Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘আপনারা আমাদের মা, বোন’, তালিবানের আশ্বাস শুনে হতচকিত মহিলা চিকিৎসকরা

বাসিন্দাদের অভিযোগ, জোর করে বাড়িতে ঢুকে পড়ছে তালিবানরা। পশ্চিম কাবুলে এক প্রাক্তন সরকারি আধিকারিকের বাড়িতে ঢুকে তাঁর বাড়ি দখল করে নেওয়া হয় ও যাবতীয় গাড়ির চাবিও কেড়ে নেওয়া হয়।

'আপনারা আমাদের মা, বোন', তালিবানের আশ্বাস শুনে হতচকিত মহিলা চিকিৎসকরা
চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলছেন তালিবান প্রতিনিধিরা।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 17, 2021 | 10:53 AM

কাবুল: ”এই বুঝি প্রাণ যায়”, প্রাণভয়ে সবাই কাঁপছেন, সেই সময়ই কাবুল(Kabul)-র হাসপাতালে হাজির হলেন তালিবানের আধিকারিক তথা প্রতিনিধি আব্দিল হামিদ হামাসি (Abdul Hamid Hamasi)। মহিলা চিকিৎসকদের বিধা বাধায় কাজ চালিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিলেন তিনি। ইতিমধ্য়েই সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

মার্কিন সেনা প্রত্য়াহার সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই ২০ বছর পুরনো চিত্র দেখা দিয়েছে আফগানিস্তানে (Afghanistan)। একের পর এক শহর দখলের পর আফগান প্রশাসনের হাতে কেবল পড়েছিল কাবুল, রবিবার সেটিও দখল করে তালিবানরা। ইস্তফা দিয়েই দেশ ছেড়ে পালান প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানি। এরপরই শুরু হয় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া। সোমবারেই রাষ্ট্রপতি ভবনের দখল নিয়েছিল তালিবানরা, সেখানে তাদের উল্লাসের চিত্রও ধরা পড়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োয়। এছাড়াও শহরের নানা প্রান্তেও দেখা যায় একই চিত্র, তালিবান নেতাদের হাতে ক্ষমতা তুলে দিচ্ছেন আফগান আধিকারিকরা।

ইতিমধ্যেই প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই জানিয়েছেন, তিনি অন্যান্যয় রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে একটি কাউন্সিল গঠন করেছেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তাব দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি রাষ্ট্রপ্রধানের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বাহিনীর প্রধানকে অনুরোধ করেছেন তিনি যেন রাষ্ট্রপতি ভবনেই মোতায়েন থাকেন এবং কোনও সামগ্রীর ক্ষয়ক্ষতি না হয়, সেইদিকটি নিশ্চিত করেন।

সোমবারই যেখানে কাবুল বিমানবন্দরে চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, মার্কিন বাহিনী ও তালিবানের মধ্যে গুলি চালনার ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যু হয়, সেই সময়ই শহরের হাসপাতালে আহত ও অসুস্থ রোগীদের দেখতে পৌছে যান তালিবান প্রধান আব্দুল হামিদ হামাসি। ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োয় দেখা যায়, সেখানে তাঁকে দেখে সকলেই ভীত সন্ত্রন্ত হয়ে পড়লেও তিনি মহিলা চিকিৎসকদের আশ্বাস দিচ্ছেন তাদের কোনও ক্ষতি হবে না এবং তারা যেন নিশ্চিন্তভাবে কাজ চালিয়ে যান। তিনি চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা আমাদের মা-বোনের মতো। আপনাদের আমরা সম্মান করি। ভয়ের কোনও কারণ নেই, আপনাদের কোনও ক্ষতি হতে দেব না আমরা।”

অন্যদিকে, গতকালই তালিবানদের তরফে দখল নেওয়া শহরগুলির বর্তমান চিত্র কেমন, তা তুলে ধরা হয়। গত ৮ অগস্ট দখল নেওয়া কুন্দুজ শহরে দেখা যায়, প্রতিটি জায়গায় চেক পয়েন্ট বসানো হয়েছে। এছাড়াও বাড়ি বাড়ি গিয়ে সরকারি কর্মীদের খোঁজ চালানো হচ্ছে, দ্রুত কাজে না ফিরলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলেও জানানো হয়েছে তাদের।

একাধিক শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, জোর করে বাড়িতে ঢুকে পড়ছে তালিবানরা। পশ্চিম কাবুলে এক প্রাক্তন সরকারি আধিকারিকের বাড়িতে ঢুকে তাঁর বাড়ি দখল করে নেওয়া হয় ও যাবতীয় গাড়ির চাবিও কেড়ে নেওয়া হয়। দেশের অন্যান্য প্রান্তগুলি থেকেও খবর মিলছে আমেরিকান ও সরকারের সমর্থকদের খোঁজে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালাচ্ছে তালিবানরা।

তালিবানরা মুখে নারী শিক্ষা ও সুরক্ষার কথা বললেও কাবুল দখলের পরই দেখা যায়, বোরখাহীন যাবতীয় মহিলার পোস্টার, ছবি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে বা সাদা রঙ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। জনসমক্ষে খুন হওয়ার ভয়ে বোরখার দোকানগুলিতেও মহিলাদের লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে।

পুলিশ অফিসারদের অবস্থাও শোচনীয়। অনেককেই যেখানে তালিবানের কাছে আত্মসমর্পণ করতে দেখা যায়, সেখানেই অনেকে আবার সাধারণ পোশাকে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছেন। তাদের কথা একটাই, সরকারি কর্মচারী, বিশেষত পুলিশ জানতে পারলে মেরে ফেলবে তালিবানিরা। যদিও তালিবানরা বারংবার বার্তা দিয়ে এসেছে, সাধারণ নাগরিকের উপর কোনও রূপ আক্রমণ করা হবে না। আরও পড়ুন: ‘কোনওদিনই সেনা প্রত্যাহারের সঠিক সময় আসত না’, রুক্ষস্বরে পাশে থাকার বার্তা বাইডেনের