নিজেকে ‘রাজ’ বলে পরিচয় দিয়েছিলেন চোকসি! হাতে পরিয়ে দিয়েছিলেন নকল হীরের আংটি
মেহুল চোকসি (Mehul Choksi) ডমিনিকায় (Dominica) ধরা পড়ার পর থেকে উঠে এসেছে এই বারবারা জাবারিকার (Barbara Jabarica) নাম।
অ্যান্টিগুয়া: মেহুল চোকসির (Mehul Choksi) বিরুদ্ধে অভিযোগ বহু বছরের। তবে সদ্য ডমিনিকায় (Dominica) ভারতের সেই ‘ওয়ান্টেড’ হরে ব্যবসায়ীকে ঘিরে সামনে এসেছে নতুন চিত্রনাট্য। কিউবা যাওয়ার পথে ডমিনিকায় ধরা পড়েন চোকসি। শোনা গিয়েছিল, গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে পালানোর সময়ই ধরা পড়েছেন তিনি। কিন্তু অভিযোগে চোকসি আবার বললেন অন্য কথা। তাঁর দাবি, বারবারা নামে এক মহিলার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকলেও বারবারাই তাঁকে অপহরণে সাহায্য করেছেন। এরই মধ্যে বারবারা সামনে আনলেন এক নতুন তথ্য। জানালেন, নিজেকে ‘রাজ’ বলে পরিচয় দিয়েছিলেন চোকসি। এমনকি নকল হীরের আংট ও ব্রেসলেট দেওয়ার অভিযোগও জানিয়েছেন বারবারা।
সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে চোকসির অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছেন বারবারা। তিনি জানান, চোকসির অপহরণে তাঁর কোনও হাত ছিল না। মিথ্যা অভিযোগে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে অপদস্থ হতে হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। বারবারা জানিয়েছেন, আলাপ হওয়ার সময় নিজেকে ‘রাজ’ নামে পরিচয় দিয়েছিলেন চোকসি। কিছুদিনের মধ্যেই তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টাও করেন চোকসি। তিনি জানান, তাঁকে একটি হীরের আংটি ও হীরের ব্রেসলেট দিয়েছিলেন চোকসি, যা নকল বলে পরে জানতে পারেন তিনি।
এ দিকে, চোকসি তাঁর অভিযোগ পত্রে জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই বারবারা জাবারিকা নামে ওই মহিলার সঙ্গে মেলামেশা করছিলেন তিনি। তাঁর ও তাঁর কর্মীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতেন বারবারা। একসঙ্গে হাঁটতেও যেতেন দু’জনে। কিন্তু ২৩ মে যে ঘটনা ঘটল, তাতে তিনি অবাক। ওই দিন রাতে তাঁকে বাড়িতে ডেকেছিলেন বান্ধবী বারবারা। তাঁকে গাড়ি করে নিয়ে যেতে বলেছিলেন তিনি। সেই মতো তাঁর বাড়িতে পৌঁছে যান চোকসি। বারবারা তাঁকে অপেক্ষা করতে বলে নিজের ওয়াইনের গ্লাস শেষ করছিলেন। কয়েক মিনিট পরই তিনি দেখেন ঘরের মধ্যেই তাঁকে বেশ কয়েকজন ঘিরে ফেলেছেন। এঁদের অনেকের চেহারা সেনাবাহিনীর জওয়ানদের মত শক্তপোক্ত ছিল।
আরও পড়ুন: কয়েক কোটি টাকার প্রতারণা, সাত বছরের জেল গান্ধীজির প্রপৌত্রীর
নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলে তাঁকে বন্দুক দেখিয়ে থামানো হয় বলে অভিযোগ চোকসির। তাঁকে মারধরও করা হয়। তারপর তাঁর হাত পা বেঁধে একটি হুইল চেয়ারে বসিয়ে দেন ওই ৮-১০ জন লোক। ওখান থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। চোকসির দাবি, এ সব চোখের ঘটতে দেখেও চুপ করেছিলেন বারবারা, পুলিশকে ডাকার কোনও উদ্যোগ নেননি। মুখে কাপড় দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয় চোকসিকে। চোকসির এই দাবির সঙ্গে বারবার কথার কোনও মিলই নেই।
সম্প্রতি, কিউবা যাওয়ার পথে ডমিনিকায় ধরা পড়েন মেহুল চোকসি। বর্তমানে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। তাঁর আইনজীবীদের দাবি, তাঁকে তুলে আনার সময় আহত হয়েছেন চোকসি। হাসপাতাল থেকেই প্রত্যর্পণের মামলার শুনানিতেও তিনি অংশ নিয়েছেন ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে। চোকসিকে ভারতের হাতে তুলে দিতে চায় ডমিনিকাও। ভারত থেকে বিশেষ টিমও ডমিনিকা গিয়েছিল তাঁকে আনতে। কিন্তু আপাতত মেহুল চোকসিকে ফেরানো সম্ভব হয়নি ভারতে। তাঁকে আনতে ভারতীয় অফিসারদের যে টিম ডমিনিকায় পাঠানো হয়েছিল, শুক্রবার সেই টিম ভারতে ফিরে আসে। তাঁর মামলা আপাতত স্থগিত হয়ে গিয়েছে ক্যারিবিয়ান হাই কোর্টে। আগামী জুলাইতে আছে সেই মামলার শুনানি।