড়ি ভেঙে পড়েছে। গাছ পড়ে গিয়েছে প্রায় শতাধিক। জায়গায় জায়গায় উপড়ে গিয়েছে বহু নারকেল গাছ। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, ঝড়ের সময় আতঙ্কে লোকজন ছোটাছুটি শুরু করেছিলেন। এমনকী, আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষজনও ভয়ে কান্নাকাটি শুরু করেছিলেন। তবে, ঝড়ের প্রভাবে ঠিক কতজন হতাহত হয়েছেন, কত সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে, ক্ষয়ক্ষতির আসল ছবিটা পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।