Bangladesh: মহম্মদ ইউনুসকে হাসিনা বলতেন, ‘গরিবের রক্তচোষা’, কে এই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ?

Bangladesh: চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ৬ মাসের জেলের শাস্তি দেওয়া হয়েছিল মহম্মদ ইউনুসকে। মার্চ মাসে জামিন পেয়ে যান তিনি। শ্রম আইন ভাঙার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এছাড়া ২০ লক্ষ মার্কিন ডলার আত্মসাৎ করার অভিযোগেও জেল হয়েছিল তাঁর।

Bangladesh: মহম্মদ ইউনুসকে হাসিনা বলতেন, 'গরিবের রক্তচোষা', কে এই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ?
মহম্মদ ইউনুসImage Credit source: Facebook
Follow Us:
| Updated on: Aug 09, 2024 | 4:41 PM

বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, হাসিনার পর কে? আন্দোলনকারী ছাত্রদের একাংশ চাইছে, নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনুস ফিরে আসুন বাংলাদেশে, দায়িত্ব নিন রাষ্ট্রের। অর্থনীতিবিদ ইউনুসকে উপদেষ্টা হিসেবে রেখেই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হোক, এমন দাবিই জানাচ্ছেন ছাত্রদের একাংশ। ইউনুসের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে বলেও জানা যাচ্ছে। বিশ্বের কাছে তিনি ‘গরিবের ব্যাঙ্কার’, কিন্তু হাসিনা সরকারের সঙ্গে তাঁর বিরোধ ছিল চরমে।

অর্থনীতিতে নতুন দিশা দেখান মহম্মদ ইউনুস

১৯৪০ সালে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে জন্ম মহম্মদ ইউনুসের। অর্থনীতিবিদ হিসেবে সমাজে তাঁর বিশেষ অবদান রয়েছে। গ্রামীণ ব্যাঙ্ক তৈরি করে ক্ষুদ্র ঋণের পরিচিতি দেওয়ার জন্য ২০০৬ সালে ‘নোবেল শান্তি পুরস্কার’ পান তিনি। যাঁরা সাধারণ ব্যাঙ্ক থেকে ঋণের সুবিধা নিতে পারেন না, তাঁরা যাতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেন, তার জন্য এই ক্ষুদ্র ঋণের পথ প্রথম দেখান তিনিই। তাই সমাজে তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য।

নোবেল ছাড়াও একাধিক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মহম্মদ ইউনুসের ঝুলিতে

শুধুমাত্র ‘নোবেল শান্তি পুরস্কার’ নয়, ২০০৯ সালে ‘ইউনাইটেড স্টেটস প্রেসিডেন্সিয়াল মেডাল অব ফ্রিডম’ পান ইউনুস, ২০১০-এ পান ‘কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডাল’। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ক্রমে পরিচিতি বেড়েছে তাঁর। বিভিন্ন দেশের সরকার, বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও এনজিও-র সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি।

বিদেশে পিএইচডি-র পর দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেন ইউনুস

বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন মহম্মদ ইউনুস। পরে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করতে পাড়ি দেন বিদেশে। পিএইচডি ডিগ্রি পাওয়ার পর বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন তিনি। পরবর্তীতে বাংলাদেশে ফেরেন ইউনুস। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন। এছাড়া স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো ইউনিভার্সিটিতে চার বছর ধরে চান্সেলর পদেও ছিলেন তিনি।

কেন জেলে যেতে হয়েছিল মহম্মদ ইউনুসকে?

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ৬ মাসের জেলের শাস্তি দেওয়া হয়েছিল মহম্মদ ইউনুসকে। মার্চ মাসে জামিন পেয়ে যান তিনি। শ্রম আইন ভাঙার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এছাড়া ২০ লক্ষ মার্কিন ডলার আত্মসাৎ করার অভিযোগেও জেল হয়েছিল তাঁর। বাংলাদের গ্রামীন টেলিকমের উন্নয়ন তহবিল থেকে ওই টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে, নাম জড়ায় তাঁর।

বিচার নাকি ষড়যন্ত্র?

জেল হওয়ার পর মহম্মদ ইউনুস দাবি করেছিলেন, বিচারের নামে প্রহসন হয়েছে। আইনি পদ্ধতি মেনে রায় ঘোষণা হয়নি বলেও দাবি করেন তাঁর আইনজীবী। মহম্মদ ইউনুস তাঁর বিবৃতিতে বলেছিলেন, ‘কোনও যুক্তিকে মান্যতা না দিয়েই আমার বিরুদ্ধে রায় দেওয়া হল। মানবাধিকার আর গণতন্ত্রের জন্য মুখ খুলুন সবাই।’

গরিব মানুষের অর্থের সংস্থান করে দেওয়ার জন্য যিনি একের পর এক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে কড়া মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে শেখ হাসিনাকেও। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি মহম্মদ ইউনুসকে ‘গরিবের রক্তচোষা’ বলে মন্তব্য করেছিলেন।

ইউনুসের জন্য চিঠি লিখেছিলেন ওবামা থেকে হিলারি

বিচারের নামে নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনুসের উপর হেনস্থা বন্ধ করা হোক। এই অনুরোধ এসেছিল বিদেশ থেকে। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছিলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, প্রাক্তন মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট হিলারি ক্লিন্টন প্রমুখ।

হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে কী বলেছিলেন মহম্মদ ইউনুস?

জেল মুক্তির পর হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে বারবার মুখ খুলেছেন মহম্মদ ইউনুস। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্ট বলেছিলেন, বাংলাদেশ এখন একদলীয় রাষ্ট্র। রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা মুছে ফেলা হয়েছে। রাজনৈতিক পরিবেশ যে বাংলাদেশে আবার কখনও ফিরবে, সেই আশাই ছেড়ে দিয়েছিলেন ইউনুস। এবার তাঁকেই বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে চাইছেন আন্দোলনকারী ছাত্ররা।