Cyclone Mocha: মোখায় ছাড়খাড় মায়ানমার, এখনও জলের তলায় একাংশ, বলি ৭

Cyclone Mocha kills 6 in Myanmar: সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম 'মোখা' শক্তি হারিয়ে পরিণত হয়েছে সাইক্লোনিক স্টর্মে। তার আগে মায়ানমারে তীব্র ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে এই চরম গুরুতর ঘূর্ণিঝড়। এখনও পর্যন্ত ৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। বাংলাদেশেও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হলেও, হতাহতের কোনও খবর নেই।

Cyclone Mocha: মোখায় ছাড়খাড় মায়ানমার, এখনও জলের তলায় একাংশ, বলি ৭
মোখায় তছনছ মায়ানমার
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 15, 2023 | 4:19 PM

ঢাকা/ সিতওয়ে: রবিবার দুপুরে ল্যান্ডফলের পর থেকে ২৪ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম ‘মোখা’ শক্তি হারিয়ে পরিণত হয়েছে সাইক্লোনিক স্টর্মে। সোমবার সকালে দিল্লির মৌসম ভবন থেকে জানানো হয়েছে, মোখা বর্তমান মায়ানমারের উপরেই রয়েছে এবং ধীরে ধীরে চিনের উত্তর অংশের দিকে এগোচ্ছে। তবে শক্তি হারানোর আগে, রবিবার গোটা দিন ধরে মায়ানমার এবং বাংলাদেশে তাণ্ডব চালিয়েছে মোখা। জলবায়ু বিজ্ঞানীদের মতে, ১৯৮২ সালের পর থেকে এটিই ভারত মহাসাগরের উত্তর অংশে তৈরি হওয়া সবথেকে শক্তিশালী গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়। মোখা-র সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ২৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। সংবাদ সংস্থা অ্য়াসোসিয়েট প্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোখার দাপটে এখনও পর্যন্ত মায়ানমারে ৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আর আহত হয়েছেন আরও ৭০০ জন। এছাড়া, সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে বিপুল পরিমাণে।

মোখার আগমনের পূর্বাভাস পেয়ে আগে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। মায়ানমারের উপকূলীয় প্রদেশ রাখাইনে প্রায় ২০,০০০ মানুষকে বিভিন্ন মঠ, মন্দির, স্কুলবাড়ির মতো শক্তপোক্ত আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তারপরও, মোখার দাপটে তছনছ হয়ে গিয়েছে রাখাইনের রাজধানী শহর সিতওয়ে। ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। ঘুর্ণিঝড়ের জেরে সিতওয়ের নীচু এলাকাগুলিতে বন্যা দেখা দিয়েছে। আটকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। শহরের অন্যান্য জায়গা আবার ঝড়ের দাপটে বিধ্বস্ত। নেই বিদ্যুৎ সংযোগ, নেই ওয়াইফাই সংযোগ। রবিবারই, সিতওয়ে থেকে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিয়োতে ঝড়ের সময় একটি টেলিকম টাওয়ার হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে দেখা গিয়েছিল। উড়ে গিয়েছে বহু কাচা বাড়ির চাল, উপরে গিয়েছে বহু গাছ। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মায়ানমারের সামরিক সরকার ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা বিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে খাদ্য, পানীয়, ওষুধ এবং চিকিৎসকদের পাঠাচ্ছে।

মায়ানমারে মোখার তাণ্ডব

মায়ানমারে উপস্থিত রাষ্ট্রপুঞ্জের উন্নয়ন কর্মসূচির প্রতিনিধি টুইট করে জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির সার্বিক চিত্রটা জানা যায়নি। তবে, রাষ্ট্রপুঞ্জের পক্ষ থেকে মায়ানমারে উদ্ধআর ও ত্রাণের কাজ শুরু করা হয়েছে। তাদের সহায়তা করছে রেড ক্রস বাহিনীও। বস্তুত, ঝড় আসার আগে থেকেই রেড ক্রসের শয়ে শয়ে স্বেচ্ছাসেবক মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধদের নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন। গ্রাম ও শহরাঞ্চলে ঝড়ের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করছিলেন। ঝড়ের পর, উদ্ধার অভিযানেও ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তাঁরা।

মোখার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। তবে, যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষত হওয়ার ঝুঁকি ছিল, কার্যক্ষেত্রে ক্ষতির মাত্রা তার থেকে অনেকাংশে কম হয়েছে বলে জানিয়েছে, ঢাকার আবহাওয়া দফতর। আগে থেকেই সেন্ট মার্টিন দ্বীপ, টেকনাফ এবং কক্সবাজারের মতো বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকাগুলি থেকে শয়ে শয়ে মানুষকে নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। রবিবার দিনভর ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন অংশে বৃষ্টি হয়। তবে, সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস বিশেষ না থাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই কম হয়েছে। তবে প্রবল বর্ষণ ও ঝোড়ো বাতাসে কক্সবাজারে অবস্থিত রোহিঙ্গা শিবিরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মোখার ল্যান্ডফলের আগেই রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির থেকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ প্রায় ৩ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নিয়েছিল। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মোখার দাপটে ১৩০০রও বেশি বাঁশের তৈরি আশ্রয়কেন্দ্র ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। তবে, বাংলাদেশ থেকে এখনও পর্যন্ত কারোর হতাহতের খবর আসেনি।