AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’

করোনার কারণে খুব কম সংখ্যক জমায়েতের অনুমতি ছিল এবারের ভাষা দিবসের (International Mother Language Day) অনুষ্ঠানে। মাস্ক, স্যানিটাইজার সঙ্গে রাখা ছিল বাধ্যতামূলক।

'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি'
প্রত্যেক বছর মাতৃভাষা দিবসে এভাবেই আলপনায় সেজে ওঠে শহিদ মিনার। ছবি: ফেসবুক
| Updated on: Feb 21, 2021 | 9:08 AM
Share

বাংলাদেশ: করোনার জেরে প্রথা ভাঙল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের (International Mother Language Day) অনুষ্ঠানে। প্রত্যেক বছর একুশের রাতে ঢাকার শহিদ মিনারে ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত থাকেন প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি। তবে এবার সে ছবিতে বদল এসেছে। অতিমারিকালে বিধি নিষেধের কারণে সেখানে সশরীরে উপস্থিত থাকতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাষ্ট্রপতি মহম্মদ আবদুল হামিদ। বদলে উপস্থিত ছিলেন তাঁদের সামরিক সচিব। তাঁরাই শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

মাতৃভাষাকে ভালবেসে যে প্রাণ পর্যন্ত দেওয়া যায় তা শিখিয়েছিল ওপার বাংলা। সে সময় দেশের গভর্নর মহম্মদ আলি জিন্না। ঢাকার রেসকোর্সে এক সভায় ঘোষণা করলেন উর্দু হবে রাষ্ট্রভাষা। কিন্তু যে বাঙালির প্রথম শব্দ ‘মা’, যন্ত্রণায় কুঁকড়ে গিয়ে কিংবা আনন্দে উচ্ছ্বাসে যে বাঙালি মায়ের ভাষায় মনের ভাব ব্যক্ত করে তারা কেন মানবে উর্দুকে মাতৃভাষা। ভিতরে ভিতরে শুরু হল দাবানল।

আরও পড়ুন: দ্বিতীয় ডোজ দেরিতে দিলেই কার্যকারিতা বেশি, বলল অক্সফোর্ডও! ভারত নীতি বদলাবে?

সেই ধিকি ধিকি আগুন ছড়াল বহু দূর। রাজপথে নামল ছাত্ররা। সঙ্গী আপামর মাতৃভাষাপ্রেমী। তাঁদের একটাই দাবি, রাষ্ট্রভাষা হোক বাংলা। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল পড়ুয়া মাতৃভাষার জন্য এই আন্দোলনকে আরও জোরাল করার ডাক দিল। পাকিস্তানি পুলিশ তাঁদের রুখতে এলে বাধল ‘লড়াই’। পুলিশের তরফে চলল গুলি। ঝাঁঝরা হয়ে গেল একদল টাটকা প্রাণ। এরপর গোটা বাংলাদেশ পথে। দাবি একটাই, ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’। ঘটনাক্রম গেল বহুদূর। ভাষার আন্দোলন মিশে গেল মুক্তিযুদ্ধে। ‘৭১-এ স্বাধীনতা পেল বাংলাদেশ। ভাষার জন্য বাঙালির আত্মবলিদানকে শ্রদ্ধা জানিয়ে এর বহু পরে ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ঘোষণা করে।

প্রত্যেক বছরই এই ঐতিহাসিক দিনটিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বাংলাদেশে। ঘড়ি রাত ১২টার কাঁটা ছুঁতেই শহিদ মিনারে শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী। এবার শেখ হাসিনার তরফে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরি শহিদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানান। উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম। করোনার কারণে খুব কম সংখ্যক জমায়েতের অনুমতি ছিল এবারের ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে। মাস্ক, স্যানিটাইজার সঙ্গে রাখা ছিল বাধ্যতামূলক। তবে যতই বিধি নিষেধের গেরো থাকুক না কেন, আবেগের কিন্তু কোনও খামতি ছিল না অমর একুশের এই ঐতিহাসিক রাতে। শহরজুড়ে ধ্বনিত হচ্ছিল রক্তে ঢেউ তোলা সেই কালজয়ী গান, ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি…।’