৩১ অগস্টই ‘শেষ কথা’, এরপর কাউকে ছাড়বে না তালিবান! প্রশ্নের মুখে হিন্দু-শিখদের ভবিষ্যৎ
৩১ অগস্ট পর্যন্ট ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছে এই চরমপন্থী সংগঠন। এই সময়ের মধ্যেই সবাইকে দেশ ছাড়তে হবে, এবং বিমানবন্দর খালি করে তাদের হাতে তুলে দিতে হবে, নির্দেশ এমনটাই।
কাবুল: যতই সংশোধিত আচরণ দেখানোর চেষ্টা করুক না কেন, তালিবান যে আসলে খুব একটা বদলায়নি, তা ক্রমশ পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। সোমবারই তালিবানি মুখপাত্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, যদিও কোনও আফগান দেশ ছেড়ে যেতে চান, তবে নথিপত্র থাকলে তাঁদের বাধা দেওয়া হবে না। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে আগের অবস্থান বদলে ফেলল তালিবান। মঙ্গলবার নতুন জানানো হয়েছে, কোনও আফগান নাগরিক, বিশেষত যারা নিজেদের কাজের ক্ষেত্রে ‘গুণী’, তাঁদের ছাড়া যাবে না। আমেরিকা বা অন্যান্য দেশও যেন তাঁদের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা না করে। তালিবানের নতুন ফতোয়ার জেরে দেশ ছাড়তে চাওয়া আফগান, বিশেষ করে হিন্দু-শিখদের ভবিষ্যৎ এখন প্রশ্নের মুখে।
৩১ অগস্ট পর্যন্ট ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছে এই চরমপন্থী সংগঠন। এই সময়ের মধ্যেই সবাইকে দেশ ছাড়তে হবে, এবং বিমানবন্দর খালি করে তাদের হাতে তুলে দিতে হবে, নির্দেশ এমনটাই। কিন্তু এত অল্প সময়ের মধ্যে কী ভাবে অন্যান্য দেশ নিজেদের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনবে, যারা আফগানিস্তানে থাকতে চান না তাঁরাই বা কী ভাবে ফিরে যাবেন! এই সব প্রশ্নের উত্তর আপাতত অন্ধকারে। মঙ্গলবারই নতুন করে তালিবানের পক্ষ থেকে এক সাংবাদিক বৈঠক করে জানানো হয়, “আমেরিকা আমাদের দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার-সহ অন্যান্য পেশার মানুষদের নিয়ে চলে যাচ্ছে। আমরা অবিলম্বে এটা বন্ধ করতে বলেছি।”
পাশাপাশি এই জঙ্গি গোষ্ঠী আরেকবার স্পষ্ট করেছে আরেকটি বিষয়। তা হল- আমেরিকা বা ব্রিটেন যতই আবেদন-নিবেদন করুক না কেন, ৩১ অগস্টের পর ডেডলাইন আর বাড়ানো হবে না। কাবুল থেকে ফিরতে চাইলে ওটাই শেষ দিন। এরপর যারা থেকে যাবেন, তাঁরা আদৌ ফিরে আসতে পারবেন কি না, সেটাই এখন বিরাট বড় প্রশ্নচিহ্ন খাড়া করে দিয়েছে। ভারত সরকার যদিও আফগানি হিন্দু এবং শিখদের এই দেশে আশ্রয় দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু ৩১ অগস্টের পর তালিবান যদি তাদের ছাড়তে না চায়, তখন কী হবে কেউই বলতে পারছেন না।
তালিবানি মুখপাত্র জাবিহুল্লা মুজাহিদের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার বলা হয়, আমেরিকার কাছে বিমান, বিমানবন্দর, সেনা সবকিছু রয়েছে। তাই তাদের ৩১ অগস্টের মধ্যে নিজেদের নাগরিক ও কর্মীদের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত। হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর, মার্কিন রাষ্ট্রপতিও ৩১ অগস্টের মধ্যেই উদ্ধারকাজ সম্পূর্ণ করার বিষয়ে আশাবাদী। কিন্তু ব্রিটেন এবং ইউরোপের সহকারি দেশগুলি থেকে চাপ আসছে ডেডলাইন বৃদ্ধি করার জন্য।
গত ১৫ অগস্ট তালিবানি জঙ্গিরা কাবুলের দখল নেওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ৫০ হাজার আফগান এবং অন্যান্য দেশের নাগরিকরা কাবুল ছেড়ে পালিয়েছেন। আমেরিকার তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে। বেশিরভাগ আফগান নাগরিকদের ভয়, তালিবানি রাজত্বে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সার পর্যন্ত চলা শরিয়া আইনের সেই অন্ধকার সময় ফিরে আসবে। সেই কারণে আফগানিস্তানের শহুরে নাগরিকদের বড় অংশ থাকতে চাইছেন না নিজেদের দেশে। আরও পড়ুন: কাবুলে মার্কিন নিরাপত্তা অধিকর্তার সঙ্গে তালিবানি শীর্ষ নেতার গোপন বৈঠক! কী নিয়ে আলোচনা?