Ismail Haniyeh: ইসমাইল হানিয়াহ: এই নেতার অঙ্গুলি হেলনেই ইজরাইলে তাণ্ডব চালাল হামাস

Ismail Haniyeh: গত শনিবার, স্থল-জল-আকাশ - তিন পথে একসঙ্গে হামলা চালিয়ে ইজরায়েলি বাহিনীকে চমকে দিয়েছিল এই যোদ্ধা সংগঠনটি। গাজা ভূখণ্ডের শাসন ক্ষমতা আছে তাদেরই হাতে। আর এই সংগঠনকে চালায় কে? উত্তর হল, ইসমাইল হানিয়াহ।

Ismail Haniyeh:  ইসমাইল হানিয়াহ: এই নেতার অঙ্গুলি হেলনেই ইজরাইলে তাণ্ডব চালাল হামাস
উদ্বাস্তু শিবিরে জন্ম হয়েছিল হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াহ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 11, 2023 | 1:39 PM

গাজা সিটি: ইজরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকে ইজরায়েলের জবাব দেওয়া চলছে। গাজায় একের পর এক বিমান হামলা চলছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে মৃত্যু সংখ্যা। রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, গাজা ভূখণ্ডে ইতিমধ্যেই ২ লক্ষ ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ গৃহচ্যুত হয়েছেন। অন্যদিকে, ইজরায়েলি সেনাবাহিনীকে জেনিনের দুই থেকে তিনটি এলাকায় পিছু হটতে বাধ্য করেছে হামাস। ক্রমে, সংঘর্ষের তীব্রতা বাড়ছে। গত শনিবার, স্থল-জল-আকাশ – তিন পথে একসঙ্গে হামলা চালিয়ে ইজরায়েলি বাহিনীকে চমকে দিয়েছিল এই যোদ্ধা সংগঠনটি। গাজা ভূখণ্ডের শাসন ক্ষমতা আছে তাদেরই হাতে। আর এই সংগঠনকে চালায় কে? উত্তর হল, ইসমাইল হানিয়াহ। হামাসের প্রধান নেতা। এক সময় প্যালেস্টাইনি সরকারের প্রধানমন্ত্রীও ছিলেন। শোনা যাচ্ছে, তাঁর নির্দেশেই এই হামলা চালিয়েছে হামাস।

বলা যেতে পারে, একেবারে শুরু থেকে ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন সংঘাতই ইসমাইল হানিয়াহর জীবনকে আকার দিয়েছে। ১৯৪৮ সালের প্রথম আরব-ইজরায়েল যুদ্ধের ভিটেছাড়া হয়েছিলেন ইসমাইলের বাবা-মা। ১৯৬২ সালের ২৯ জানুয়ারি, আল-শাতি উদ্বাস্তু শিবিরে জন্ম হয় তাঁর। উদ্বাস্তু শিবিরে রাষ্ট্রপুঞ্জ থেকে স্কুল চালানো গহত। সেখানেই পড়াশোনা করেছিলেন তিনি। এরপর, ১৯৮৭ সালে গাজার ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবি সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেছিলেন। তবে, এই সময় থেকেই তিনি হামাস গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হন।

৮৭ সালেই গঠিত হয়েছিল হামাস বা হরকত আল-মুকাওয়ামা আল-ইসলামিয়া। যার অর্থ, ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন। প্রথম থেকেই এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন ইসমাইল হানিয়াহ। ১৯৯৭ সালে, ইজরায়েলি জেল থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন হামাসের প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ ইয়াসিন। ইসমাইলকে তাঁর কার্যালয়ের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল। আর এটাই তাঁর জীবন বদলে দেয়। ইয়াসিনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতাই হামাসের সংগঠনে মধ্যে তাঁকে বিশেষ জায়গা করে দিয়েছিল। প্যালেস্টাইন সরকারের কাছে হামাসের প্রতিনিধি হয়ে ওঠেন তিনি। সেই সঙ্গে সংগঠনেও তাঁর দ্রুত উত্থান ঘটে।

অন্যদিকে, ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী বহুবার তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা করেছে। ২০০৩ সালে, জেরুসালেমে এক আত্মঘাতী বোমা হামলার পর, ইজরায়েলি বায়ুসেনা আকাশপথে তাঁর উপর বোমা হামলা চালিয়েছিল। হাতে সামান্য আঘাত পেয়েছিলেন তিনি। ২০০৬ সালে, প্যালেস্টাইনি জাতীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। মাত্র এক বছরই এই চেয়ারে ছিলেন তিনি। তবে, তার মধ্যে ইজরায়েলের সঙ্গে দ্বন্দ্ব মেটাবার বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। তবে কোনও প্রচেষ্টাই সফল হয়নি। ২০১৬ সালে, খালেদ মেশালের জায়গায় হামাসের সর্বময় নেতা হন ইসমাইল হানিয়াহ।

ইসমাইল হানিয়াহ সাফ জানিয়েছেন, গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়েছে ঠিকই, কিন্তু, তা ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক এবং জেরুসালেমে ছড়িয়ে দেওয়াটাই তাদের লক্ষ্য। শনিবার হামাসের হামলার পর এক টিভি ভাষণে তিনি বলেছেন, “আমরা কত ভাল প্রস্তুতি নিয়ে হামলা চালিয়েছি, তা, যে ঘটনা ঘটেছে তাতেই স্পষ্ট। আজকের ঘটনায় শত্রুদের দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। আমাদের আরব ভাইদের এবং সকল দেশকে বলছি, যারা প্রতিরোধকারীদের মুখে নিজেদেরই রক্ষা করতে পারে না, তারা আপনাদেরও কোনও সুরক্ষা দিতে পারবে না।” শোনা যাচ্ছে বর্তমানে তিনি কাতারে আছেন। সেখান থেকেই তাঁর নির্দেশ আসছে গাজার সামরিক নেতাদের কাছে।