Israel: ১০ বছর আগেই হয়েছিল প্ল্যান, কীভাবে পেজার হামলা চালিয়েছিল ইজরায়েল?

Israel: হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর উপর হাইটেক হামলা চালিয়েছিল তেল আবিব। হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সদস্যদের হাতে হাতে বিস্ফোরিত হয়েছিল পেজার, তারপর ওয়াকিটকি। মৃত্যু হয়েছিল অন্তত ৩৭ জনের। অন্তত ৯ বছর আগেই এই হামলার পরিকল্পনা করেছিল ইজরায়েল।

Israel: ১০ বছর আগেই হয়েছিল প্ল্যান, কীভাবে পেজার হামলা চালিয়েছিল ইজরায়েল?
পেজার বিস্ফোরণের পরিকল্পনা হয়েছিল ৯ বছর আগেইImage Credit source: PTI
Follow Us:
| Updated on: Oct 06, 2024 | 6:33 PM

নয়া দিল্লি: সম্প্রতি, লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীকে জোর ধাক্কা দিয়েছে ইজরায়েল। মাটির গভীরে থাকা এক বাঙ্কারে, ইজরায়েলি হানায় মৃত্যু হয়েছে হিজবুল্লাহ প্রধান নাসরুল্লাহর। তবে তারও আগে, হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর উপর হাইটেক হামলা চালিয়েছিল তেল আবিব। হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সদস্যদের হাতে হাতে বিস্ফোরিত হয়েছিল পেজার, তারপর ওয়াকিটকি। মৃত্যু হয়েছিল অন্তত ৩৭ জনের। তাদের মধ্যে বেশ কিছু শিশুও ছিল। আহত হয়েছিলেন অন্তত ৩০০০ মানুষ। যার অধিকাংশই ছিল অসামরিক ব্যক্তি। আসলে, একজন হিজবুল্লাহ সদস্যর মনে ঘুনাক্ষরেও সন্দেহ হয়নি যে, তাদের পকেটে রয়েছে ইজরায়েলি বোমা। কীভাবে পেজার বা ওয়াকিটকিতে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল ইজরায়েল?

এই বিষয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন পোস্ট। পেজারগুলি তৈরি করেছিল অ্যাপোলো নামে এক সংস্থা। মোবাইল ফোনের আগে, প্রায় গোটা বিশ্বে চলত পেজার। যার মাধ্যমে টেকস্ট মেসেজ পাঠানো যায়। যুদ্ধক্ষেত্রের মতো কঠোর পরিস্থিতিতে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত ছিল পেজারগুলি। এগুলি ওয়াটারপ্রুফ, অর্থাৎ, জল লাগলে বা জলে ডুবে গেলেও সমস্যা নেই। এতে ছিল বড় মাপের ব্যাটারি। একবার চার্জ করলে টানা কয়েক মাস ধরে চলত পেজারগুলি। তার উপর, ইজরায়েলি গোয়েন্দাদের পক্ষে এগুলিকে ট্র্যাক করা সম্ভব ছিল না। কাজেই, হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী এই যন্ত্রটিকে, তাদের সেরা যোগাযোগের সরঞ্জাম হিসাবে মনে করেছিল। তাদের যোগাযোগের সকল প্রয়োজন এতে মিটবে বলে মনে করেছিল। কিন্তু, ওয়াশিংটন পোস্টের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, হিজবুল্লাহর এই ভরসার যোগাযোগের যন্ত্রকেই হাতিয়ারে পরিণত করেছিল ইজরায়েলি গোয়েন্দা বাহিনী, ‘মোসাদ’।

ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াকি-টকি এবং পেজারে বিস্ফোরক রাখার পরিকল্পনা, ২০১৫ সালেই করেছিল ইজরায়েল। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে হামলা চালিয়েছিল গাজার হামাস গোষ্ঠী। সেই হামলার এক বছরেরও বেশি আগে, ২০২২ সালেই পেজার বোমাগুলি তৈরি করেছিল ইজরায়েল। অ্যাপোলো সংস্থার অজান্তেই, গোপনে তারা সেই বিস্ফোরক-ভরা পেজারগুলিকে সাপ্লাই লাইনে মিশিয়ে দিয়েছিল। সেই সঙ্গে এক মহিলা বিক্রেতাকে তারা হিজবুল্লাহর কাছে পাঠিয়েছিল, তাদের পেজার এবং ওয়াকি-টকি কিনতে রাজি করাতে। তিনি হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের বুঝিয়েছিলেন, কেন তাদের বড় ব্যাটারির পেজারগুলি কেনা উচিত। এরপর এই যোদ্ধা গোষ্ঠী ৫,০০০টি পেজার কিনেছিল।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে তাদের সদস্যদের মধ্যে পেজার বিতরণ করা শুরু করেছিল হিজবুল্লাহ। হামলার একদিন আগেও কয়েকটি পেজার বিতরণ করা হয়েছিল। সেগুলির ব্যাটারিতে পিইটিএন (PETN) নামে একটি গুরুতর বিস্ফোরক উপাদান এবং ইজরায়েলি নজরদারি সরঞ্জাম ছিল। ওয়াশিংটন পোস্ট দাবি করেছে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কয়েকদিন আগে পর্যন্ত এই সম্পর্কে কিছু জানতেন না যে ইজরায়েলের ঊর্ধ্বতন স্তরের নিরাপত্তা কর্তারাও। কিন্তু, ইজরায়েলের উত্তরাঞ্চলে সংঘাতের ঝুঁকি বাড়ছে দেখে, হিজবুল্লাহকে শিক্ষা দেওয়ার উপায় নিয়ে এক বৈঠক ডেকেছিলেন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

এরপর, ১৭ সেপ্টেম্বর হিজবুল্লাহ সদস্যদের পেজারে একটি বার্তা এসেছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, এটা একটা এনক্রিপ্ট করা বার্তা। বার্তাটি পড়তে তাদের দুটি বোতাম টিপতে হবে। সেই দুই বোতাম টিপতেই বিস্ফোরণ ঘটেছিল পেজারে।