Term Insurance: কম বয়সে, চাকরি জগতে পা রাখার সঙ্গেসঙ্গেই টার্ম ইনসিওরেন্স কেনা বুদ্ধিমানের কাজ, জেনে নিন কেন…

Term Insurance: যদি আপনি কোনও ঋণ নিয়ে থাকেন তবে আপনার অকস্মিক মৃত্যুর পরে বাকি টাকা আর আপনার পরিবারের সদস্যদের মেটাতে হবে না। টার্ম ইনসিওরেন্সের টাকা থেকেই তিনি তা মিটিয়ে দিতে পারবেন।

Term Insurance: কম বয়সে, চাকরি জগতে পা রাখার সঙ্গেসঙ্গেই টার্ম ইনসিওরেন্স কেনা বুদ্ধিমানের কাজ, জেনে নিন কেন...
টার্ম ইনসিওরেন্সের খুঁটিনাটি (প্রতীকী ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 23, 2021 | 12:05 AM

সদ্য একটি তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানিতে চাকরি পেয়েছেন হুগলির বিশ্বজিৎ। তাঁর পারিবারিক আর্থিক উপদেষ্টা এবার একটি টার্ম ইনসিওরেন্স করার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু বিশ্বজিৎ একেবারেই রাজি নয়। তাঁর সাফ কথা, এখনও বিয়ে করিনি। পরিবারের দায়দায়িত্ব নেই। তাহলে অহেতুক টার্ম ইনসিওরেন্স কিনে কী করব!

আপনার ভাবনাও যদি বিশ্বজিতের মতো হয়, তবে তা বদলের সময় এসেছে। অন্তত এমনই মনে করেন ট্যাক্স ও ইনভেস্টমেন্ট বিশেষজ্ঞ বলবন্ত জৈন। তাঁর মতে, এখন আপনার উপরে কোনও দায়িত্ব না থাকার মানে এই নয় যে ভবিষ্যতে এই দায়িত্ব আপনার কাঁধে পড়বে না। কিন্তু তখনও যে আপনি এত কম টাকায় টার্ম ইনসিওরেন্স কিনতে পারবেন, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। তাই এখন টার্ম ইনসিওরেন্স কেনা সঠিক সিদ্ধান্ত।

যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সবাইকে টার্ম ইনসিওরেন্স কেনার পরামর্শ দিয়ে থাকেন আর্থিক বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু কেন? এর কারণ জানতে আপনাকে ইনসিওরেন্স প্রিমিয়ামের হিসেব বুঝতে হবে। যদি আপনি ২৫ বছর বয়সে ৫০ লক্ষ টাকার টার্ম ইনসিওরেন্স কিনতে চান যেটি ৭০ বছর পর্যন্ত আপনাকে সুরক্ষা দেবে তার জন্য আপনাকে প্রিমিয়াম বাবদ দিতে হবে বছরে ৬ হাজার ৫৮৬ টাকা। কিন্তু যদি আপনি ২৫ পরিবর্তে ৩৫ বছর বয়সে ওই ৫০ লক্ষ টাকা কভারেজের একটি টার্ম ইনসিওরেন্স কেনেন যেটি ৬০ বছর পর্যন্ত কভার করবে তার জন্য আপনাকে প্রিমিয়াম বাবদ দিতে হবে বছরে ১১ হাজার ২২৫ টাকা।

ক্রমবর্ধমান পরিবেশ দূষণ এবং অনিয়মিত জীবনযাত্রার ফলে কে, কবে অসুস্থ হয়ে পড়বেন, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। আর করোনা সঙ্কট দেখিয়ে দিয়েছে, এমন মারণ রোগের ছোবল থেকে তরুণরাও সম্পূর্ণ সুরক্ষিত নয়। যদি আপনি কোনও রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তবে আপনার টার্ম ইনসিওরেন্স কিনতে সমস্যা হতে পারে। সেইসঙ্গে গুণতে হতে পারে বেশি প্রিমিয়াম। তাই কম বয়সে, চাকরি জগতে পা রাখার সঙ্গেসঙ্গেই টার্ম ইনসিওরেন্স কেনা বুদ্ধিমানের কাজ।

টার্ম ইনসিওরেন্স কেনার আরও একটি সুফলের কথা জানিয়েছেন বলবন্ত জৈন। যদি আপনি কোনও ঋণ নিয়ে থাকেন তবে আপনার অকস্মিক মৃত্যুর পরে বাকি টাকা আর আপনার পরিবারের সদস্যদের মেটাতে হবে না। টার্ম ইনসিওরেন্সের টাকা থেকেই তিনি তা মিটিয়ে দিতে পারবেন।

বিমা কেবল খরচ নয়। বরং একটিকে সুরক্ষা কবচ হিসেবে দেখা প্রয়োজন। যে কোনও অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতিতে বিমা সুরক্ষা দিয়ে থাকে। তাই নিজের জন্য না হলেও অন্তত নিজের পরিবারের জন্য টার্ম ইনসিওরেন্সকে উপেক্ষা করা যায় না।

ফালতু খরচ মনে করে বহু মানুষ টার্ম ইনসিওরেন্সকে বাতিলের খাতায় ফেলে দেন। আসলে সঞ্চয় বা লগ্নি নয়, টার্ম ইনসিওরেন্স হল ভবিষ্যতের জন্য আর্থিক সুরক্ষা কবচ।

