অনুমতি ছাড়া দেওয়া যাবে না স্লোগান, প্রতিবাদ করতেও লাগবে তালিব সরকারের সম্মতি!

প্রতিবাদ কর্মসূচির কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা আগে মিছিলের যাবতীয় তথ্য নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গেও ভাগ করে নিতে হবে। যদি বিনা অনুমতিতেই কেউ মিছিল বের করে, তবে কোনও কিছু হলে তাঁর দায় আন্দোলনকারীদেরই নিতে হবে, এ ক্ষেত্রে সরকার দায়ী থাকবে না।

অনুমতি ছাড়া দেওয়া যাবে না স্লোগান, প্রতিবাদ করতেও লাগবে তালিব সরকারের সম্মতি!
নিজেদের অধিকারের দাবিতে কাবুলের পথে আফগান মহিলারা। ছবি:PTI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 09, 2021 | 8:42 AM

কাবুল: অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হতেই একের পর এক নতুন নিয়ম জারি করছে তালিবান (Taliban)। দ্বিতীয়বার আফগানিস্তান দখলের পরই যে হারে তালিবান বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছে, তাতে রাশ টানতেই নতুন সরকারের তরফে আন্দোেলন বা প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়েও নির্দেশিকা জারি করা হল। এ বার থেকে আফগানিস্তান(Afghanistan)-র পথে মিছিল বের করতে হলে আগে থেকে সরকারের অনুমতি নিতে হবে।

তালিবানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, সরকার যে মিছিল বা প্রতিবাদ কর্মসূচিগুলির অনুমতি দেবে, একমাত্র সেগুলিই করা যাবে। কবে, কখন, কোথায় মিটিং-মিছিল হবে, তা আগে থেকে সরকারকে জানাতে হবে। একইসঙ্গে মিছিলে কী কী স্লোগান দেওয়া হবে, তাও জানাতে হবে। যদি তালিব সরকার সেই স্লোগানে অনুমতি দেয়, তবেই সেই স্লোগান অনুসরণ করা যাবে। যদি কোনও নির্দেশ অমান্য করা হয়, তবে কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে।

প্রতিবাদ কর্মসূচির কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা আগে মিছিলের যাবতীয় তথ্য নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গেও ভাগ করে নিতে হবে। যদি বিনা অনুমতিতেই কেউ মিছিল বের করে, তবে কোনও কিছু হলে তাঁর দায় আন্দোলনকারীদেরই নিতে হবে, এ ক্ষেত্রে সরকার দায়ী থাকবে না।

তালিবান সরকারের এই নিয়মের কারণ হিসাবে মনে করা হচ্ছে যে, মঙ্গলবারই কাবুলের রাস্তায় মিছইল ঘিরে গুলিচালনা ও সাধারণ মানুষের মৃত্যুর জেরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবারের ওই মিছিলে পাকিস্তান ও আইএসআইয়ের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া হচ্ছিল। আন্দোলনকারীরা কাবুলের সেরেনা হোটেলের দিকেই যাচ্ছিল, যেখানে আইএসআই ডিরেক্টর লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফইজ হামিদ থাকছিলেন। সেই মিছিল পণ্ড করতেই প্রেসিডেন্ট প্যালেসের সামনে শূন্যে গুলি চালায় তালিবানরা। এক শিশু সহ বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে।

এর আগেও গত ৭ সেপ্টেম্বর বাল্খ প্রদেশেও মহিলারা সরকারে নিজেদের স্থানের দাবি করে পথে মিছিল বের করেন। পারওয়ান ও বাদাখিস্তান প্রদেশেও এই ধরনের একাধিক প্রতিবাদ মিছিল বের হচ্ছে তালিব শাসকদের বিরুদ্ধে।

তালিবানের দাবি, বিনা অনুমতিতেই মিছিল, বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করৈয় যে কোনও সময়ে বিপর্যয় ঘটতে পারে। সেক্ষেত্রে সরকারের নামেই দোষ পড়বে। এই ধরনের ঘটনা এড়াতেই প্রতিবাদ মিছিল বের করার আগে তার যাবতীয় তথ্য় সরকারকে জানাতে বলা হয়েছে। বুধবারের বিবৃতিতে এও জানানো হয়েছে যে, নিয়ম ভঙ্গ করা হলে আইনি পদক্ষেপের মুখে পড়তে হবে আন্দোলনকারীদের।

উল্লেখ্য,  মিটিং মিছিল করার এই অনুমতি দেবেন সিরাজুদ্দিন হাক্কানি, যিনি গোটা বিশ্বের কাছে সন্ত্রাসবাদী হিসাবেই পরিচিত। আল কায়েদার সঙ্গে তাঁর যোগ রয়েছে  বলেও জানা যায়। আপাতত হাক্কানি গোষ্টীর প্রধান এই সিরাজুদ্দিনের বাবা জালালুদ্দিন হাক্কানিই এই জঙ্গি গোষ্ঠীটি তৈরি করেছিলেন। তিনিও এফবিআইয়ের ওয়ান্টেড তালিকায় রয়েছেন। ২০০৮ সালে প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির উপর হামলার পরিকল্পনা করার অভিযোগও উঠেছিল সিরাজুদ্দিনের বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুন: ‘আসল শরিয়া আইন অনুসরণ করুক’, তালিবদের ‘জনদরদী’ বানাতে বিশেষ পরামর্শ মুফতির

আরও পড়ুন: ‘জীবনের সবথেকে কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল’, বিপদের মুখে দেশবাসীকে ছেড়ে পালানোর সাফাই দিলেন ঘানি