দু’দিন ধরে খাওয়া নেই, কোলের শিশু রাস্তার ধারে প্লাস্টিকে শোওয়ানো! এ এক অন্য যন্ত্রণার আফগানিস্তান
Afghanistan: ইরান, পাকিস্তান, তুর্কিমিনিস্তান সীমান্তে। কেউ ঢুকতে বাধা দিচ্ছে, কেউ আবা দূর দূর করে তাড়াচ্ছে।
কাবুল: তালিবানি কব্জায় আফগানিস্তান। এর আগেও তালিবানি রাজত্ব দেখেছে আফগানিস্তান। ফলে তালিবানের ফিরে আসা বাড়াচ্ছে পুরনো আতঙ্ক। শরণার্থী সঙ্কট। তালিবানের অত্যাচার শুরু হবে, এই আশঙ্কা থেকে এখনই দেশ ছাড়ার জন্য মরিয়া হাজার হাজার আফগান। কিন্তু তাঁরা কোথায় যাবেন? করোনাকালে সকলেরই ভাঁড়ারে টান। পাকিস্তানও যে কার্যত কাঙাল! কে কাকে খাওয়াবে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। যদিও কানাডা সরকার জানিয়েছে ২০ হাজার আফগানিকে আশ্রয় দেবে তাঁরা। কিন্তু বাকিদের কী হবে?
তালিবান-রাজে উদ্বাস্তু স্রোতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে আফগানিস্তানে। সীমান্ত পেরিয়ে অন্য দেশে যাওয়ার হিড়িক দেখা যাচ্ছে। ভিড় উপচে পড়ছে কাবুল বিমানবন্দরে। তালিবানি এই দখলদারিতে ‘বিপর্যয়ের সঙ্কেত’ মনে করছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।
আফগানিস্তান মানেই যুদ্ধ আর যুদ্ধ। যার জেরে আম আফগানিদের চোখে জল। ভিটে মাটি ছেড়ে মুহূর্তে শরণার্থী হয়ে যাওয়া। কখনও গ্রাম থেকে কাবুলে, কখনও কাবুল থেকে অন্য দেশে। এখন কাবুলের শিয়রে তালিবান। আর আফগানদের শিয়রে শমন। প্রাণটুকু বাঁচাতে সবাই পালাচ্ছেন। কিন্তু কোথা যাবেন? কে দেবে ঠাঁই? রাষ্ট্রপুঞ্জের পর্যবেক্ষণ খিদের জন্য লড়াই আরও ভয়ঙ্কর হবে। সামনে বিপর্যয়।
মাটিতে প্লাস্টিক পেতে শুয়ে আফগান শিশু। দু’দিন ধরে খাবার জোটেনি। বেচাল হলেই প্রাণ যাওয়ার জোগাড়। শরণার্থী থিক থিক করছে পড়শি দেশ লাগোয়া সীমান্তে। ইরান, পাকিস্তান, তুর্কিমিনিস্তান সীমান্তে। কেউ ঢুকতে বাধা দিচ্ছে, কেউ আবা দূর দূর করে তাড়াচ্ছে। ইউরোপ, আমেরিকাতেও উদ্বাস্তু স্রোত পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা। গ্রিস, জার্মানি, নেদারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম বিপদে পড়া আফগানদের দেশে জায়গা দেওয়া নিয়ে হাত তুলে নিয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের হিসাব বলছে সব থেকে বেশি বিপদে মহিলা ও শিশুরাই। মে মাসের শেষ থেকে অন্তত আড়াই লক্ষ আফগান দেশ থেকে পালিয়েছেন। এর মধ্যে ৮০ শতাংশই মহিলা ও শিশু।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কড়া বার্তা দিয়েছেন, মার্কিন কূটনীতিবিদ ও নাগরিকদের আফগানিস্তান থেকে সুরক্ষিত ভাবে ফিরিয়ে আনার জন্য পাঁচ হাজার সেনা পাঠানো হয়েছে। আমেরিকার এই উদ্যোগে যদি তালিবান কোনও বাধা দেয়, তাহলে ফল ভাল হবে না বলেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রনায়ক। মার্কিন স্টেট সেক্রেটারি অ্যান্টনি ব্লিনকিনও আফগান প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানি ও অন্যান্য আধিকারিকরদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সূত্রের খবর, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কাবুলে আমেরিকার দূতাবাস থেকে শীর্ষ আধিকারিক-সহ আমেরিকান কর্মীদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করছে। অন্যদিকে সংযুক্ত আমিরশাহি থেকে বিমান ‘EK640’ কাবুলে পৌঁছলেও বিমান বন্দরে অবতরণ না করেই ফিরে যায় বলে খবর। কান্দাহার বিমান বন্দরে ৫ হাজারের বেশি বিমান দখলে নিয়ে ফেলেছে তালিবানরা। আরও পড়ুন: হামলার ভয়ে বন্ধ করতে হল ব়্যাডার, কাবুল থেকে কখন দেশে ফিরবে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান?