Hilsa in Ganges: গঙ্গায় ফিরল ইলিশ, দাম উঠতে পারে ৩০০০ টাকা; লাভবান হবেন বহু মানুষ
Hilsa fish in Mirzapur Ganga: গঙ্গার জলে ফিরল ইলিশ মাছ। এই মাছ এখন মির্জাপুর এলাকায় দেখা গিয়েছে। মানুষের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে প্রতি কেজি তিন হাজার টাকা দামে।
লখনউ: গঙ্গা নদীর ওপর ফরাক্কা বাঁধ তৈরির পর থেকেই ধীরে ধীরে এপাড় বাংলার মানুষের থালা থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে গিয়েছিল ইলিশ মাছ। কিন্তু খুব শিগগিরই ফের এপাড় বাংলার মানুষের পাতে ফিরতে পারে ইলিশ। অনেক মানুষের আয়ের উৎসও হয়ে উঠতে পারে রূপোলি ফসল। বাজারে কেজি প্রতি ৩০০০ টাকা পর্যন্ত দাম পাওয়া যেতে পারে। সম্প্রতি মির্জাপুর এলাকায় গঙ্গায় এই মাছ দেখা গিয়েছে। অনেকেই বলছেন, গঙ্গা যে পরিচ্ছন্ন হয়েছে, ইলিশের ফেরা সেই পরিচ্ছন্নতার লক্ষণও বটে। ইলিশ মাছ সাধারণত সমুদ্রে বাস করে, কিন্তু মিঠে জলে ডিম পাড়ে। ফরাক্কা বাঁধ নির্মাণের আগে ইলিশ মাছ সহজেই গঙ্গা বেয়ে এলাহাবাদ এলাকা পর্যন্ত চলে যেত। কিছুকাল আগে ফরাক্কা বাঁধের নীচ থেকে প্রায় ৩০,০০০ ইলিশ মাছ উজানের দিকে ছাড়া হয়েছিল। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরে সেই মাছগুলির দেখা পাওয়া গিয়েছে।
কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গার উপদেষ্টা ড. সন্দীপ বেহেরার মতে মির্জাপুরে ইলিশ মাছ দেখা যাওয়া গঙ্গা পরিষ্কার হওয়ার লক্ষণ। তিনি বলেন, “ইলিশের সংখ্যা এখন ঊর্ধ্বমুখী। এটি ধীরে ধীরে গঙ্গা পরিষ্কার হওয়ার লক্ষণ। এর থেকে বোঝা যাচ্ছে, গঙ্গার জলে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ছে। কারণ ইলিশ মাছ খুব দ্রুত চলাচল করে এবং তার জন্য প্রচুর অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। আগে ফরাক্কা বাঁধে ফিশ ল্যাডার (মাছ চলাচলের পথ) ছিল। তার মাধ্যমে ইলিশ মাছ উপরে উঠে আসত। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে এর গেট খারাপ হয়ে পড়ে ছিল। যে কারণে মাছগুলি উঠতে পারত না।”
নেহেরু গ্রাম ভারতী এবং ব্যারাকপুরের ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ -সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউট আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ড. সন্দীপ বেহেরা আরও জানিয়েছেন, যাতে সহজেই মাছগুলি উপরে উঠে আসতে পারে, এখন তার জন্য এই গেট মেরামত করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে জলপথে নতুন করে ফিশ ল্যাডার সাজানো হচ্ছে। এর ফলে হুগলি নদী থেকে যে সমস্ত মাছ উঠে আসতে পারে না, সেগুলিও উপরে উঠে আসতে পারবে। ১৯৭১-৭২ সালে বাঁধ নির্মাণের কারণে ইলিশ মাছ ডিম পাড়ার জন্য উজান বেয়ে আসতে পারছিল না। সন্দীপ বেহেরা জানিয়েছেন ফিশ ল্যাডার তৈরির জন্য ইতিমধ্যেই টেন্ডার জারি করা হয়েছে। ছয়-সাত মাসের মধ্যেই তা চূড়ান্ত হয়ে যাবে। চলতি বছরের শেষেই ফিশ ল্যাডার প্রতিস্থাপনের কাজ শেষ হতে পারে।
পশ্চিমবঙ্গ, অসম, ত্রিপুরা, ওড়িশার মতো পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে ইলিশ মাছ অত্যন্ত জনপ্রিয়। বাজারে দাম পাওয়া যায় প্রতি কেজি ১২০০ টাকা থেকে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত। কাজেই গঙ্গায় ইলিশ ফিরলে মৎসচাষীদের আরও ভাল রোজগারের নতুন পথ খুলে যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।