Overseas Education: ছেলে-মেয়েকে বিদেশে পড়াতে চান? এইভাবে টাকা জমালে সহজেই হবে স্বপ্ন পূরণ, জেনে নিন বিস্তারিত
Investments for Overseas Education: ছেলে-মেয়েকে বিদেশে পড়াতে চান? সঠিকভাবে বিনিয়োগ করলে, এই স্বপ্ন পূরণ আপনার হাতের মুঠোয়। জেনে নিন কীভাবে।
কলকাতা: অনেকেরই স্বপ্ন থাকে ছেলে-মেয়েকে বিদেশে পড়ানোর। আর আজকের সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে কোন বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন পাঠ্যক্রম পড়ানো হয়, সেখানে ভর্তি হতে গেলে শিক্ষাগত যোগ্যতা কী লাগে সবই আগে থেকে জেনে নেওয়া যায়। বিজ্ঞাপনে দেখে অনলাইনে আবেদন করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিও হওয়া যায়। তবে, অনেকের ক্ষেত্রেই বাধ সাধে খরচ। টিউশনের মূল্য, হোস্টেলে থাকার মূল্য, স্টুডেন্ট ভিসা এবং যাতায়াতের খরচ – সব মিলিয়ে বিদেশে পড়াশোনা করা কিন্তু বেশ ব্যয়বহুল। তবে এর জন্য স্টুডেন্ট লোন এবং স্কলারশিপের আবেদন করা যায়। তবে তার জন্যও অনেক আনুষ্ঠানিকতা রয়েছে। শিক্ষা পর্ব শেষ হওয়ার পরও দীর্ঘদিন পর্যন্ত ঋণ শোধ করার চাপ থাকে। তবে, বাবা-মা যদি তাঁদের সন্তান ছোট থাকাকালীনই গ্লোবাল ইনভেস্টমেন্টের পরিকল্পনা করেন, তাহলে সন্তানকে বিদেশে পড়ানোটা খুবই সহজ হয়ে ওঠে। এর জন্য কয়েকটি নির্দিষ্ট ধাপে পরিকল্পনা করা উচিত।
সঠিক দেশ:
পড়াশোনার জন্য ঋণ মঞ্জুর করার আগে প্রতিটি ব্যাঙ্কই সম্ভাব্য প্লেসমেন্ট এবং বেতন বিবেচনা করে। তাই, আবেদন করার জন্য সঠিক দেশ নির্বাচন করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে, এমন একটি দেশ নির্বাচন করতে হবে, যা আপনার বাজেটের মধ্যে আপনার সন্তানকে সেরা শিক্ষা দিতে পারে। অর্থাৎ, দেখতে হবে আপনার বিনিয়োগের সেরা রিটার্ন পাওয়া যাবে কোন দেশ থেকে।
তহবিল সংগ্রহ:
বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়েই স্নাতক কোর্সের জন্য ৮০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা লাগে। এর জন্য প্রতি মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বিনিয়োগ করা উচিত। এর বাইরে যে টাকাটা লাগবে, তা শিক্ষা ঋণের মাধ্যমে মেটানো যেতে পারে। এর ফলে, আপনাকে সুদও কম দিতে হবে। আপনার সন্তান যখন কাজ করা শুরু করবে, তখন তার উপর বোঝাও কম থাকবে। এর পাশাপাশি কোনও কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তির জন্যও আবেদন করা যেতে পারে। এতে, শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে তুলনামূলকভাবে কম পড়াশোনার মূল্যে কোনও পাঠ্যক্রমে ভর্তি হওয়া যায়।
সঠিক বিনিয়োগের বিকল্প:
মাসে মাসে কত টাকা বিনিয়োগ করবেন, তা ঠিক করে ফেলার পর এবার সঠিক বিনিয়োগ পরিকল্পনা বেছে নেওয়ার পালা। এই ক্ষেত্রে এমন সংস্থাগুলি খুঁজে বের করতে হবে, যা আপনাকে স্থিতিশীল রিটার্ন দিতে পারে। আপনি নির্দিষ্ট আয়ের পণ্য, কম ফলনশীল তহবিল এবং এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ড বা ইটিএফ-এর মতো বৈচিত্র্যময় রিটার্ন এবং কম-ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগের মিশ্রণ বাছাই করা যেতে পারে। বিনিয়োগ উপদেষ্টাদের মতে, এই ক্ষেত্রে বিনিয়োগের অনুপাত হওয়া উচিত ৭৫:২০:৫। অর্থাৎ, নির্দিষ্ট আয়ের পণ্যে ৭৫ শতাংশ, কম ফলনশীল তববিলে ২০ শতাংশ এবং ইটিএফ-এ ৫ শতাংশ বিনিয়োগ করা উচিত। এতে, পর্যাপ্ত স্থিতিশীলতার পাশাপাশি আপনার সঞ্চয়ও সর্বাধিক হবে।
সঠিক ঋণদাতা:
ভারতে, বিভিন্ন ব্যাঙ্কিং প্রতিষ্ঠান এবং নন-ব্যাঙ্কিং আর্থিক সংস্থা, বছরে ১২ থেকে ১৪ শতাংশ সুদের হারে ২০ লক্ষ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয়।সংশ্লিষ্ট দেশে যদি কেউ ঋণের গ্যারান্টার হয়, সেই ক্ষেত্রে সুদের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যেতে পারে। আপনাকে এমন ব্যাঙ্ক খুঁজতে হবে, যারা একইসঙ্গে ন্যূনতম সুদের হারে ছাত্রদের ব্যাঙ্ক ঋণ দেয় এবং বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগ প্ল্যাটফর্মগুলির সঙ্গে অংশীদারিত্বে রয়েছে।
মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব:
ভবিষ্যতের খরচের জন্য সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের সময়, যে বষয়টি বিবেচনা করা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ, তা হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি এবং ভারতীয় মুদ্রার দাম পড়ে যাওয়া কিন্তু আপনার সন্তানের বিদেশে পড়ার তহবিল তৈরিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। ধরা যাক আপনি যদি ৫০ লক্ষ টাকা খরচ করার পরিকল্পনা করেছেন। সাত বছর পর এই খরচ বেড়ে ৬০ লক্ষ টাকা হল। তাহলে বিনিয়োগের মুহূর্তে অতিরিক্ত ১০ লক্ষ টাকার জন্য আপনাকে প্রস্তুতি নিতে হবে।
শুরু করুন তাড়াতাড়ি:
স্নাতক স্তরের পড়াশোনা বিদেশে করতে চাইলে, ভর্তির বছরের কমপক্ষে ৬ থেকে ৭ বছর আগে তহবিল সংগ্রহ শুরু করা উচিত। স্নাতক স্তরের পড়াশোনার খরচ যদি ৮০ লক্ষ টাকা হয়, তাহলে বার্ষিক ১৫ শতাংশ হারে সুদের হারে আগামী ৭ বছরের জন্য প্রতি মাসে ৫৫,০০০ টাকা করে বিনিয়োগ করতে হবে। আরও আগে থেকে বিনিয়োগ শুরু করলে, মাসে মাসে বিনিয়োগ করতে হবে আরও কম অর্থ।