Spain: ফেলনা নয় গৃহকর্ম, ২৫ বছরের বেতন হিসেবে মহিলাকে কোটি টাকা দিতে বাধ্য হলেন প্রাক্তন স্বামী
Payment for housework: গৃহকর্ম, অর্থাৎ, ঘরের কাজের জন্য বেতন? স্পেনে এক মহিলাকে কোটি টাকা দিতে বাধ্য হলেন তাঁর প্রাক্তন স্বামী।
মালাগা: গৃহকর্ম, অর্থাৎ, ঘরের কাজকে এখনও আমাদের সমাজে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। মনোভাবটা অনেকটা এরকম, অফিস-কাছাড়ির কাজটাই আসল কাজ। বাড়ির কাজ তো সবাই করতে পারে। রান্না করা, থালা-বাসন মাজা, শৌচাগার পরিষ্কার করা, ঘরবাড়ির ধুলো ঝাড়ার মতো কাজগুলি ক্লান্তিকর হলেও, এই কাজগুলি করা না হলে বাড়িতে বসবাস করাই অসম্ভব হয়ে পড়ে। অফিসের কাজ করে বেতন পাওয়া যায়, কিন্তু বাড়ির কাজগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও, কোনও বেতন নেই। তবে এবার স্পেনের এক আদালত, গৃহস্থালির কাজের জন্য বেতন দেওয়ার আদেশ দিল এক ব্যক্তিকে।
পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাড়ির কাজ করার দায়িত্বটা বর্তায় মহিলাদের উপর। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মহিলারা বিনা অভিযোগে বিষয়টি মেনে নেন। তবে, এমনও কিছু মহিলা আছেন যাঁরা এই প্রথা সংশোধনে বিশ্বাসী। ইভানা মোরালও সেই রকমই এক মহিলা। ২৫ বছরের সংসারে তিনিই ঘরের কাজকর্ম করতেন। তাঁর প্রাক্তন স্বামী কুটোটিও নাড়তেন না। সম্প্রতি, এই অবৈতনিক গৃহকর্মের জন্য ইভানাকে ১,৮০,০০০ পাউন্ড (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা) দেওয়ার আদেশ দিয়েছে এক আদালত।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মেট্রোর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইভানার সঙ্গে তাঁর স্বামীর বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছিল। নিষ্পত্তির সময়, বিবাহিত জীবনে গৃহকর্ম করার জন্য ন্যূনতম মজুরি হিসেবে ওই মোটা অঙ্কের অর্থ প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয় ইভানার স্বামীকে। শুনানি চলাকালীন জানা যায়, ইভানা মোরাল দুই সন্তানের মা। তিনিই বাচ্চাদের দেখাশোনা করতেন। এর পাশাপাশি দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে সমস্ত ঘরোয়া কাজও করতেন তিনিই। ইভানার দাবি, তিনি বাইরে কোথাও কাজ করুন, সেটা চাইতেন না তার স্বামী। ওই ব্যক্তির একটি জিম রয়েছে। সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, ইভানা চাইলে সেই জিমে মাঝে মাঝে কাজ করতে পারেন। এরপরই শুধুমাত্র গৃহস্থালির কাজে নিজেকে ডুবিয়ে দিয়েছিলেন ইভানা।
বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা শুরু হওয়ার পরই, স্বামীর সম্পত্তির উপর থেকে অধিকার হারিয়েছিলেন ইভানা। ফলে দুই সন্তানকে নিয়ে আকূল পাথারে পড়েছিলেন তিনি। তবে, সম্প্রতি দক্ষিণ স্পেনের ভেলেজ-মালাগার এক আদালত আদেশ দিয়েছে, তাঁর প্রাক্তন স্বামীকে অবশ্যই তাদের সন্তানদের মাসে মাসে চাইল্ড কেয়ার ফি দিতে হবে। সেই সঙ্গে, দুই দশক ধরে বিনা বেতনে সংসারের সমস্ত কাজ করার ‘পারিশ্রমিক’ও মিটিয়ে দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে।