১ বছরেই বন্ধ হয়েছে হাজারের বেশি এটিএম, আগামিদিনে পাবেন কি এই পরিষেবা?
দেশজুড়ে ক্রমশ কমছে এটিএমের সংখ্যা। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক তাদের অধিকাংশ এটিএম-ই বন্ধ করে দিচ্ছে। মাত্র তিন মাসেই স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া গোটা দেশজুড়ে তাদের মোট ৮৭৩টি এটিএম বন্ধ করে দিয়েছে। সম্প্রতি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যানে এই তথ্য উঠে এসেছে।
রাহুল চক্রবর্তী: সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন এসেছে। এখন আর ন্যূনতম পরিষেবার পাওয়ার জন্য ব্যাঙ্কে গিয়ে হত্যে দিতে হয় না। বরং খোদ গ্রাহকের দুয়ারে পৌঁছে যাচ্ছে ব্যাঙ্ক। আর ব্যাঙ্কিং পরিষেবার ক্ষেত্রে এটিএম-র ভূমিকা ও গুরুত্বও দিন দিন বাড়ছে। তবু ভারতে ক্রমশ কমছে এটিএমের সংখ্যা! এমনই তথ্য সামনে এসেছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক(RBI)-র প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে। আরবিআই-র তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে দেশজুড়ে এক হাজারের বেশি বিভিন্ন ব্যাঙ্কের এটিএম বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে বৃহত্তম ব্যাঙ্কিং প্রতিষ্ঠান স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (SBI) একেবারে উপরের সারিতে রয়েছে।
রি়জার্ভ ব্যাঙ্কের সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, গত সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে দেশে মোট এটিএমের সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৩৪ হাজার ২৪৪। ডিসেম্বরে তা কমে দাঁড়ায় ২ লাখ ৩৩ হাজার ৬৬-তে। অর্থাৎ, মাত্র তিন মাসের মধ্যে হাজারেরও বেশি এটিএমের ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে। করোনা মহামারী বিভিন্ন ক্ষেত্রের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। ব্যতিক্রম নয় এটিএম পরিষেবাও। এই কারণেই এটিএম পরিচালনার ব্যবস্থাকে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক করে তুলতে ইউজার ফি বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে। যদিও এই বিষয়ে এখনও দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের তরফে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়নি।
৩ মাসেই বন্ধ স্টেস্ট ব্যাঙ্কের ৮৭৩টি এটিএম!
গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে দেশজুড়ে যে সংখ্যক এটিএম বন্ধ হয়েছে, তার মধ্যে অধিকাংশই স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার (SBI)। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে এসবিআই-র মোট ৫৮ হাজার ৭৫৬২টি এটিএম ছিল। ডিসেম্বরে তা কমে দাঁড়ায় ৫৭ হাজার ৮৮৯-এ। বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলির মধ্যে অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক(Axis Bank) সবথেকে বেশি সংখ্যক এটিএম পরিচালনা করে। দেশজুড়ে মোট ১৭ হাজার ২৫৪টি এটিএম রয়েছে। এর পরেই রয়েছে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক (ICICI Bank) এবং এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক(HDFC Bank)-র নাম। বর্তমানে দেশে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের ১৭ হাজার ২৪৬টি এবং এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের ১৪ হাজার ৪৭৭টি এটিএম রয়েছে।
আগামিদিনে কি আরও এটিএম বন্ধ হবে?
বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা মহামারীর কারণে দেশজুড়ে লকডাউন ছিল। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এটিএমে গ্রাহকের আনাগোনা তলানিতে এসে ঠেকেছিল। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ফের গ্রাহকরা এটিএমে আসতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের পরে ফের একবার পরিস্থিতি বদলে যাচ্ছে। আবারও এটিএমে গ্রাহকদের সংখ্যা কমতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কি ব্যাঙ্কগুলি এটিএমের সংখ্যায় কোপ বসাতে পারে, এই সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: করোনার কামড়ে বাজারে বড় ধস, মুখ থুবড়ে পড়ল দুই সূচক