How to Earn from Buy Back Policy: শেয়ার বাজারের মারপ্যাঁচে বিভ্রান্ত? সুরক্ষিত লগ্নি করে ঘরে লক্ষ্মী আনবেন কীভাবে, জেনে নিন

Buy Back Policy: ফর্মুলা গুরুর মতে, কোম্পানি প্রত্যেক লগ্নিকারীর থেকে গড়ে ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ শেয়ার ফের কিনে নিলে তা লগ্নিকারীদের জন্য লাভজনক হয়।

How to Earn from Buy Back Policy: শেয়ার বাজারের মারপ্যাঁচে বিভ্রান্ত? সুরক্ষিত লগ্নি করে ঘরে লক্ষ্মী আনবেন কীভাবে, জেনে নিন
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 18, 2021 | 2:43 PM

নয়া দিল্লি: সল্টলেকের সন্তোষের মতো ভাগ্য সবার সঙ্গ দেয় না। গত অক্টোবর-নভেম্বর মাসে একের পর এক সংস্থার IPO দালাল স্ট্রিটে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিল। এই বছরে IPO-র মাধ্যমে বাজার থেকে প্রায় ১ লক্ষ ১২ হাজার কোটি টাকা ঘরে তুলেছে ৫৩টি কোম্পানি। স্টার্ট আপ সংস্থার IPO আর লটারি রাতারাতি যেন সমার্থক হয়ে ওঠে। এমনই ছিল চাহিদা। জোম্যাটো, নাইকা এবং সিগাচির শেয়ার কেনার জন্য আবেদন করেছিলেন সন্তোষ। ভাগ্যক্রমে এই তিন কোম্পানিরই শেয়ার বরাদ্দ হয় তাঁর জন্য। এক সপ্তাহের মধ্যে বিনিয়োগ বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়।

এর উল্টো ছবিও ছিল। কিছু লোক IPO-র জন্য হাপিত্যেশ করে বসে ছিলেন। কিন্তু ভাগ্য দেবতা সুপ্রসন্ন হননি। ফলে শেষ পর্যন্ত শেয়ার হাতে পাননি তাঁরা। আবার IPO-তে লগ্নি করে শেয়ার পেয়েও শেষ পর্যন্ত কিছু লগ্নিকারীর অনুশোচনা করা ছাড়া উপায় ছিল না। কারণ তাঁরা লগ্নি করেছিলেন PAYTM বা ফিনো পেমেন্টস্ ব্যাঙ্কের মতো কোম্পানিতে। ভাগ্যে শেয়ার জুটলেও প্রথম সপ্তাহেই লগ্নির বড় অংশ জলে চলে গেল।

শেয়ার বাজার এমন এক পথ যেখানে যে কোনও মুহূর্তে পিছলে পড়ার আশঙ্কা থাকে। PAYTM বা ফিনো পেমেন্টস্ ব্যাঙ্কের মতো ঘটনায় যদি আপনি ঘাবড়ে গিয়ে থাকেন, তবে একেবারে আশাহত হওয়ার কিছু নেই। এমন এক পথ আছে যার মাধ্যমে কিছুটা সুরক্ষিত ভাবে আপনি আপনার লগ্নির টাকা ঘরে তুলে নিতে পারেন। আসুন জানা যাক কোম্পানির বাই ব্যাক সম্পর্কে।

বিনিয়োগের মূল মন্ত্র হল, সস্তায় শেয়ার কিনে পরে তা চড়া দামে বিক্রি করা। যার পোশাকি নাম আরবিট্রাজ। এমন একটা শব্দ শুনে ঘাবড়ে যাবেন না। শুনতে একটু খটোমটো লাগলেও আসলে ব্যাপারটা মোটেই জটিল নয়। এখন থাক সে কথা।

এখন আসা যাক BUY BACK প্রসঙ্গে। IPO-র ঠিক উল্টো হল BUY BACK. IPO-র মাধ্যমে কোম্পানিগুলো তাদের শেয়ার বাজারে ছাড়ে। আর BUY BACK-এর মাধ্যমে বাজার থেকে নিজেদের শেয়ার নিজেরাই কিনে নেয় তারা। গত কয়েক বছরে বেশ কিছু কোম্পানি ভালো মুনাফা করেছিল। তারা শেয়ার গ্রাহকদের লাভ্যাংশ দেওয়ার বদলে নিজেরেই নিজেদের শেয়ার কিনে নিয়েছিল। আর এর মাধ্যমে অসংখ্য লগ্নিকারী বিপুল লাভ করেছিলেন।

এখন প্রশ্ন হল কোম্পানিগুলি BUY BACK-এর মাধ্যমে বাজার থেকে নিজেদের শেয়ার নিজেরাই কেন কিনে নেয়? বাইব্যাকের মাধ্যমে বাজারে কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা কমে যায়। এর ফলে প্রতি শেয়ার থেকে আয় বেড়ে যায়। যাকে EPS বা আর্নিং পার শেয়ার বলা হয়। EPS সম্পর্কে বিশদে জানুন আমাদের ‘অর্থতত্ত্ব’ অনুষ্ঠানে।

আপাতত BUY BACK বিষয়ের উপরেই আলোচনা সীমাবদ্ধ থাক। কোম্পানিগুলি দু-ভাবে BUY BACK করে থাকে। প্রথম পদ্ধতি হল টেন্ডার অফার। এর মাধ্যমে পূর্ব নির্ধারিত দামে কোম্পানি শেয়ার হোল্ডারদের থেকে BUY BACK করে থাকে। এক্ষেত্রে যে সমস্ত শেয়ার হোল্ডার নিজেদের অংশিদারিত্ব কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দিতে আগ্রহী তাঁদের একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাতে হয়। যাকে বলা হয় রেকর্ড ডেট।

BUY BACK-এর দ্বিতীয় পদ্ধতি হল ওপেন অফার। এই পদ্ধতিতে কোম্পানি স্টক এক্সচেঞ্জ বা বুক বিল্ডিংয়ের মাধ্যমে নিজেদের শেয়ার কিনে থাকে। এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে প্রোমোটার অংশ নিতে পারে না। তবে বাকি সমস্ত শেয়ারহোল্ডার অর্ডার ট্রেডিং পদ্ধতিতে কোম্পানিকে শেয়ার বিক্রি করতে পারে। আর বুক বিল্ডিংয়ে মার্চেন্ট ব্যাঙ্কার এবং ইলেকট্রনিক বিডিংয়ের মাধ্যমে শেয়ারের দাম নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।

কীভাবে মুনাফা হয়?

ম্যাঙ্গানিজ খননকারী রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি MOIL গত বছর ৬৯৩.৭৭ কোটি টাকার শেয়ার BUY BACK করেছিল। এখানে টেন্ডার অফার পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছিল। ১৮ নভেম্বর শেয়ারের যে দর ছিল কোম্পানি তার উপরে ১৯ শতাংশ প্রিমিয়াম যুক্ত করে প্রতিটি শেয়ার ২০৫ টাকা দরে BUY BACK করেছিল। সে সময় যাঁরা কোম্পানিকে শেয়ার বিক্রি করেছিলেন তাঁরা প্রতি শেয়ারে ৩২ টাকা ৬৫ পয়সা মুনাফা করেছিলেন।

Money9-এর পরামর্শ:

IPO-র থেকে BUY BACK কম ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এতে কোম্পানির কাজকর্ম সম্পর্কে সবাই জানতে পারে। এবং বাজারও শেয়ারের সঠিক দর নির্ধারণ করে থাকে।

