Israel Crisis: ‘রিজার্ভ আর্মি’ নিয়ে যুদ্ধংদেহী ইজরায়েল, হামাস দমনে কীভাবে কাজ করবে ‘অপারেশন আইনীল’?
Israel Crisis: শনিবারের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা নীতিতে বড়সড় বদল আনছে বেঞ্জামিন নেতানিহুয়া প্রশাসন। গাজা স্ট্রিপকে চারদিক থেকে কার্যত দূর্গে পরিণত করতে চলেছে ইজরায়েল। এনিয়ে সরকারের কাছে যে পরিকল্পনা জমা পড়েছে, তার পোশাকি নাম ‘গাজা সিকিউরিটি অ্যান্ড কমিটমেন্ট প্ল্যান’।
ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধই এই মুহূর্তে দুনিয়ার সবচেয়ে হ্যাপেনিং ইস্যু। সোমবার সকাল হয়ে রাত, মঙ্গলবার দিনভর, বুধবার সকাল থেকেও গাজায় হামাসের ডেরা লক্ষ্য করে হামলা চালাল ইজরায়েল। ইজরায়েল সেনার দাবি, কয়েকদিনে অন্তত পনেশো হামাস জঙ্গিকে হত্যা করা হয়েছে। হামাসের শতাধিক ঘাঁটি গুঁড়িয়েছে দিয়েছে ইজরায়েল। গাজা শহরটা পুরোপুরি অবরুদ্ধ। একদিকে ঘনঘন যুদ্ধবিমানের হানা, অন্যদিকে গাজায় খাবার ও জল ঢোকা বন্ধ। গাজার বাসিন্দারা কতটা অসহনীয় অবস্থার মধ্যে রয়েছেন, কিছুটা হলেও বোঝাই যাচ্ছে।
এদিকে হামাসের সঙ্গে দীর্ঘ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েই তৈরি হচ্ছে ইজরায়েল। তাঁদের প্রাথমিক পরিকল্পনা, গাজার মাটি ব্যবহার করে আগামী ৫০ বছর কোনওরকম নাশকতার সম্ভাবনাই থাকবে না। এই পরিকল্পনার কোডনেম ‘অপারেশন আইনীল’। পাশাপাশি এই মুহূর্তে ইজরায়েলের সেনা পুরো শক্তি নিয়ে আক্রমনে নামলেও ব্যাক আপ প্ল্যানও রেডি রাখছে ইজরায়েল। কী সেটা? সেটা তাঁদের রিজার্ভ আর্মি। মাত্র ৭২ ঘণ্টায় প্রায় ৫ লক্ষ সদস্যের রিজার্ভ আর্মি তৈরি করে ফেলেছে ইজরায়েল। বিদেশে কর্মরত ইজরায়েলি নাগরিকরা দলে দলে দেশে ফিরছেন। এদের মধ্যে পড়ুয়া, পেশাদাররা যেমন আছেন তেমনই আছেন চিকিত্সক এমনকি কূটনীতিকও। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত অন্তত ৮ হাজার ইজরায়েলি সেনায় যোগ দিতে দেশে ফিরেছেন। তেল আভিভে এখন খুব কম বিমান ওঠানামা করছে। সেটা বাড়লে এই সংখ্যাটা আরও বাড়বে। এমনটা কিন্তু দুনিয়ার কোথাও সচরাচর দেখা যায় না। সোজা কথায়, ইজরায়েলের নাগরিকদের দেশের প্রতি এই দায়বদ্ধতা, দেশপ্রেম – শেখার মতো।
অন্যদিকে শনিবারের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা নীতিতে বড়সড় বদল আনছে বেঞ্জামিন নেতানিহুয়া প্রশাসন। গাজা স্ট্রিপকে চারদিক থেকে কার্যত দূর্গে পরিণত করতে চলেছে ইজরায়েল। এনিয়ে সরকারের কাছে যে পরিকল্পনা জমা পড়েছে, তার পোশাকি নাম ‘গাজা সিকিউরিটি অ্যান্ড কমিটমেন্ট প্ল্যান’। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, এটা কার্যকর হলে গাজার মানুষ এক পাড়া থেকে অন্য পাড়ায় যেতেও সমস্যায় পড়বেন। এবার অপারেশন আইনীলের প্রসঙ্গে আসি। অপারেশন আয়রন সোর্ড থেকে অপারেশন আইনীল। অপারেশন আইনীল আদপে ইজরায়েলের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। গাজা স্ট্রিপ থেকে আল-আকসা হয়ে নিরাপত্তা ব্যূহ তৈরির পরিকল্পনা করেছে আইডিএফ। সেই পরিকল্পনায় সায় দেবে ইজরায়েল মন্ত্রিসভা। সেটা হলে গাজা ডবল ওয়ালে আটকে আরও হাঁসফাঁস করবে। অনেকেই বলছেন সেটা হলে শনিবারের মতো এত সহজে ইহুদী মহল্লায় ঢুকে আর হামলা চালাতে পারবে না হামাস। রকেট হামলা হলেও খুব একটা ক্ষয়ক্ষতি হবে না।
মঙ্গলবার অনেক চেষ্টার পর আমাদের প্রতিনিধি গাজার এক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলতে পেরেছেন। তাঁর কথায়, গাজা এখন শুনশান শ্মশানপুরী। গাজায় মোট তিনশো চল্লিশটি ত্রান শিবির ছিল। দুশোর বেশি শিবির ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। ওখানে আর কিছুই নেই। কতজনের মৃত্যু হয়েছে, আমরা, গাজার বাসিন্দারা জানি না। গাজার ওই নাগরিকের দাবি, সাদা ধোঁয়ায় মাঝেমধ্যেই ঢেকে যাচ্ছে গাজার আকাশ। তার মধ্যেই দমবন্ধ হয়ে আসছে। তা হলে নিষিদ্ধ হোয়াইট ফরফরাস বোমা ব্যবহার করছে ইজরায়েল? উত্তর কারও কাছেই নেই। আসলে এমনই এক পরিস্থিতি যে কার দিকে আঙুল তুলব, কাকে দায়ী করবে, কে করবে, তা কেউই জানে না।