Afghanistan: থামছে না অবলার কান্না, বাড়ির ধ্বংসস্তূপে মৃত মালিককে খুঁজেই চলেছে পোষ্য কুকুর

Afghanistan Earthquake: গত বুধবার (২২ জুন), ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্পে তছনছ হয়ে গিয়েছিল আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে। এখানকার ওচকি গ্রামে এক সপ্তাহ পরও বাড়ির ধ্বংসস্তূপে মৃত মালিকদের খুঁজে চলেছে একটি কুকুর।

Afghanistan: থামছে না অবলার কান্না, বাড়ির ধ্বংসস্তূপে মৃত মালিককে খুঁজেই চলেছে পোষ্য কুকুর
ধ্বংসস্তূপের মধ্যে তন্ন তন্ন করে খুঁজে বেড়াচ্ছে তার ভালবাসার মানুষগুলোকে
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 28, 2022 | 4:22 PM

কাবুল: রোজই সে ফিরে ফিরে আসে তার বাড়ির সামনে। বাড়ি বলতে অবশ্য অবশিষ্ট কিছুই নেই। ভেঙে পড়ে আছে দেওয়াল, ছাদের অংশ, বেরিয়ে আছে লোহার রড। তা সত্ত্বেও ভাঙা দরজার ফাঁক দিয়ে ছোট্ট সাদা লোমশ কুকুরটি, রোজ সেই ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়ির ভিতরে ঢোকে। গন্ধ শুঁকে শুঁকে খুঁজে বার করার চেষ্টা করে তার পরিচিত মানুষগুলোকে। কিন্তু না। ভেঙে পড়া বাড়ির আনাচে কানাচে চেনা গন্ধগুলো এখনও থেকে গেলেও, মানুষগুলো আর নেই। এরপরই শুরু হয় তার কান্না। গত কয়েকদিন ধরে নিয়মিত এই হৃদয়বিদারক ঘটনার সাক্ষী হচ্ছেন আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশের গায়ান এলাকার ওচকি গ্রামের বাসিন্দারা।

গত বুধবার (২২ জুন), ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশ। বিশেষ করে গায়ান এলাকার প্রায় সব বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। এই বিপর্যয়ে অন্তত ১,০০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, আরও অন্তত ২,০০০ জন আহত হয়েছিলেন। অন্তত ১০,০০০ ঘরবাড়ি পুরো মাটিতে মিশে গিয়েছে। ওচকি গ্রামেও হাতে গোনা কয়েকটি পাকা বাড়ি ছাড়া, সব বাড়িঘরই ভেঙে গিয়েছে। এই ভেঙে পড়া বাড়িগুলির একটিতেই থাকত কুকুরটি এবং তার মালিকরা। ভূমিকম্প ওই পরিবারের সকল মানুষ সদস্যের প্রাণ কেড়েছে। একমাত্র রক্ষা পেয়েছে কুকুরটি।

পরিবারের সকল মানুষ সদস্যের মৃত্যু এখনও মেনে নিতে পারেনি কুকুরটি। গত সপ্তাহ পর্যন্তও যাদের সঙ্গে থাকত সে, খেলাধূলা করত, যারা তাকে খেতে দিত, তারা হঠাৎ কোথায় গেল? বুঝতেই পারছে না অবলা প্রাণীটা। মৃত পরিবারের প্রতিবেশীরা এখন কুকুরটির দেখাশোনা করছেন। খাবারও অভাব হচ্ছে না। কিন্তু, তার মন পড়ে আছে ওই বাড়িতেই। তাই, রোজ সে ফিরে ফিরে আসে ভেঙে পড়া বাড়িটিতে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে তন্ন তন্ন করে খুঁজে বেড়ায় তার ভালবাসার মানুষগুলোকে। শেষে হতাশ হয়ে শুরু করে কাঁদতে। যুদ্ধ ও ভূমিকম্প বিধ্বস্ত আফগানিস্তানে এখন উদ্ধার ও ত্রানের কাজ করছে ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি। এই সংস্থাতেই কাজ করেন সামিরা এসআর। তিনিই টুইটারে এই কুকুরটির কাহিনি ভাগ করে নিয়েছেন।

রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের যে তীব্রতা ধরা পড়েছিল, তাতে এই ভূমিকম্প অন্য কোনও জায়গায় হলে ক্ষতির পরিমাণ অনেক কম হত বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে, গত কয়েক দশক ধরে যুদ্ধ-বিগ্রহের মাঝে থাকা আফগানিস্তানে রাস্তাঘাট বা পরিকাঠামোর উন্নয়নের কোনও কাজই হয়নি বললে চলে। এতেই, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই বেড়েছে। তার উপর, গত বছর তালিবানরা ক্ষমতা পুনর্দখল করার পর অনেক দেশই আফগানিস্তানের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। তারা এই বিপর্যয়ে আফগানের পাশে দাঁড়াতে পারছে না। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।