যদি আপনি BUY BACK-এর সুবিধা নিতে চান, নজর রাখুন শেয়ারের উপরে। বাজারে শেয়ারের দর এবং BUY BACK দরের মধ্যে ফারাক দেখে সুযোগের ফায়দা তুলুন। যেতে যেতে জেনে নিন, IPO-র মতো BUY BACK-ও কম আকর্ষণীয় নয়। ২০২০ সাল এবং ২০২১ সালে বহু কোম্পানি BUY BACK করেছিল। আর বুদ্ধিমান লগ্নিকারীদের একাংশ বিপুল মুনাফা ঘরে তুলেছিলেন।

তবে আপনার হাতে যত শেয়ার আছে তার সমস্তটাই কি BUY BACK-এর মাধ্যমে কোম্পানি পুনরায় কিনে নেবে? এখানে একটা মারপ্যাঁচ আছে। এই বিষয়ে জানুন ফর্মুলা গুরু-র থেকে। সঙ্গে থাকুন Money9-এর।

বাই ব্যাকে মুনাফার ফর্মুলা:

বাই ব্যাকে মুনাফা নির্ভর করছে কোম্পানি কতগুলি শেয়ার সাধারণ লগ্নিকারীদের থেকে কিনতে চাইছে। আর এই প্রসঙ্গে চলে আসে অ্যাকসেপটেন্স রেসিওর বিষয়টি ।

বাইব্যাকে খুচরো লগ্নিকারীদের জন্য ১৫ শতাংশ কোটা স্থির করে দিয়েছে বাজার নিয়ামক সংস্থা সেবি। যে সমস্ত লগ্নিকারীর শেয়ারের মোট মূল্য ২ লক্ষ টাকার কম তাঁরা খুচরো লগ্নিকারীর কোটায় বাই ব্যাকে অংশ নিতে পারেন। অর্থাৎ কোম্পানি যদি ১ লক্ষ শেয়ার বাই ব্যাকের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে, তার মধ্যে ১৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৫ হাজার শেয়ার ফেরৎ নেওয়া হবে খুচরো লগ্নিকারীদের থেকে।

ফর্মুলা গুরুর মতে, কোম্পানি প্রত্যেক লগ্নিকারীর থেকে গড়ে ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ শেয়ার ফের কিনে নিলে তা লগ্নিকারীদের জন্য লাভজনক হয়। কখনও কখনও কোম্পানি পুরো কোটা কিনে নিয়ে থাকে। ২০১৭ সালে TCS-এর BUY BACK-এ এমন ঘটনা ঘটেছিল। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, অ্যাকসেপটেন্স হার যত কম হবে, ততই কমবে মুনাফার পরিমাণ। বুক বিল্ডিং কী? জানুন অর্থতত্ত্বে।

Moneygyan (অর্থতত্ত্ব):

IPO হোক বা BUY BACK, বুক বিল্ডিং খুবই জরুরি একটি অংশ। কিন্তু এটি আসলে কী? বুক বিল্ডিং এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে শেয়ার বিক্রি বা কেনার সময় শেয়ারের সঠিক মূল্য নির্ধারন করা হয়।

সেবির নিয়ম অনুসারে, প্রতিটি কোম্পানিকে IPO ছাড়া বা BUY BACK-এর সময় বাধ্যতামূলকভাবে এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। বুক বিল্ডিংয়ে কোম্পানি বা তার মার্চেন্ট ব্যাঙ্ক একটি ন্যূনতম দাম ফ্লোর প্রাইজ নির্ধারণ করে।

IPO খোলা থাকা পর্যন্ত এই দরের উপরে শেয়ার প্রত্যাশীরা তাঁদের দর দিতে থাকেন। ইস্যু বন্ধ হওয়ার সময় সর্বোচ্চ যে দর ওঠে তাকে কাট অফ প্রাইজ বলা হয়। যে কারণে IPO-তে সর্বোচ্চ দরের কাছাকাছি দর দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে Money9। এর ফলে ভাগ্যে শেয়ার জোটার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

আরও পড়ুন: WFH Rules & Impact on Salary: আজীবন বাড়িতে বসেই কাজ করতে চান? সংস্থা কাঁচি চালাতে পারে আপনার বেতনে, জানুন বিস্তারিত