মৃত্যুদণ্ডের অধ্যাদেশ এনেও বাংলাদেশে ধর্ষণ অব্যাহত, দাবি উঠছে আইন সংশোধনের

২০০০ সালে বাংলাদেশ সরকার ‘প্রিভেনশন অব উইম্যান অ্যান্ড চিলড্রেন রিপ্রেশন অ্যাক্ট’ কার্যকর করে, যেখানে স্পষ্ট বলা হয়, অপরাধ প্রমাণিত হলে এই ধরনের ঘটনায় অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।

মৃত্যুদণ্ডের অধ্যাদেশ এনেও বাংলাদেশে ধর্ষণ অব্যাহত, দাবি উঠছে আইন সংশোধনের
ছবি - ট্যুইটার
Follow Us:
| Updated on: Nov 23, 2020 | 9:51 AM

TV9 বাংলা ডিজিটাল: ধর্ষণের (Rape) সাজা মৃত্যুদণ্ড। এমন চরম শাস্তির নিদান থাকা সত্ত্বেও অপরাধ কমার কোনও লক্ষণ নেই। উল্টে বাংলাদেশে (Bangladesh) ধর্ষণের মতো অপরাধ (Sexual Violence) আরও বাড়ছে। সম্প্রতি আইন ও সালিশ কেন্দ্র প্রকাশিত একটি রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরে, জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গোটা বাংলাদেশে মোট ৯৭৫টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এদের মধ্যে ২০৮টি ঘটনাই গণধর্ষণের।

ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, লকডাউনে সবথেকে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন নারীরা। এপ্রিল থেকে আগস্ট – এই পাঁচ মাসেই ৬৩০টি ধর্ষণের অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে। যদিও সংশ্লিষ্টমহল মনে করছে, যে সংখ্যাটা নথিভুক্ত হয়েছে তার চেয়ে তিন গুণ বেশি ধর্ষণের ঘটনা এই সময়ে বাংলাদেশে ঘটেছে। আসল তথ্য দেওয়াই হয়নি, এমনও মনে করছেন সমাজকার্মীদের অনেকে। তবে এটা ঠিক, এখন নির্যাতনের শিকার হলে তা সামনে আসছে কারণ, নারী ও শিশুদের ওপর নির্যাতন রুখতে সরকারি তৎপরতা। ২০০০ সালে বাংলাদেশ সরকার ‘প্রিভেনশন অব উইম্যান অ্যান্ড চিলড্রেন রিপ্রেশন অ্যাক্ট’ কার্যকর করে, যেখানে স্পষ্ট বলা হয়, অপরাধ প্রমাণিত হলে এই ধরনের ঘটনায় অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।

এরপরও এতো এতো ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে কেন? সমাজকর্মীদের একাংশের বক্তব্য, আইন থাকলেও তা ত্রুটিমুক্ত নয়। সেকারণেই ধর্ষণের মতো নক্কারজনক অপরাধ ঘটিয়েও আইনের ফাঁকফোঁকর দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা।

গবেষক সুলতান মহম্মদ জাকারিয়া যেমন বলছেন, “যতক্ষণ না সরকার তার ফৌজদারি আইনের ত্রুটি সংশোধন করছে, ফাঁকফোঁকরগুলো চিহ্নিত করে পাকাপোক্ত সমাধান করছে, ততক্ষণ পর্যন্ত এর সামাজিক প্রভাব পড়বে না। ” আইনে পুরুষ এবং বৃহন্নলাদের ওপর ধর্ষণের বিষয়টি নথিভুক্ত নেই। এমনকি উল্লেখ নেই বৈবাহিক ধর্ষণের বিষয়টিও। এই সমস্ত বিষয় আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য জোরাল সওয়াল করেছেন গবেষক জাকারিয়া।

উল্লেখ্য,ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করা হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পর ১৩ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি করে হাসিনার আইনমন্ত্রক। ওই অধ্যাদেশে মৃত্যুদণ্ডকে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসাবে রাখা হয়েছে।