তিনি আরও বলেন, “আমাদের আর্থিক সঙ্কট কাটিয়ে বের করে আনতে হবে। জনতার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী ইস্তফা দিয়েছেন। ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য একটা গণতান্ত্রিক পদ্ধতি রয়েছে।”
কলম্বো: জনতার ক্ষোভের মুখে পড়েই প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়েছে বাবাকে। তাতেও সন্তুষ্ট নন দেশবাসী। ইস্তফার দাবি জানানো হয়েছে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষেরও। সেই দাবির বিরুদ্ধেই এবার মুখ খুললেন নমল রাজাপক্ষ। নিজের পরিবারের হয়ে তিনি বলেন, “দেশের প্রেসিডেন্টকে ছুড়ে ফেলা যায় না। এতে দেশের রাজনৈতিক সঙ্কট আরও গভীর হবে।” বিরোধী নেতাদের দোষারোপ করে তিনি বলেন, “দেশের চরম আর্থিক সঙ্কটের মুহূর্তেও বিরোধী নেতারা কোনও দায়িত্ব নিতে চাইছেন না।”
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে নমল রাজাপক্ষ বলেন, “যাঁরা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তাঁদের গণতান্ত্রিক পদ্ধতি সম্পর্কে বোঝা উচিত। আপনারা একজন প্রেসিডেন্টকে ছু়ড়ে ফেলে দিতে পারেন না। সরকার না থাকায়, ৪৮ ঘণ্টার জন্য় প্রেসিডেন্টকেই দায়িত্ব সামলাতে হয়েছে। যদি প্রেসিডেন্ট ইস্তফা দেন, তারপর কী হবে? আমাদের বিরোধী নেতারা যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা কোনও দায়িত্বই নিতে চান না। আমাদের সামনের রাস্তা স্পষ্ট।”
আর্থিক সঙ্কটের জেরেই বিগত দুই মাস ধরে আগুন জ্বলছে শ্রীলঙ্কায়। সাধারণ মানুষ সরকারের বিরুদ্ধেই পথে নেমেছেন। জনতার রোষের মুখে পড়েই গত ৯ মে মাহিন্দা রাজাপক্ষ প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন। রাজাপক্ষের ইস্তফার পরই সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারী জনতার সঙ্গে রাজাপক্ষ পরিবারের সমর্থকদের সংঘর্ষ বাধে। ওই ঘটনায় কমপক্ষে ৮ জনের মৃত্যু হয়, ২৫০ জন আহত হন। রাজাপক্ষের পৈত্রিক ভিটেতেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।
দেশ ছাড়ার জল্পনা নিয়ে নমল জানান, তাঁর পরিবার শ্রীলঙ্কা ছেড়ে যাবে না। সরকার সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে যে সংঘর্ষ হয়েছে, তার তদন্ত হোক বলেও জানান তিনি। উল্লেখ্য, গতকালই শ্রীলঙ্কার আদালত নির্দেশ দেয় যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষ, তাঁর ছেলে নমল রাজাপক্ষ ও ১৫ জন দেশ ছেড়ে যেতে পারবেন না। সোমবারের সংঘর্ষের ঘটনার তদন্তেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইন্ডিয়া টুডে-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নমল রাজাপক্ষ বলেন, “এই প্রথমবার আমাদের উপরে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল না। গতবার সরকারে থাকাকালীনও আমাদের উপর চারবার ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। আমাদের পালানোর কোনও পরিকল্পনা নেই। আমরা সাধারণ মানুষদের জন্য কাজ করতে চাই। এককভাবেই হোক বা পরিবার হিসাবে, হিংসা ছড়ানোর পিছনে আমাদের পরিবারের কোনও হাত নেই। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে। তদন্ত হোক, আমরা এটাই চাই।”