Italy: ধর্ষকদের খপ্পর থেকে বাঁচতে মহিলাদের মদ্যপ না হওয়ার পরামর্শ? ইটালির প্রধানমন্ত্রীর পার্টনারের মন্তব্যে জোর বিতর্ক
Italy: পার্টনারের এই ধরনের মন্তব্যের পরও কেন প্রধানমন্ত্রী মেলোনি কোনও কিছু বলছেন না, তা নিয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিরোধী দল ফাইভ স্টার মুভমেন্ট পার্টি। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি থেকে দূরত্ব তৈরির চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ বিরোধীদের।
রোম: ধর্ষকদের হাত থেকে বাঁচতে মহিলাদের মদ্যপান থেকে বিরত থাকার পরামর্শ? আর এই নিয়েই জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে ইটালিতে। সেখানকার বিরোধীরা অভিযোগ তুলছে, প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির বিশেষ বন্ধু অ্যান্ডু গিয়ামব্রুনো সংবাদমাধ্যমে এমনই দাবি করেছেন। আর এই নিয়েই তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে সেদেশে।
ঠিক কী ঘটেছে? জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি ইটালির নাপেলস ও পালেরমোর কাছে ঘটে যাওয়া কিছু হাই প্রোফাইল গণধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কথা বলছিলেন অ্যান্ডু গিয়ামব্রুনো। সেই সময়ে তিনি বলেন, “যদি আপনি নাচানাচি করতে যান, তাহলে আপনি মদ্যপ হতেই পারেন। কিন্তু যদি আপনি মদ্যপ হওয়া থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারেন, যদি নিজের জ্ঞানে থাকতে পারেন, তাহলে হয়ত আপনি এসব বিপদ থেকেও দূরে থাকতে পারবেন। কারণ, তখন কে নেকড়ে, সেটা আপনি বুঝতে পারবেন।”
শুধু তাই নয়, ওই শো চলাকালীন সাংবাদিককে বলতে দেখা যায়, “যদি আপনি ধর্ষিত হওয়া থেকে নিজেকে বাঁচাতে চান, তাহলে নিজের জ্ঞান হারাবেন না। নিজের বিষয়ে বুদ্ধি রাখুন।” আর সেই কথাতেও সমর্থন জানাতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির বিশেষ বন্ধু অ্যান্ডু গিয়ামব্রুনোকে। যদিও মহিলাদের উপর এই ধরনের পাশবিক অত্যাচারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন গিয়ামব্রুনো এবং ধর্ষকদের ‘নেকড়ে’র সঙ্গে তুলনা করেছেন। কিন্তু এই মদ্যপ হওয়া থেকে বিরত থাকার তত্ত্ব ঘিরে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে।
পার্টনারের এই ধরনের মন্তব্যের পরও কেন প্রধানমন্ত্রী মেলোনি কোনও কিছু বলছেন না, তা নিয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিরোধী দল ফাইভ স্টার মুভমেন্ট পার্টি। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি থেকে দূরত্ব তৈরির চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ বিরোধীদের। গার্ডিয়ানে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিরোধী দলের তরফে একটি বিবৃতিও প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বিরোধীরা লিখছে, গিয়ামব্রুনোর মন্তব্য কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না এবং এই ধরনের মন্তব্য তীব্র নিন্দাজনক। বিরোধীদের বক্তব্য, এই ধরনের শব্দ এক ‘পুরুষতান্ত্রিক’ ও ‘পিছিয়ে পড়া’ সংস্কৃতির পরিচয় দেয়। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এই মন্তব্য ঘিরে তীব্র প্রতিবাদ দেখা গিয়েছে।
বিতর্কের মাঝে মুখ খুলেছেন গিয়ামব্রুনোও। তাঁর বক্তব্য, “আমি যদি ভুল কিছু বলতাম, তাহলে আমি ক্ষমা চেয়ে নিতাম। কিন্তু ব্যাপারটি তা নয়।” বিরোধীদের পাল্টা খোঁচা দিয়ে তিনি বলেছেন, “আমাকে কী বলতে হবে, কী বলতে হবে না, সেটা আমাকে কোনও রাজনীতিক শিখিয়ে দেবে না।”
তিনি আরও বলেন, “আমি আগেও বলেছি, ধর্ষণ একটি জঘন্য অপরাধ। আমি শুধু যুব সমাজকে বলেছি, তাঁরা যেন বাইরে বেরিয়ে মদ্যপ না হয়ে যায় বা মাদক না নেয়। এটা বলার স্বাধীনতা আমার আছে। আমি তাঁদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছিলাম। কারণ, খারাপ লোক সবসময়ই সমাজে রয়েছে। আমি কখনোই বলিনি যে মদ্যপ মহিলাদের ধর্ষণ করা পুরুষদের অধিকার।”