Money9-এর পরামর্শ

টার্ম ইনসিওরেন্সকে খরচ বা লগ্নির দৃষ্টিতে দেখবেন না।

এটি ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে একটি সুরক্ষা কবচ।

কম বয়সে টার্ম ইনসিওরেন্স কেনা সঠিক সিদ্ধান্ত। এতে কম প্রিমিয়াম দিতে হয়।

বিমার ক্লেম মেটানোর সময় বিমা কোম্পানিগুলি কী ধরণের টালবাহানা করে থাকে, জানুন ‘জাগতে রহো’র পরবর্তী পর্বে।

(জাগতে রহো)

ইনসিওরেন্স কোম্পানি থেকে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন রমা। টার্ম ইনসিওরেন্স কোম্পানি তাঁর প্রয়াত স্বামীর টার্ম ইনসিওরেন্স ক্লেম রিজেক্ট করে দিয়েছে। কিন্তু কেন এমন হল? টার্ম ইনসিওরেন্স কেনার সময় কী ভুল করেছিলেন রমার স্বামী?

ক্লেম বাতিলের কারণ হিসেবে ইনসিওরেন্স কোম্পানির যুক্তি ছিল, রমার স্বামীর প্রি এক্সিসটিং ডিজিজ ছিল। অর্থাৎ পলিসি কেনার আগে কোনও রোগ ছিল, কিন্তু পলিসি কেনার সময় সেটি উল্লেখ করা হয়নি।

পলিসি কেনার সময় বহু মানুষ ছোট ছোট ভুল করে ফেলেন। তাই দুর্দিনে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পারেন না। বিমা নিয়ামক সংস্থা IRDAI-এর ২০২১ সালের রিপোর্ট অনুসারে, ২০১৯-২০ সালের মধ্যে ব্যক্তিগত বিমা পলিসির ক্ষেত্রে LIC-র ক্লেম সেটলমেন্ট রেসিও ছিল ৯৬.৬৯ শতাংশ। আর বেসরকারি বিমা সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে সেই হার ৯৭.১৮ শতাংশ। অর্থাৎ ৪ শতাংশ ক্লেম কোনও না কোনও কারণে রিজেক্ট হয়ে গিয়েছে।

এখন বুঝে নেওয়া যাক ক্লেম কেন রিজেক্ট হয়ে যায়?

বিমাকারী তাঁর পুরনো রোগের কথা না জানালে।

বিমাকারী ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি হলেও সে কথা বিমা কোম্পানির থেকে গোপন করলে।

ধূমপান বা মদ্যপানের মতো অভ্যেসের কথা পলিসি করার সময় বিমা কোম্পানিকে না জানালে।

এমনকী মৃত্যুর কারণ ঘিরে কোনও সন্দেহ দেখা দিলেও বিমার ক্লেম বাতিল হতে পারে।

একাধিক পলিসি কেনাও এর একটা কারণ হতে পারে।

ইনসিওরেন্স সমাধান-এর সহ প্রতিষ্ঠাতা শৈলেশ কুমারের মতে, বিমা কোম্পানিগুলি ৩ বছরের কম পলিসিগুলিকে এক লহমায় বাতিল করে দিয়ে থাকে। বিমা আইনের ৪৫ নম্বর ধারায় বিমা কোম্পানিগুলিকে ৩ বছরের কম সময়ের ক্লেমকে নিজেদের স্তরে তদন্ত করার অধিকার দিয়েছে। এর ভিত্তিতে তারা ক্লেম খারিজ করতে পারে। যাকে রেপুডিয়েশন বলা হয়ে থাকে। কিন্তু অনেক সময় কোম্পানিগুলি যথাযথ কারণ ছাড়াই ক্লেম রেপুডিয়েট করে থাকে। আর নিজেদের কাজের স্বপক্ষে যুক্তি হিসেবে প্রি এক্সিসটিং ডিজিজের তত্ত্ব হাজির করে তারা।

তবে বিমা আইনের ৪৫ নম্বর ধারায় আরও বলা হয়েছে, কোনও কারণেই ৩ বছরের বেশি পুরনো ক্লেম বিমা কোম্পানিগুলি বাতিল করতে পারবে না। তবে ৩ বছর পূর্ণ হোক বা নয়, ক্লেম বাতিলের জন্য কোনও অজুহাত খুঁজে নেয় কোম্পানিগুলি।

Money9-এর পরামর্শ

বিমা কেনার সময় কোনও তথ্য গোপন করবেন না।

স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য জানান।

ধূমপান বা মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে তা লুকোবেন না।

কোনও ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকলে অবশ্যই জানাবেন।

ঝুঁকিপূর্ণ হবি থাকলেও তা জানাতে হবে।

যেতে যেতে Money9-এর ৯ সূত্রতে শুনে যান, পলিসি ক্লেমের সময় কোন কোন নথি জমা দিতে হয়। আর অর্থতত্ত্বে জানুন, বেশি না কম টাকার ইনসিওরেন্সের মধ্যে কোনটা ভালো। Over insured vs under insured-এর মধ্যে পার্থক্য কী? দেখতে থাকুন Money9

আরও পড়ুন : Term Insurance Benefits: ঠকছেন না তো! ১ কোটি টাকার টার্ম ইনসিওরেন্স নেওয়ার আগে এটা একবার ভেবে দেখুন