Iran: ‘কোরান পাঠ নয়, আমার মৃত্যুর পর ফূর্তির গান চালিও’
Last words of Iranian man who was hanged to death in public: কোরান পাঠ বা শোক প্রকাশ করতে হারণ করেছিলেন মাজিদ্রেজা রাহনাওয়ার্দ। গত সোমবার তাঁকে প্রকাশ্যে ফাঁসি দিয়েছিল ইরান সরকার।
তেহরান: মাজিদ্রেজা রাহনাওয়ার্দ। মাহসা আমিনির পর আরও একটি নাম উঠে গেল ইরানের ইতিহাসের পাতায়। গত সোমবার (১২ ডিসেম্বর) সরকার বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁকে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। একটি ক্রেনের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় তাঁর দেহ। তাঁর মৃত্যু হলেও অমর হয়ে গিয়েছে মৃত্যুর আগে বলে যাওয়া তাঁর শেষ কথাগুলি। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর শেষ মুহূর্তের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। এমনকি, বেলজিয়ামের সাংসদ দারিয়া সাফারিও ভিডিয়োটি টুইটারে পোস্ট করেছেন। কী বলেছেন তিনি? শেষ ইচ্ছায় মাজিদ্রেজা রাহনাওয়ার্দ বলেছিলেন, “আমি চাই না কেউ আমার কবরের সামনে দাঁড়িয়ে শোক প্রকাশ করুক। আমি চাই না কেউ কোরান পাঠ করুক বা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করুক। শুধু উদযাপন করুন। ফূর্তির গান বাজান।”
Just before he’s hanged on Dec.12 by Iran’s regime,they interrogate #MajidrezaRahnavard
His last words:I don’t want Quran to be read or prayed on my grave,just celebrate
Sharia law is the reason he’s gone His verdict:War with Allah
Only because he demonstrated for his rights pic.twitter.com/1uQpYhpGIq
— Darya Safai MP (@SafaiDarya) December 15, 2022
দারিয়া সাফারি যে ভিডিয়ো ফুটেজটি পোস্ট করেছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে মাজিদ্রেজা রাহনাওয়ার্দের চোখ কালো কাপড়ে ঢাকা রয়েছে। তাঁকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে দুই রক্ষী। তাদেরও মুখ কালো কাপড়ে ঢাকা। দেখে মনে পড়ে যেতে পারে আইএস জঙ্গিদের কথা। কিন্তু, তারা ইরানের রেভেলিউশনারি গার্ডের সদস্য।
Warning, difficult to watch. This is the moment that the Islamic Republic hanged #MajidrezaRahnavard in public. Basij chant Allahu Akbar, God is great. The person who sent the video says; Ordinary people refused to attend his public execution event. Where are you EU?#MahsaAmini pic.twitter.com/IN8gXzLzgt
— Masih Alinejad ?️ (@AlinejadMasih) December 12, 2022
শুধু মাজিদ্রেজা রাহনাওয়ার্দকেই নয়, সম্প্রতি আরও এক যুবককে প্রকাশ্যে ফাঁসি দিয়েছে ইরান সরকার। মাজিদ্রেজাকে ফাঁসি দেওয়ার ৪দিন আগেই ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল ২৩ বছর বয়সী মহসেন শেকারিকেও। তিনিও ইরান সরকারের কঠোর শরিয়তি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ইরানের সুরক্ষা বাহিনীর এক সদস্যকে জখম করার।
They allowed #MajidRezaRahnavard’s mother to visit him, and didn’t speak of execution at all. She left smiling and hoping that her son would be released soon. This morning she arrived when her son’s murderers were burying his dead body alone.#StopExecutionInIran pic.twitter.com/9n2k02uE60
— 1500tasvir_en (@1500tasvir_en) December 12, 2022
দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে তীব্র সরকার বিরোধী আন্দোলনের আঁচে পুড়ছে ইরান। চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নীতি পুলিশের হেফাজতে থাকাকালীন মৃত্যু হয়েছিল ২২ বছরের তরুণী মাহসা আমিনির। হিজাব না পড়ার অভিযোগে তাকে আটক করেছিল নীতি পুলিশ। তারপর থেকেই ইরান জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল প্রতিবাদের আগুন। রাস্তায় নেমে ইরান সরকারের কঠোর শরিয়তি আইনের বিরোধিতা করছেন নাগরিকরা। দমন পীড়নের মাধ্যমে সেই বিদ্রোহ ধামা চাপা দিতে চেষ্টা করেছে সরকার।
তাতে ফল হয়েছে উল্টো। বিক্ষোভ আরও জোরালো হয়েছে। শেষে ইরান সরকার নীতি পুলিশ বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু, তার পাশাপাশি চলছে প্রতিবাদীদের মৃত্যুদণ্ডের মতো কড়া শাস্তিদান। এর মধ্যে বৃহস্পতিবারই, রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহিলা কমিশন থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ইরানকে। একই সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিধ্বনিত হচ্ছে মাজিদ্রেজা রাহনাওয়ার্দের বলা কথাগুলি।