বাগরাম জেলেরও দখল নিল তালিবান, গরাদ ভেঙে মুক্তি দেওয়া হল ‘সহযোদ্ধা’দের
বাগরাম জেলা প্রধান দারওয়াইস রৌফি জানিয়েছেন, এ দিন কাবুলে প্রবেশের পরই তালিবানরা বাগরাম জেল চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলে। নিরুপায় হয়েই আফগান সেনাকে পিছু হটতে হয়, বাগরাম জেল দখল নেয় তালিবানরা।
কাবুল: আফগান রাজধানীতে প্রবেশ করার পরই তালিবানিদের তরফে বার্তা দেওয়া হয়েছিল যে তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর চায়। কিন্তু বাস্তবে সম্পূর্ণ ভিন্ন পথই ধরেছে তালিবান সেনা (Talibans)। কাবুলে (Kabul) প্রবেশের পরই শহর থেকে ২৫ কিমি দূরে অবস্থিত বাগরাম জেল(Bagram Prison)-র দখল নিল তারা। মুক্তি দেওয়া হচ্ছে জেলবন্দিদের।
বাগরাম বিমানঘাঁটিতেই তৈরি করা হয়েছিল এই জেল। মূলত তালিবান যোদ্ধাদেরই দীর্ঘ সময় ধরে বন্দি করে রাখা হয়েছিল এই জেলে। এক সময়ে মার্কিন সেনার বৃহত্তম ঘাঁটিই বর্তমানে তালিবানদের দখলে চলে গিয়েছে। আফগানিস্তানে ন্যাটো বাহিনী থাকাকালীন এই বিমানঘাঁটি সম্পূর্ণরূপেই পরিচালিত করত মার্কিন সেনারা। তবে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের পরই আফগান সেনার হাতে গত ১ জুলাই এই জেলের দায়িত্ব তুলে দেয় মার্কিন সেনা।
বাগরাম জেলা প্রধান দারওয়াইস রৌফি জানিয়েছেন, এ দিন কাবুলে প্রবেশের পরই তালিবানরা বাগরাম জেল চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলে। নিরুপায় হয়েই আফগান সেনাকে পিছু হটতে হয়, বাগরাম জেল দখল নেয় তালিবানরা। প্রায় ৫ হাজার বন্দির সকলেই তালিবান ও ইসলামিক স্টেট জঙ্গি বলে জানা গিয়েছে। সকলকেই জেলের গরাদ ও তালা ভেঙে মুক্তি দিয়েছে তালিবানরা।
আফগান প্রশাসনের এক আধিকারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, কালাকানস কোয়ারাবাগ ও পাঘমান অঞ্চলের দখল নিয়েছে তালিবানরা। জোরপূর্বক কাবুলের দখল না নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় আপাতত শান্তিপূর্ণভাবেই ক্ষমতা হস্তান্তরের অপেক্ষায় রয়েছে তারা।
তালিবানের মুখপাত্র সুহেইল শাহিন একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমকে জানান, কাবুল তাদের দখলে চলে এসেছে। আপাতত ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে আফগান সরকারের সঙ্গে কথা চলছে। ঘানি প্রশাসনের কাছ থেকে কী ধরনের সমঝোতা চাইছে তালিবানরা, এই প্রশ্ন করা হলে তাঁর সাফ জবাব, সরকারকে সম্পূর্ণভাবেই আত্মসমর্পণ করতে হবে। ক্ষমতা ভাগাভাগিতে বিশ্বাসী নয় তালিবানরা।
ইতিমধ্য়েই জানা গিয়েছে, ইস্তফা দিয়েছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানি। কাবুলে রাষ্ট্রপতি ভবনে এসে পৌঁছেছে তালিবান প্রতিনিধিরা। কথা চলছে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের। এই অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমেই আগামিদিনে আফগানিস্তান শাসনের দায়িত্ব নেবে তালিবান, তবে এই ক্ষমতা হস্তান্তর কবে হবে, সে বিষয়ে এখনও স্পষ্টভাবে কিছু জানা যায়নি।
অন্যদিকে, তালিবানদের তরফে জানানো হয়েছে, তারা কোনও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চায় না। কাউকে শহর ছেড়েও যেতে হবে না। সকলকে বাড়িতেই থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আপাতত তালিবান সেনাদেরও শহরে ঢুকতে বারণ করা হয়েছে। আরও পড়ুন: দু’দিন ধরে খাওয়া নেই, কোলের শিশু রাস্তার ধারে প্লাস্টিকে শোওয়ানো! এ এক অন্য যন্ত্রণার আফগানিস্তান