Kenya: মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্বে জর্জরিত, তার উপর করের বোঝা, আগুন জ্বলল সংসদে!

Kenya’s Parliament set ablaze: মূল্যবৃদ্ধি চরমে। বেড়েই চলেছে বেকারত্ব। খাঁড়ার ঘা মেরেছে প্রাকৃতিক দুর্যোগও। টিকে থাকার লড়াইয়ে জর্জরিত জনতার উপর আবার করের অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়েছে সরকার। বারুদ মজুদই ছিল, মঙ্গলবার (২৫ জুন), ক্ষোভের আগুনে জ্বলে উঠল আফ্রিকার দেশ কেনিয়া।

Kenya: মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্বে জর্জরিত, তার উপর করের বোঝা, আগুন জ্বলল সংসদে!
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ প্রতিবাদীদেরImage Credit source: PTI
Follow Us:
| Updated on: Jun 26, 2024 | 12:33 AM

নাইরোবি: মূল্যবৃদ্ধি চরমে। বেড়েই চলেছে বেকারত্ব। খাঁড়ার ঘা মেরেছে প্রাকৃতিক দুর্যোগও। টিকে থাকার লড়াইয়ে জর্জরিত জনতার উপর আবার করের অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়েছে সরকার। বারুদ মজুদই ছিল, মঙ্গলবার (২৫ জুন), ক্ষোভের আগুনে জ্বলে উঠল আফ্রিকার দেশ কেনিয়া। সম্প্রতি সেই দেশে রুটির উপর ১৬ শতাংশ মোটর গাড়ির উপর ২.৫ শতাংশ কর আরোপ করেছে। প্রধান খাদ্য রুটির এই অস্বাভাবিক দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে গত কয়েকদিন ধরেই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। এদিন, এই বিক্ষোভ রাস্তা থেকে পৌঁছে গেল সংসদে। বিক্ষোভকারীদের একটি বড় দল দেশের সংসদে ঢুকে, আগুন ধরিয়ে দিলেন তার একাংশে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবি-ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, বিক্ষুব্ধ জনতা স্লোগান দিতে দিতে সংসদ ভবনে প্রবেশ করে য়ে সংসদের একটি অংশে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছেন। প্রাথমিকভাবে বিক্ষোভকারীদের অতর্কিত হামলায় বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিল পুলিশ। সংসদের ভিতর থেকে আগুনের শিখা দেখা যাচ্ছিল। কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান দিয়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করাত চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। এরপরই পুলিশ প্রতিবাদী জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এখনও পর্যন্ত ১০ জন মারা গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। রাজধানী নাইরোবি-সহ দেশের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়েছে এই বিক্ষোভ। তারা বলেছে, “আমরা সংসদ বন্ধ করে দিতে চাই। প্রত্যেক সাংসদের পদত্যাগ করা উচিত। আমাদের একটি নতুন সরকার চাই।”

এদিকে, নাইরোবিতে প্রতিবাদীদের উপর কাঁদানে গ্যাসের গোলা ছোড়ার সময় আহত হয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বাকাক ওবামার সৎ-বোন আউমা ওবামা-ও। তিনি জানিয়েছেন, কাঁদানে গ্যাসের গোলার আঘাত লাগার পর থেকে তিনি চোখে খুলতে পারছেন না। তিনি জানিয়েছেন, তরুণ কেনিয়ানরা শান্তিপূর্ণভাবে শুধু পতাকা ও ব্যানার হাতে প্রতিবাদ মিছিল বের করেছিল। সেই মিছিলে তিনিও সামিল হয়েছিলেন। সেই মিছিলের উপরই কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। এক ভিডিয়োতে আউমাকে কাশতে দেখা গিয়েছে। তিনি বলেন, “কেউ কীভাবে নিজেদের লোকজনদের উপরই কাঁদানে গ্যাসের গোলা ছুড়তে পারে? এই বাচ্চাদের কথা শুনতে হবে। ওরাই ভবিষ্যৎ।” প্রসঙ্গত, কেনিয়ার প্রত্যন্ত গ্রাম নিয়াং’ওমা কোগেলোতে বড় হয়েছেন আউমা ওবামা।

কোভিড-১৯ মহামারীর দীর্ঘস্থায়ী অর্থনৈতিক প্রভাব, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব, টানা দুই বছরের খরা এবং মুদ্রার দাম পড়ে যাওয়া – একের পর এক অর্থনৈতিক ধাক্কা সামলাতে হয়েছে কেনিয়াবাসীকে। তার উপর গত মাসে এসেছিল বন্যা ও অতিবৃষ্টি। হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে এবং বহু প্রাণহানি, সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে। সেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই সরকার খাদ্য, গাড়ির মালিকানার মতো বিষয়ে চড়া কর আরোপ করেছে। প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে হাজার হাজার মানুষ। প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটোর ইস্তফা চাইছে।

অথচ, প্রায় দুই বছর আগে এই রুটোই শ্রমজীবী কল্যাণ-​​গরিব কল্যাণের স্বপ্ন দেখিয়ে নির্বাচনে জিতেছিলেন। কিন্তু, ঋণের চাপে হারিয়ে গিয়েছে তাঁর কল্যাণমূলক কর্মসূচি। বার্ষিক রাজস্বের ৩৭ শতাংশ শুধু শুধু সুদ মেটাতেই চলে যাচ্ছে। এরমধ্যে অতিরিক্ত কর চাপিয়ে ঋণের বোঝা হালকা করতে চেয়েছিলেন। বিক্ষোভের মুখে পড়ে, রুটি, রান্নার তেল, গাড়ির মালিকানা এবং আর্থিক লেনদেনের মতো কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত নতুন কর বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রতিবাদীরা তাতে সন্তুষ্ট নয়।