Budget 2022 : ‘অন্তঃসারশূণ্য বাজেট,’ মঙ্গলের বাজেটের খুঁত ধরলেন রাজ্যের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র

Amit Mitra : আজ সংসদে বাজেট পেশ করলেন সীতারমন। সেই বাজেটের খুঁত ধরলেন রাজ্যের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র।

Budget 2022 : 'অন্তঃসারশূণ্য বাজেট,' মঙ্গলের বাজেটের খুঁত ধরলেন রাজ্যের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র
ফাইল ছবি (সৌজন্যে : ANI টুইটার)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 01, 2022 | 4:49 PM

নয়া দিল্লি : মঙ্গলবার সংসদে বাজেট পেশ করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। তবে এই বাজেট দেশের জনগণের জন্য কতটা মঙ্গলময় হবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন বিশিষ্ট মহল। এই বছরের বাজেটে মহিলা, প্রান্তিক নাগিরক ও দরিদ্রের দিকে নজর দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। তবে বাজেট পেশের পর থেকেই সমালোচনায় সরব হয়েছেন একাধিক অর্থনীতিবিদ ও বিভিন্ন রাজনীতিবিদরা। এই আবহে পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা তথা রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র মঙ্গলের এই বাজেট ঘিরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কটাক্ষ করেন।

অমিত মিত্র জানিয়েছেন, বিভিন্ন মহল বিভিন্ন জিডিপি পরিসংখ্যানের কথা বলেছে। কোনটা ধরে এগোনো হবে তা নিয়ে বিভ্রান্তি হয়েছে। তিনি বলেছেন, “ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বলেছে এই অর্থবর্ষে জিডিপি হবে ৭.৮ শতাংশ বা তারও কম। কিন্তু বাজেট বলছে ভারতীয় অর্থনীতির ৯.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। তাঁরই প্রকাশিত আর্থিক সমীক্ষা বলছে প্রবৃদ্ধি হবে ৮-৮.৫ শতাংশ। স্বভাবতই এতে আমরা বিভ্রান্ত। তাই কোন পরিসংখ্যানটাকে আমরা বিবেচনা করব? বাজেটের পরিসংখ্যান নাকি মাননীয়ার মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টার প্রকাশিত আর্থিক সমীক্ষা নাকি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যানকে নেবেন।”

তিনি আরও বলেছেন, “মোট রপ্তানি কমতে শুরু করেছে। তবে তিনি এই বিষয়ে কোনও আলোকপাত করেননি। কীভাবে রপ্তানির পরিমাণ বাড়বে। একটা-দুটো সেক্টরের কথা বলেছেন মাত্র।” জিডিপি প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের ধার এবং জিডিপির হার ২০১৮-১৯ সালে ছিল ৪৫.৭ শতাংশ। সেটা এখন হয়েছে ৬০ শতাংশ। অথচ কী করে সেই ধারের বোঝা কমানো যায় সেই সংক্রান্ত কোনও বক্তব্য নেই বাজেটে। ” ধার প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “আমাদের বহির্বিশ্বের কাছে যে ধার রয়েছে তা এখন ৬০০ বিলিয়ন ডলার হয়ে গিয়েছে। ভারতীয় টাকায় ৪৪.৭ লক্ষ কোটি টাকা ধার। ” তিনি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে আক্রমণ করে জানিয়েছেন, কীভাবে বিশ্বের ভারতের ধারকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে সেই বিষয়ে বাজেটে ব্যাখ্যা করা উচিত ছিল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর। এই বাজেটে বেকারত্ব নিয়ে সরাসরি কিছু পদক্ষেপের কথা বলা হয়নি এই বাজেটে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তিনি বলেছেন, “তিন কোটি জনগণ যে বেকার সেটা স্বীকার করুন। মুদ্রাস্ফীতির কোনও ব্য়াখ্যা নেই। ধার এবং জিডিপির অনুপাত নিয়ে কোনও উত্তর নেই। ”

অমিত মিত্র বলেছেন, “গ্রামীণ ভারতের ঘরগুলিতে ১৭ শতাংশ মানুষের ঘরে ট্যাপ ওয়াটার যায়। উনারা বলছেন জল দেব, জল দেব। কিন্তু পরিসংখ্য়ান কোথায়? সবার ঘরে জল দেওয়ার জন্য তো বরাদ্দও চাই। রাজ্য যে কেন্দ্রের স্পনসর্ড স্কিম পায় তাতে কোনও পরিমাণ বাড়ানো হয়নি। কোনও নতুন স্কিম নেই। বাজেটে কোনও সামাজিক সুরক্ষার স্কিম নেই। বয়স্ক মানুষদের জন্য কোনও স্কিম বাজেটে নেই। কোভিডে মৃতদের জন্য কোনও স্কিম নেই। গ্রামের মানুষদের জন্য খেতমজুর থেকে আয় বা স্কিমের সম্পর্কে কোনও ঘোষণা নেই। বেতনভুক্ত মধ্যবিত্তদের মধ্যে ২.১ কোটি চাকরি হারিয়েছেন। বেতনভুক্ত মধ্যবিত্তদের জন্য়ও কোনও স্কিমের ঘোষণা নেই।”

MGNREGA নিয়ে তিনি বলেছেন, “এইবারের বাজেটে ১০০ দিনের কাজের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৭৩,০০০ কোটি। কিন্তু গত বছর এই বরাদ্দ ছিল ৯৮,০০০ কোটি। কেউ সেটা খেয়াল করেননি। চুপচাপ করে এই বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে যাতে লোকে বুঝতে না পারে। অর্থাৎ, ৩ কোটি বেকারদের মধ্যে যেখানে কেউ কেউ গ্রামে ১০০ দিনের কাজ করতে পারত সেখানেও বাজেট কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাজেট বক্তৃতায় এর কোনও উল্লেখ নেই। বাজেটের নথিপত্র ঘেটে তা বের করতে হচ্ছে আমাদের। ” তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, মহিলা, যুব, প্রান্তিক মানুষ, দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত- কারোর জন্যই এই বাজেটে কোনও ঘোষণা নেই। এই বাজেট কার জন্য? একেবারে অন্তঃসারশূণ্য, চিন্তাহীন বাজেট এটি। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী একদম ঠিক কথাই বলেছেন, এই বাজেটের কোনও তাৎপর্য নেই।

আরও পড়ুন : Budget 2022: রাসায়নিকে ‘না’, প্রযুক্তি নির্ভর কৃষি সহ একগুচ্ছ ঘোষণা নির্মলার